সংক্ষিপ্ত
বার বার নির্দিষ্ট একটি হাসপাতালেই কেন? পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবীকে প্রশ্ন হাইকোর্টের বিচারপতির। ইডির আইনজীবী আদালতকে জানিয়েছেন, অফিসারদের সামনে মন্ত্রী ‘নাটক’ করছেন।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁকে গ্রেফতারির পর ২ দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ আদালতের। স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে ১৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার পার্থ। শুক্রবার রাত ১.৫৫-এ বর্তমান শিল্পমন্ত্রীকে গ্রেফতার করে ইডি।
স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতিতে হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশেই চলছে ইডির তদন্ত। ২ দিন আগে ২১ কোটিরও বেশি টাকা এবং ২০টি মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়েছে। নিম্ন আদালতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন বাতিল হয়েছে। সোমবার ফের আদালতে তোলা হবে এই মামলা।
এই নির্দেশের পর এসএসকেএম হাসপাতালে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের চিকিৎসার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই সময়ে ইডির কথা শোনাই হয়নি। অথচ, নিম্ন আদালতে তাঁকে তোলার আগে অন্য হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাঁকে ফিট সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছিল। বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘কিন্তু বার বার নির্দিষ্ট একটি হাসপাতালেই কেন? এই হাসপাতালে চিকিৎসার নামে দুর্নীতি ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টা হতে পারে।’’ প্রতিটি প্রভাবশালীর নিরাপদ জায়গা এসএসকেএম। মন্ত্রী পার্থের আইনজীবীকে এমনই বললেন বিচারপতি বিবেক চৌধুরী।
ইডি আধিকারিকদের অভিযোগ, ওই হাসপাতালে গেলে ইডি অফিসারদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতাল সহযোগিতা করছে না অফিসারদের সঙ্গে। ইডি জানিয়েছে পার্থকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করার যে নির্দেশ দিয়েছে নিম্ন আদালত, তাতে তারা ‘অসন্তুষ্ট’। নিয়ম মেনে শুনানি হয়নি বলে তাদের অভিযোগ। তাই নিম্ন আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ওই দিন রাতেই প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের কাছে ইডির তরফ থেকে দ্রুত শুনানির আর্জি জানানো হয়।
ইডি দাবি করেছে, মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সুস্থ বলে জানিয়েছে আদালত। তা ছাড়া, নিজের পছন্দ অনুযায়ী যে কোনও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার অধিকার এই মুহূর্তে তাঁর নেই। ইডির আইনজীবী আদালতে যে অভিযোগ জানিয়েছেন তা আরও ভয়ানক। তিনি জানান, ‘‘ইডি আধিকারিকদের হুমকি দিয়েছেন পার্থ। ডনের মতো ব্যবহার করেছেন তিনি।’’
ইডির আইনজীবী কলকাতা হাইকোর্টে এও জানিয়েছেন যে, পার্থ চট্টোপাধ্যায় অফিসারদের সামনে ‘নাটক’ করছেন। এমস কল্যাণীতে পার্থকে ভর্তি করানো নিয়ে হাইকোর্টের মধ্যেই তীব্র বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়লেন পার্থ এবং ইডি, দু’পক্ষের দুই আইনজীবী। বিভিন্ন গুরুতর অভিযোগ ও কথা কাটাকাটির মধ্যে দিয়েই হাই কোর্টে শেষ হল পার্থ-মামলার শুনানি।