সংক্ষিপ্ত

শুক্রবার নতুন মূল্য ধার্য করল সরকারি তেল সংস্থা।  চলুন এবার  কলকাতা-দিল্লি সহ দেশের বাকি শহরগুলিতে পেট্রোল-ডিজেলের দাম কত, জেনে নেওয়া যাক।

শুক্রবার নতুন মূল্য ধার্য করল সরকারি তেল সংস্থা। দেশের বাজারে একমাসের বেশি সময় ধরে একশো টাকার উপরে থমকে রয়েছে পেট্রোলের দর। অনেক শহরে ডিজেলের দাম ১০০ পার করেছে। অনেক জায়গায় আবার সেঞ্চুরি হাঁকানোর অপেক্ষায়। গত ৬ এপ্রিল শেষবার পেট্রোল-ডিজেলের দাম ৮০ পয়সা করে বেড়েছিল। এদিকে আবার গত কয়েকদিন ধরেই বিশ্ব বাজারে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম উর্ধ্বমুখী হওয়ার পর গতি বদলেছে। এহেন পরিস্থিতিতে এখনও অবধি অবিজেপি রাজ্যগুলি জ্বালানীর দাম কমার স্বাদ একবারও পায়নি।এদিন সকালে নতুন মূল্য ধার্য করল সরকারি তেল সংস্থা। চলুন এবার  কলকাতা-দিল্লি সহ দেশের বাকি শহরগুলিতে পেট্রোল-ডিজেলের দাম কত, জেনে নেওয়া যাক।

এদিন কলকাতায় পেট্রোলের  প্রতি  লিটারের দাম  ১১৫ টাকা ১২ পয়সা। পাশাপাশি   প্রতি লিটার ডিজেলের দাম  দাঁড়িয়েছে ৯৯ টাকা ৮৩ পয়সা। রাজধানী দিল্লিতে বেড়ে প্রতি লিটার পেট্রোলের দাম   ১০৫ টাকা ৪১ পয়সা। এবং ডিজেলের দাম  ৯৬ টাকা ৬৭ পয়সা হয়েছে। মুম্বই লিটার প্রতি পেট্রোল ১২০ টাকা ৫১ পয়সা  দাঁড়িয়েছে।  এবং লিটার প্রতি ডিজেলের দাম ১০৪ টাকা ৭৭ পয়সা দাঁড়িয়েছে। চেন্নাইয়ে লিটার প্রতি পেট্রোলে দাম ১১০ টাকা ৮৫ পয়সা  দাঁড়িয়েছে।  এবং লিটার প্রতি ডিজেলের দাম   ১০০ টাকা ৯৪ পয়সা দাঁড়িয়েছে। ব্যাঙ্গালোরে লিটার প্রতি পেট্রোলে দাম ১১১ টাকা ৯পয়সা  দাঁড়িয়েছে।  এবং লিটার প্রতি ডিজেলের দাম  ৯৪ টাকা ৭৯ পয়সা দাঁড়িয়েছে।

আরও পড়ুন, সুখের দিন শেষ, আজ থেকেই তাপমাত্রা বাড়তে পারে দক্ষিণবঙ্গে, প্রবল বর্ষণ উত্তরবঙ্গে

 উল্লেখ্য, অবিজেপি রাজ্যগুলিতে পেট্রোল-ডিজেলের দাম কোনও তেমন বদল হয়নি। সেই তালিকায় বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ। তবে জ্বালানীর দাম না কমার জন্য সেই রাজ্যের সরকারকেই দায়ী করলেন মোদী। প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, 'পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম বাড়ার বোঝা কমাতে, কেন্দ্রীয় সরকার গতবছর নভেম্বরে আবগারি শুল্ক কমিয়েছিল। রাজ্যগুলিকেও তাদের কর কমানোর আহ্বান জানানো হয়েছিল। কিছু রাজ্য তাঁদের কর কমিয়েছে। কিন্তু কিছু রাজ্য তাদের জনগণকে সেই সুবিধা দেয়নি। মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, কেরালা, ঝাড়খণ্ড, তামিলনাড়ু কোনও না কোনও কারণে কেন্দ্রীয় সরকারের কথা মানেনি। এবং সেই সকল রাজ্যের নাগরিকদের জন্য তেলের দামের বোঝা বাড়িয়েই চলেছে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, 'আমি প্রার্থনা করি যে, নভেম্বরে যা করা হয়েছিল, এখন ভ্যাট হ্রাস করে, আপনারা নাগরিকদের সেই সব সুবিধা দিন।'

