সংক্ষিপ্ত

আজ হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে মামলার শুনানির সময় ৫৪২ জনের নিয়োগে অনিয়ম সংক্রান্ত নথি তুলে দেওয়া হয় কমিশনের হাতে। এই ৫৪২ জনের নিয়োগ সঠিকভাবে হয়েছিল কিনা তা খতিয়ে দেখার পরই পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে কমিশনকে।

গ্রুপ ডি-র নিয়োগে (Group D recruitment) অনিয়ম নিয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের (School Service Commission) উপর চাপ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। ভুয়ো নিয়োগের জেরে জন্য এর আগে ২৫ জনের বেতন বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের তরফে। আর এবার এই মামলায় আরও ৫৪২ জনের বেতন বন্ধের (Salary) নির্দেশ দিল আদালত। এই সব নিয়োগের ক্ষেত্রেই অভিযোগ উঠেছে। ওই ৫৪২ জন প্রার্থীর নিয়োগ ২০১৯ সালের পর হয়েছে কিনা, তাঁরা এখনও পর্যন্ত চাকরি করছেন কিনা তা খতিয়ে দেখে স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে সেই নির্দেশ কার্যকর করতে বলেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। 

আজ হাইকোর্টের (Kolkata High Court) সিঙ্গল বেঞ্চে (Single Bench) মামলার শুনানির সময় ৫৪২ জনের নিয়োগে (recruitment) অনিয়ম সংক্রান্ত নথি তুলে দেওয়া হয় কমিশনের (School Service Commission) হাতে। এই ৫৪২ জনের নিয়োগ সঠিকভাবে হয়েছিল কিনা তা খতিয়ে দেখার পরই পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে কমিশনকে। তদন্তে যদি ভুয়ো নিয়োগের সপক্ষে প্রমাণ মেলে তবেই সংশ্লিষ্ট ডিআইদের বেতন বন্ধ করতে নির্দেশ দেবে এসএসসি।

আরও পড়ুন- গ্রুপ ডি মামলায় CBI অনুসন্ধানের নির্দেশে স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের

সোমবার গ্রুপ ডি নিয়োগ মামলায় প্রাথমিকভাবে সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, পর্ষদ এবং কমিশনের হলফনামা থেকেই স্পষ্ট যে নিয়োগ প্রক্রিয়ার অস্বচ্ছতা আছে। যেহেতু দুটিই সংস্থা রাজ্যের, তাই প্রাথমিকভাবে অনুসন্ধান করবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বা সিবিআই। ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে ওই কেন্দ্রীয় সংস্থাকে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে হাইকোর্ট। যদিও সিবিআই অনুসন্ধানের বিরোধিতা করেছিল রাজ্য সরকার। এরপর সিঙ্গল বেঞ্চের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে যায় তারা।  

আরও পড়ুন- হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আজ গ্রুপ ডি মামলা, রায়ের দিকে তাকিয়ে CBI

এরপর বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ তিন সপ্তাহের জন্য সিবিআই অনুসন্ধানের উপর স্থগিতাদেশ দেয়। তবে তথ্যপ্রমাণ যাতে কোনওভাবেই লোপাট না হতে পারে তার জন্য স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এর মধ্যেই আবার আজ সিঙ্গল বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। তখন ৫৪২ জনের বেতন বন্ধের নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। 

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে রাজ্যে গ্রুপ ডি নিয়োগের (Group D Post) বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। তখন ১৩ হাজার নিয়োগ হয়। এরপর ২০১৯ সালের মে মাসে গ্রুপ ডি প্যানেলের (Group D Panel) মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। কিন্তু, তারপরও একাধিক নিয়োগ হয়েছে বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করে। তার মধ্যে অনেকজনকেই নিয়োগ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু, প্যানেলের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরও কীভাবে নিয়োগ হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে জানানো হয়, প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর আর কোনও সুপারিশ পত্র পাঠানো হয়নি। এমনকী, এ নিয়ে তারা একটি হলফনামাও জমা দেয়। ফলে প্রশ্ন ওঠে, এসএসসি যদি সুপারিশ না করে, তবে ওই নিয়োগ কীভাবে হয়েছে? তখনই জড়িয়ে পড়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নাম। তবে আদালতে ওই অভিযোগ অস্বীকার করেন পর্ষদের আইনজীবী। তিনি জানান, পর্ষদ নিজে থেকে কোনও নিয়োগ করেনি। কমিশনের সুপারিশ মেনেই হয়েছে যাবতীয় নিয়োগ। তারপরই এই মামলায় সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দেন সিঙ্গল বেঞ্চ। যদিও তিন সপ্তাহের জন্য সিবিআই অনুসন্ধানে স্থগিতাদেশ দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।