সংক্ষিপ্ত

পার্থ চট্টোপাধ্যায় আট বছর আগে পিএইচডি করেছেন। এসএসসি কেলেঙ্কারিতে ইডি তাকে হেফাজতে নেওয়ার পরে, তার পিএইচডি নিয়ে নতুন অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। 

যেখানে ৭৫ শতাংশ হাজিরা লাগে পিএইচ ডি ডিগ্রি পেতে, সেখানে মাত্র দুদিন উপস্থিত থেকে কিভাবে পেলেন ডিগ্রী। এই প্রশ্নতেই এখন তোলপাড় গোটা রাজ্য। উল্লেখ্য, আট বছর আগে দুহাজার পনেরো সালে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীকে এই ডিগ্রী দিয়েছিল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে কিভাবে মাত্র তিনদিন উপস্থিত থেকে তিনি এই ডিগ্রী পেলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। 

পার্থ চট্টোপাধ্যায় আট বছর আগে পিএইচডি করেছেন। এসএসসি কেলেঙ্কারিতে ইডি তাকে হেফাজতে নেওয়ার পরে, তার পিএইচডি নিয়ে নতুন অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। অভিযোগ উঠেছে, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, বিভাগীয় প্রধান ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিয়ম ভঙ্গ করে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীকে পিএইচডি ডিগ্রি দিয়েছেন। কার্যত নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগে বিভাগীয় প্রধানকে সাতটি প্রশ্ন করেন তৎকালীন রেজিস্ট্রার।

অন্যান্য পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে পিএইচ ডি পেতে গেলে অন্তত ৭৫% হাজিরা দিতে হয়। সেখানে শিক্ষামন্ত্রীর উপস্থিতি একেবারেই শূন্য। ফলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এবারে হয়ত ইডির জেরার সামনে পড়ছেন সেই সময়ের রেজিষ্টার সহ প্রত্যেকেই। বিতর্ক ছড়িয়েছে কারন সেই সময় একেকজনের পি এইচ ডি ডিগ্রী পেতে অনেকটাই সময় লেগেছিল। আর সেখানে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী উপস্থিত না থেকেও কিভাবে ডিগ্রী পেয়ে গেলেন সেটা নিয়েই তোলপাড় গোটা উত্তরবঙ্গ জুড়ে।

পার্থ 'বান্ধবী' অর্পিতার বেলঘরিয়ার ফ্ল্য়াটে 'যখের ধনের সন্ধান', ওয়াড্রোব, শৌচাগার থেকে উদ্ধার ২৯ কোটি টাকা

TET Scam: দফায় দফায় জেরা মানিক ভট্টাচার্যকে, সকাল ১০টা ঢুকে সিজিও থেকে ছাড়া পেলেন রাত ১২টায়

সাসপেন্ড সাংসদদের ৫০ ঘণ্টার লম্বা প্রতিবাদ কর্মসূচি, তন্দুরি চিকেন থেকে দই ভাত- খাওয়ার অঢেল আয়োজন

যে প্রশ্নগুলো তৎকালীন রেজিস্টারকে করা হবে, সেগুলি হল

১. যেখানে ছয় মাসের কোর্সওয়ার্কের জন্য ক্লাসে ৭৫ শতাংশ উপস্থিতি বাধ্যতামূলক, সেখানে পার্থ চট্টোপাধ্যায় কীভাবে দুই দিনে পরীক্ষা দিলেন?

২. একই সঙ্গে তথ্য অধিকার আইনে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিভিন্ন ব্যক্তি জানতে চান, পার্থ চট্টোপাধ্যায় কোর্সওয়ার্ক পরীক্ষা দিয়েছেন কি না?

৩. কোর্সওয়ার্কের জন্য কয়টি ক্লাস ছিল, পার্থ চট্টোপাধ্যায় কয়টি ক্লাস করেছে, আদপে কয়টি ক্লাস প্রয়োজন?

জানা গিয়েছে ২০১২ সালে পার্থ কোর্সওয়ার্ক পরীক্ষা দেন। পিএইচডি করার জন্য তাকে আরও দুই বছর অপেক্ষা করতে হয়েছিল। ২০১২ সালের ২৩ এপ্রিল, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের তৎকালীন প্রধান সঞ্চারী রায় মুখোপাধ্যায় লিখিতভাবে বলেছিলেন, কোর্সওয়ার্কের প্রতিটিতে দুঘন্টার মোট ৪৮টি ক্লাস লেকচার ছিল। তার মধ্যে দুটিতে যোগ  দিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। 

সেক্ষেত্রে প্রশ্ন থেকে যায়, তাহলে পার্থ তার ৭৫ শতাংশ উপস্থিতির মাপকাঠি কীভাবে পূরণ করলেন? বিভাগীয় প্রধান যুক্তি দেন যে সপ্তাহে ১৬ ঘন্টা অর্থনীতি কোর্সের জন্য বরাদ্দ করা উচিত। এর মধ্যে ৪ ঘন্টা 'ক্লাস লেকচার' এবং ১২ ঘন্টা লাইব্রেরি-ওয়ার্ক। এটি মোট ১৩ সপ্তাহ চলে। সব একসাথে ২০৮ ঘন্টা হয়। এর মধ্যে ৭৫ শতাংশ অর্থাৎ ১৫৬ ঘন্টা উপস্থিত থাকতে হবে। প্রশ্ন উঠেছে, ক্লাসে না এসে পার্থ কীভাবে সেই 'সময়' দিলেন? কোর্সওয়ার্কের ৭৫ শতাংশ ক্লাসে উপস্থিত থাকতে হবে- এটাই নিয়ম। অন্যথায়, সবাই বাড়িতে কোর্সওয়ার্ক করবে বলে জানানো হয়। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই সেই শর্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে পূরণ হয়নি বলে খবর।