সংক্ষিপ্ত
- দ্বিতীয়বার বিজেপির রাজ্য় সভাপতি পদে দিলীপ ঘোষ
- দিলীপের ফের পদে আসা পরোক্ষে চিন্তায় ফেলেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে
- দলে দিলীপ ঘোষের আধিপত্য়ে মুকুল এখনও 'ফরেন বডি'
- দলে দিলীপের সঙ্গে মুকুলের সখ্য়তার রাস্তা খুঁজছে বিজেপি
অন্য কাউকে দায়িত্ব দেওয়ার প্রশ্নই ছিল না। দ্বিতীয়বার বিজেপির রাজ্য় সভাপতি পদে আসীন হয়েছেন দিলীপ ঘোষ। যদিও দিলীপের ফের পদে আসা পরোক্ষে চিন্তায় ফেলেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। মুরলীধর স্ট্রিটে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে,'ঘোষ মশাইয়ের' আধিপত্য়ে দলে মুকুল এখনও 'ফরেন বডি'।
'আমাদেরও দিন আসবে', প্রকাশ্য় সভা থেকে পুলিশকে হুমকি সায়ন্তন বসুর
তাঁর নেতৃত্বে ২ থেকে ১৮ তে এসেছে দল। লোকসভা নির্বাচনে বিপুল সাফল্য পেয়েছে বিজেপি। তাই ফের সভাপতি করে আনা হয়েছে দিলীপ ঘোষকে। যদিও কেন্দ্রীয় বিজেপির একাধিক নেতার দাবি, একলা দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে রাজ্য়ে লোকসভা ভোটে সাফল্য় পায়নি বিজেপি। এক্ষেত্রে বড় কাজ করেছে মোদী হাওয়া। তবে ক্লিক করে গিয়েছে 'দিলীপ-মুকুল উইনিং কম্বিনেশন'। যদিও হাজার সাফল্য়ের কারিগর হয়েও দলে 'ফরেন বডি' হয়ে থেকে গিয়েছেন মুকুল। যে কারণে রাজ্য় থেকে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে বেশি দেখা যায় তাঁকে। ২১-এর নির্বাচনে এই বিষয়টাই ভাবাচ্ছে মোদী-শাহদের।
শীত বিদায়ের প্রস্তুতি শুরু, কলকাতায় দিনে ফিরছে গরম
অতীতে একবার প্রকাশ্য়েই বাক্য়বানে জড়িয়েছিলেন রাজ্য় বিজেপির দুই যুযুধান। একটি পোর্টালে মুকুল রায় সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য় করেছিলেন দিলীপ। গোপন রেকর্ডিংয়ে দিলীপ বলেন, দলে মুকুলের থেকে অনেক বড় নেতা রয়েছে। মুকুল রায় কোনও নেতাই নয়। বিজেপির রাজ্য় সভাপতির এই বক্তব্য় প্রকাশ্য়ে আসতেই শুরু হয় বিতর্ক। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে , পাল্টা জবাব দেন মুকুলও। এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে মুকুল বলেন, কে বড় নেতা সেটা মানুষ ঠিক করবে।
ফের বিজেপির সভাপতি পদে দিলীপ,উত্তর দিলেন নিন্দুকদের
শোনা যায়, দলের দুই হেভিওয়েট নেতার এই বক্তব্য় ঘিরে সরগরম হয়ে ওঠে বিজেপির রাজ্য় রাজনীতি। সেবার দিল্লির নেতাদের হস্তক্ষেপে কোনওমতে এই আগুনে ছাই চাপা দেয় শাহ ব্রিগেড। দিলীপ ঘনিষ্ঠদের মতে, দলে পুরোনোদর সঙ্গে তৃণমূল থেকে আসা নব্য়দের দাপাদাপি ভালো চোখে দেখেন না পুরাতনরা। লোকসভা ভোটের আগে প্রার্থী নির্বাচন নিয়েও দু জনের মধ্য়ে অল্প বিস্তর ঠোকাঠুকি লেগেছে। কিছুদিন আগেও দলে শোভন-বৈশাখী নিয়ে মুকুলের সঙ্গে দিলীপের দ্বৈরথ একপ্রকার সামনে চলে আসে।
সূত্রের খবর, দিলীপ-মুকুলের এই ইগোর লড়াই অমিত শাহর কাছেও পৌঁছেছে। দিলীপ যেখানে আরএসএস থেকে উঠে এসেছেন, সেখানে একেবারে 'একনায়কতান্ত্রিক' দলের নেতা ছিলেন মুকুল। কিন্তু মুকুলের 'পার্টিগণিত' সম্পর্কে জ্ঞান উপলব্ধি করেছেন কৈলাস বিজয়বর্গীয় থেকে মুরলীধর রাও, অরবিন্দ মেননের মেতা নেতারা। লোকসভা নির্বাচনে বিপুল সাফল্য়ের পর খোদ তিন বিদানসভা উপনির্বাচনে হার ভাবাচ্ছে তাঁদের। সবথেকে বড় বিষয়, দলের রাজ্য় সভাপতি হয়ে নিজের খড়গপুরের বিধানসবা আসন ধরে রাখতে পারেননি দিলীপবাবু। মনে করা হচ্ছে , মুকুল সক্রিয় না হওয়ায় এরকম একটা পরিস্থিতি হয়েছে রাজ্য় বিজেপিতে।
সেদিক থেকে দিলীপ-মুকুলকে একত্রিত করতে চাইছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সেক্ষেত্রে দিল্লিতে রাজ্য় কেন্দ্রীয় কোনও পদে বসানো হতে পারে মুকুলকে। রাজ্য় রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, সর্বভারতীয় বিজেপির সহ সভাপতি পদে আনা হতে পারে মুকুল রায়কে। যদিও এখনই মুকুলকে পদে আনা নিয়ে দ্বিমত রয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মধ্য়ে।