সংক্ষিপ্ত
ধর্মতলায় গান্ধী মূর্তির (Gandhi statue in Dharmatala) পাদদেশে 'প্রতীকি লাশ' এর মাধ্যমে আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে গেল যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চ। মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্তরের মেধাতালিকাভুক্ত হয়েও চাকরি না পাওয়া শিক্ষক পদপ্রার্থীদের এই মঞ্চ চাইছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) হস্তক্ষেপ।
রবিবার, ধর্মতলায় গান্ধী মূর্তির (Gandhi statue in Dharmatala) পাদদেশে দেখা গেল এক অদ্ভূত দৃশ্য - পড়ে আছে সারি সারি লাশ! আপাদমস্তক সাদা কাপড়ে মোড়া। না, এগুলি সত্যিকারের মৃতদেহ ছিল না, প্রতীকি দেহ। তবে, ন্যায্য চাকরি না পেলে এই প্রতীকি লাশগুলি সত্যিকারের মৃতদেহে পরিণত হবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত নবম- দশম এবং একাদশ- দ্বাদশ স্তরের মেধাতালিকাভুক্ত হয়েও চাকরি না পাওয়া শিক্ষক পদপ্রার্থীরা। গত ৮ অক্টোবর থেকে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধরণায় বসেছেন তাঁরা। ১০৫ দিন পেরিয়ে গেল, তাও সরকারের দিক থেকে কোনও জবাব নেই। এবার আন্দোলন কঠোর করার কথা ভাবছেন বঞ্চিত শিক্ষক পদপ্রার্থীরা।
আন্দোলনকারীদের মূল অভিযোগ, তাঁরা প্রত্যেকেই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক মেধাতালিকা-ভুক্ত এবং তালিকায় তাঁদের ক্রমও উপরের দিকেই রয়েছে। কিন্তু, এখনও তাঁরা কেউ চাকরির নিয়োগপত্র হাতে পাননি। অথচ, তাঁদের অনেক পিছনের ক্রমে থাকা বহু প্রার্থীকে ইতিমধ্যেই চাকরিতে নিয়োগ করা হয়েছে। এমনকী, মেধাতালিকায় নাম না থাকা বহু অকৃতকার্য হওয়া প্রার্থীও চাকরি পেয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ধরণা মঞ্চের শিক্ষক পদপ্রার্থীরা। এই অবস্থায় ধরনারত শিক্ষক পদপ্রার্থীদের দাবি, মেধাতালিকাভুক্ত সকল চাকরি প্রার্থীদের অতি দ্রুত চাকরিতে নিয়োগ করতে হবে।
আরও পড়ুন - Movement in Kalighat: মমতার বাড়ির সামনেই চলল অবরোধ, কালীঘাটে গ্রেফতার ১৫ চাকরি প্রার্থী
আরও পড়ুন - ৩ মাসের বেশি অন্তঃসত্ত্বাকে চাকরিতে না, 'চাপের মুখে' নিয়ম প্রত্যাহার SBI-এর
আরও পড়ুন - টেট উত্তীর্ণদের নিয়োগের দাবিতে মিছিল, পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, ধুন্ধমার ধর্মতলা
তাঁরা আরও জানিয়েছেন, ২০১৯ সালে কলকাতা প্রেসক্লাবের (Kolkata Press Club) সামনে যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের (Youth Student Rights Forum) ব্যানারে তাঁরা ২৯ দিন ধরে অনশন করেছিলেন। সেই সময় ওই মঞ্চে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Chief Minister Mamata Banerjee)। তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন, মেধাতালিকা ভুক্ত কোন চাকরি প্রার্থীকেই বঞ্চিত করা হবে না। প্রয়োজনে আইনের কিছু পরিবর্তন করে, মেধাতালিকাভুক্ত অথচ বঞ্চিত শিক্ষক পদপ্রার্থীদের চাকরিতে নিয়োগের সুব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু, তারপর ২০২০, ২০২১ পার করে ২০২২ এসে গিয়েছে। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রীর সেই আশ্বাস কার্যকর হয়নি। বঞ্চিত শিক্ষক পদপ্রার্থীদের কেউ নিয়োগপত্র পাননি।
আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে ধরণা মঞ্চের নেতা সুদীপ মন্ডল (Sudip Mandal), এই বিষয়ে রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে কাতর আবেদন করেছেন। তিনি বলেছেন, তাঁদের এই সমস্যা সমাধানে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো জনদরদী নেত্রী বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করলেই, সমস্যার দ্রুত সমাধান হতে পারে। নইলে গান্ধীমূর্তির পাদদেশের প্রতীকী লাশগুলি আর প্রতীকী থাকবে না, বাস্তব হয়ে যাবে।