সংক্ষিপ্ত

দেরিতে লাইসেন্স মেলায়, অথবা, লাইসেন্স নিয়ে সংশয় থাকায় প্রভূত ক্ষতির সম্ভাবনা টের পেয়ে দোকানে মাল তোলার দিকে যেতেই চাইছেন না অধিকাংশ বিক্রেতারা। 

এক সপ্তাহের মধ্যেই রয়েছে কালীপুজো, তবু বাজি ব্যবসায়ীদের কাছে দমকলের ছাড়পত্র দেওয়া তো দূর অস্ত, এখনও পর্যন্ত শুরুই হয়নি ছাড়পত্র নবীকরণের প্রক্রিয়া। ফলে, এবছর কালীপুজোয় বাজি বাজার বসার ভবিষ্যৎ কী, তা নিয়ে রয়েছে ব্যাপক জটিলতা ও সংশয়।  শহরের তিন জায়গায় বাজি বাজার শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা শুরু হল না আজ থেকে। প্রথমে ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ দিয়ে বাজি বাজার বসার অনুমতি দেওয়া হলেও, সেই বাজারের বাইরের ব্যবসায়ীদের দমকলের ছাড়পত্র মিলবে কবে, বা আদৌ অনুমতি দেওয়া হবে কি না, তা রয়ে গেল ধোঁয়াশার মধ্যেই। 

২০২২-এ অন্যান্য বছরগুলির মতো কলকাতার শহিদ মিনার ও বিজয়গড়ে বাজির বাজার বসবে না। তার বদলে কলকাতা পুলিশের তত্ত্বাবধানে টালা, বেহালা এবং কালিকাপুরে বসতে চলেছে বাজি বাজার। বাজির বিষয়ে কলকাতা হাই কোর্ট আসন্ন কালীপুজোয় সন্ধ্যা ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত শুধুমাত্র সবুজ বাজি ফাটানোর ছাড়পত্র দিয়েছে। এর পরেই কলকাতা পুলিশ বাজির ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমন্বয় বৈঠকে শুধুমাত্র সবুজ বাজি বিক্রির ছাড়পত্র দিয়ে বাজার শুরুর অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু, তার পরেও ‘ফায়ার লাইসেন্স’ নিয়ে জটিলতা মিটছে না কিছুতেই।

সূত্রের খবর, গত তিন-চার বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গে দমকল বিভাগের তরফে কোনও বাজি ব্যবসায়ীর লাইসেন্স নবীকরণ করা হয়নি। দমকল বিভাগ এতদিন যুক্তি দেখিয়েছে যে, সব রকমের বাজি বিক্রি এবং ফাটানো নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল আদালত। তাই লাইসেন্স নবীকরণের প্রশ্ন ওঠেনি। কিন্তু, চলতি বছরে হাই কোর্ট অন্য রকম রায় দেওয়ায় প্রশ্ন ওঠে। বাজি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দমকল বিভাগের কর্তাদের বেশ কয়েক দফার বৈঠক হয়। এর পরই টালা বাজি বাজার পরিদর্শনে যান কলকাতা পুলিশের কর্তারা। উপস্থিত ছিলেন দমকল এবং পুরসভার আধিকারিকেরাও। সেখানে ফায়ার টেন্ডার রেখে দমকলের তরফে ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ দিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। একই ভাবে এই সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে কালিকাপুর এবং বেহালার বাজি বাজারের উদ্যোক্তাদেরও। কিন্তু এই বাজারগুলির কোনওটিতেই স্টল দেওয়া বাজি ব্যবসায়ীদের আলাদা করে দমকলের লাইসেন্স দেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।


দেরিতে লাইসেন্স মেলায়, অথবা, লাইসেন্স নিয়ে সংশয় থাকায় প্রভূত ক্ষতির সম্ভাবনা টের পেয়ে দোকানে মাল তোলার দিকে যেতেই চাইছেন না অধিকাংশ বাজি বিক্রেতারা। দমকল বিভাগের কোনও কর্তাই অবশ্য এবিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি। একজন অফিসার জানিয়েছেন, সব দিক খতিয়ে দেখতে ‘ধীরে চলো’ নীতি নেওয়া হয়েছে। জেলাশাসকের মাধ্যমে ফায়ার লাইসেন্স দেওয়া যায় কি না, সেই ভাবনাচিন্তা চলছে। ‘পশ্চিমবঙ্গ বাজি শিল্প উন্নয়ন সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক শুভঙ্কর মান্না বললেন, ‘‘বাজারের ফায়ার লাইসেন্সের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের নিজস্ব লাইসেন্সের কোনও যোগ নেই। তবে সবুজ বাজি তৈরির ছাড়পত্র পেয়ে যাওয়া কোনও ব্যবসায়ীরই এই ভাবে লাইসেন্স নবীকরণ আটকানো যায় না। আমরা প্রয়োজন হলে আদালতের দ্বারস্থ হব।’’

আরও পড়ুন-
ঘুরে গেল অভিযোগের তীর, এবার চাকরিপ্রার্থীদের ধর্নার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে হাইকোর্টে গেল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ
পশ্চিমবঙ্গে বাজল ভোটের দামামা, আগামি বছরের শুরুতেই হতে পারে পঞ্চায়েত নির্বাচন
ভারতের সীমানায় ‘বিচিত্র’ পরিস্থিতি, মোকাবিলা করতেই ‘অগ্নিপথ’ স্কিম চালু করেছে কেন্দ্রের মোদী সরকার?