আরও পড়ুন, আনিস পালাতে গিয়ে পড়লে, কীভাবে আইপিসি ৩০৪ ধারা প্রযোজ্য হবে ? হাইকোর্টে প্রশ্নের সামনে এসআইটি

 তৃণমূলের মুখপাত্র  কুণাল ঘোষ ইতিমধ্যেই বলেছেন,'কর্পোরেট সংস্থাগুলিতে জ্বালানি তেল নিয়ে মুনাফা লাভের রাস্তা তৈরি করে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। আর এর জন্য সমস্যায় পড়তে হয়েছে দেশের সাধারণ মানুষকে।' পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কুণাল বলেন, কেন্দ্র যদি রাজ্যের বকেয়া ৯৮ হাজার কোটি টাকা দিয়ে দেয় তাহলে রাজ্য সরকার আগামী ৩ বছর পেট্রোল আর ডিজেলের ওপর থেকে কোনও কর আদায় করবে না। তিনি আরও বলেন,' বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিকে প্রাপ্য টাকা মিটিয়ে দিচ্ছে কেন্দ্র। কিন্তু অ-বিজেপি রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে টাকা আটকে রাখা হয়েছে' বলেও তিনি দাবি করেছেন।

আরও পড়ুন, '২৩ থেকে ৪৬, বাংলায় বাড়তে পারে জেলার সংখ্যা', বড়সড় ইঙ্গিত দিলেন মুখ্যমন্ত্রী

প্রসঙ্গত, একুশ সালে দেশের সাধারণ মানুষকে দীপাবলির উপহার দেন নরেন্দ্র মোদী। লিটার প্রতি পেট্রোলে ৫ টাকা এবং ডিজেলে ১০ টাকা শুল্ক কমায় কেন্দ্র। কিন্তু সেই সুবিধা পায়নি বাংলার বাসিন্দারা।  কলকাতা সহ দেশের অধিকাংশ শহরেই পেট্রোলের দাম সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে। ১০০ পথে ডিজেলও অনেক জায়গায়। গত সতেরো দিনে ইতিমধ্যেই ১৪ বার দাম বেড়েছে পেট্রোল-ডিজেলের।  নতুন করে লাফিয়ে বাড়ার পর ফের পেট্রোল-ডিজেলের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ৭ এপ্রিল থেকে ১২ মে টানা পেট্রোল-ডিজেলের দাম স্থির রয়েছে। আর এবার মোদীর তোপের পরেই পাল্টা দিলেন তৃণমূলের মুখপাত্র।

অপরদিকে, পরিবহণে জ্বালানী বৃদ্ধির সঙ্গে, আগুন লেগেছে রান্নার গ্যাসের দামেও। মধ্যবিত্তের নাভিশ্বাস বাড়িয়ে ফের ৫০ টাকা বাড়ল রান্নার গ্যাসের দাম। একলাফেই ১০০০ টাকার গন্ডি পার করল এলপিজি গ্যাস।  কলকাতায় ১৪.২ কেজি ভর্তুকিহীন গ্যাস কিনতে এবার দিতে হবে ১০২৬ টাকা। গ্যাসের দাম বাড়তেই মধ্যবিত্তের ফের নাভিশ্বাস হবার জোগাড়। ২২ টি খাদ্যপণ্য়ের দাম গত এক বছরে ৯.৭ শতাংশ বেড়েছে। অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, এমনিতে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রিজার্ভ ব্যাঙ্কে নীতি বদলে সুদের হার বাড়াতে হয়েছে। খাদ্যপণ্যের দাম খুচরোপণ্য়ের মূল্যবৃদ্ধির হারে সবথেকে বেশি ধাক্কা দেয়। তা যদি এভাবে বাড়ে, তাহলে মূল্যবৃদ্ধির হারও বাড়বে। এই মূল্যবৃদ্ধির পিছনে অর্তনীতিবিদদের অনেকে, জ্বালানীর দামবৃদ্ধির কারণও দেখেছেন। মার্চ থেকে এপ্রিল ডিজেলের দাম ৯.৭ শতাংশ বেড়েছে। ফলে পণ্য পরিবহনের খরচও বেড়েছে। পেট্রোলের দাম বেড়েছে ৮.৯ শতাংশ। গত এক বছরে পেট্রোলের দাম ১৬ শতাংশের বেশি, ডিজেলের দাম ১৯ শতাংশেরও বেশি এং রান্নার গ্যাস ১৭ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে।