সংক্ষিপ্ত
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তেই এখন ফ্ল্যাট কালচার প্রবেশ করেছে। যার কারণে শহর থেকে শহরতলি সব জায়গাতেই মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে ফ্ল্যাট বাড়ি। এমনকী, কেটে পরিষ্কার করে দেওয়া হচ্ছে জঙ্গল। বুঁজিয়ে দেওয়া হচ্ছে একাধিক পুকুর।
শীতকে (Winter) টাটা বলে এখন ধীরে ধীরে রাজ্যে জাঁকিয়ে বসতে চলেছে গরম (Summer)। মার্চ থেকেই গরম বেশ ভালোই অনুভূত হচ্ছে। বেলার দিকে হু হু করে চড়ছে তাপমাত্রার পারদ (Temperature Increase)। আর বিশ্ব উষ্ণায়নের (Global Warming) প্রভাবে বাড়ছে তাপমাত্রা। তার জেরে একাধিক সমস্যা তৈরি হতে চলেছে। সমুদ্রে জলের (Water Level) মাত্রাও বেড়ে চলেছে। আর এর জেরে একাধিক নিচু জায়গা জলের তলায় চলে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইন্টারগভর্মেন্টাল প্যানেল অফ ক্লাইমেট চেঞ্জের (Intergovernmental Panel of Climate Change) রিপোর্টে কলকাতা (Kolkata), সুন্দরবন (Sundarbans) ও উত্তরবঙ্গ (North Bengal) নিয়ে বিশেষ আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তেই এখন ফ্ল্যাট কালচার প্রবেশ করেছে। যার কারণে শহর থেকে শহরতলি সব জায়গাতেই মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে ফ্ল্যাট বাড়ি। এমনকী, কেটে পরিষ্কার করে দেওয়া হচ্ছে জঙ্গল। বুঁজিয়ে দেওয়া হচ্ছে একাধিক পুকুর। আর একের একের পর জঙ্গল পরিষ্কার করে দেওয়ার ফলে পাহাড়ে ধস নামার আশঙ্কাও বেড়ে গিয়েছে। তার জেরেই বিভিন্ন সময়তেই পাহাড়ে ধস নামতে দেখা যায়। আইপিসিসির রিপোর্ট অনুসারে, বিশ্বের ১০টি দেশের মধ্যে কলকাতায় ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরা, ভূমিকম্প, ভূমিধসের মতো আশঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুন- মার্চের প্রথম সপ্তাহ পার হতেই বাড়ছে পারা, ধীরে ধীরে ঘনাচ্ছে নিম্নচাপের মেঘ
জলবায়ু বিজ্ঞানী অঞ্জল প্রকাশ বলেন, “সাম্প্রতিক আইপিসিসি রিপোর্টে জোর দেওয়া হয়েছে যে কীভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কলকাতার মতো শহরগুলি আরও ঘন ঘন প্রভাবিত হবে। বিশ্লেষণ অনুসারে, আগামী বছরগুলিতে তাপপ্রবাহ বাড়বে। আর তার সঙ্গেই দাপট দেখাবে ঘূর্ণঝড়। খুব সম্ভবত, কলকাতার মতো শহরে তাপ, আর্দ্রতা এবং ঘূর্ণিঝড়ের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে যাবে।"
আরও পড়ুন- যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা বাড়ি ফিরল ৩ পড়ুয়া, খুশির হাওয়া পরিবারে
আইপিসিসি-র ওয়ার্কিং গ্রুপের ষষ্ঠ পর্যালোচনা রিপোর্টে জলবায়ু পরিবর্তনের (Climate Change) বিষয়ে জানানো হয়েছে, ‘সমুদ্রতলের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে যে দেশগুলির বিপদ সবচেয়ে বেশি, তার অন্যতম ভারত। চলতি শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে ভারতের প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষ উপকূলবর্তী অঞ্চলে বন্যার শিকার হতে পারেন। এই শতাব্দীর শেষদিকে সাড়ে চার থেকে পাঁচ কোটি মানুষ বিপদগ্রস্ত হতে পারেন। ২০৫০-এর মধ্যে উপকূলবর্তী অঞ্চলে বাস্তুতন্ত্র বদলে যেতে পারে। ২১০০-র মধ্যে জীবিকার ধরনেও বদল আসতে পারে। নিচু অঞ্চলগুলি ডুবে যাওয়ার ফলে বহু মানুষকে অন্যত্র সরে যেতে হবে। ফলে শহরগুলির উপর চাপ বাড়বে।’
আরও পড়ুন- একেই বলে বাস্তবের সুপারহিরো, সঠিক সময় ব্রেক কষে বৃদ্ধের প্রাণ বাঁচালেন মেট্রোর মোটরম্যান
আইপিসিসি-র রিপোর্টে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, কলকাতায় প্রতি বছর দেড় ডিগ্রি করে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশে পরিবর্তন আসতে পারে। এছাড়া আরও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, ধীরে ধীরে শহরের ভূগর্ভস্থ জলের পরিমাণ দিনে দিনে কমছে। ২০৩০-এর মধ্যে এশিয়ার বহু শহরে ভূগর্ভস্থ জলের পরিমাণ আরও কমে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কলকাতা, দিল্লি, করাচির মতো শহরের কয়েক কোটি মানুষ সমস্যায় পড়তে পারেন। ২০৫০ সালে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে কলকাতা। তার সঙ্গে সঙ্গে একাধিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ ধেয়ে আসবে শহরের উপরে। আর এই পরিস্থিতির হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য এখন থেকেই তৎপর হতে হবে সাধারণ মানুষকে। তার জন্য প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগাতে হবে। বন্ধ করা যাবে না কোনও পুকুর। না হলে এখন কলকাতায় বাস করতে ভালো লাগলেও, কয়েক বছর পর বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠবে আপনার প্রিয় শহর।