সংক্ষিপ্ত
১৫ মিনিটের জোরদার অপারেশন-কার্যত খালি হয়ে যায় করুণাময়ীতে ৮০ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে চলা টেট চাকরি প্রার্থীদের অবস্থান ও অনশন কর্মসূচি। এদিকে, শুক্রবার সকাল থেকে গোলমালের আশঙ্কায় এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী।
সকাল থেকে সেই থমথমে পরিবেশ আর নেই। নেই আন্দোলকারীদের মৃদু গুঞ্জন। বৃহস্পতিবার মাঝরাতেই জোরজবরদস্তি অনশনকারীদের হঠিয়ে দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ। আদালতের নির্দেশ ছিল এপিসি ভবন চত্বরে ১৪৪ ধারা জারি করার। এরপর থেকেই তৎপর হয় পুলিশ। ১৫ মিনিটের জোরদার অপারেশন-কার্যত খালি হয়ে যায় করুণাময়ীতে ৮০ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে চলা টেট চাকরি প্রার্থীদের অবস্থান ও অনশন কর্মসূচি। এদিকে, শুক্রবার সকাল থেকে গোলমালের আশঙ্কায় এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী।
জানা গিয়েছে, ১৪৪ ধারা জারি করার বিরুদ্ধে শুক্রবার হাইকোর্টে আবেদন জানাবেন বলে জানিয়েছেন বিজেপি নেত্রী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল। আন্দোলনকারীদের প্রতি পুলিশি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পালও। অন্যদিকে, আন্দোলনস্থলে উপস্থিত ছিলেন ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সভাপতি মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। এসএফআই, ডিওয়াইএফআইয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শুক্রবার আন্দোলনস্থলে ফের জমায়েত করা হবে।
এদিকে, পুলিশি অভিযানের নিন্দা করে ট্যুইট করলেন অপর্ণা সেন। তিনি ট্যুইটে লিখেছেন, অনশনকারীদের গণতান্ত্রিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে তৃণমূল সরকার। অহিংস আন্দোলনের বিরুদ্ধে ১৪৪ ধারা জারি করা হল কেন? সরকারের অনৈতিক আচরণের তীব্র প্রতিবাদ করছি।
ঘটনার কড়া নিন্দা করে ট্যুইট করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ট্যুইটে তিনি লেখেন, পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ সল্টলেকে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অফিসের সামনে ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণদের অবস্থানকে নির্মমভাবে বলপ্রয়োগ করে তুলে দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ, না কি, হিটলারের জার্মানি?
গভীর রাতে পুলিশি অভিযানের কড়া সমালোচনা করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, এই সরকার কাজও করতে দেবে না। তার বিরুদ্ধে আন্দোলনও করতে দেবে না। যাঁরা চাকরির জন্য আন্দোলন করছেন, তাঁদের নির্মমভাবে ধাক্কা মেরে তুলে দিয়েছে। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যে গণতন্ত্রের পরিবেশ নেই।
উল্লেখ্য, আন্দোলনকারীদের আটক করার আগে পুলিশের তরফ থেকে মাইকে ঘোষণার মাধ্যমে তাঁদের উঠে যেতে বলা হয়। সেই অনুরোধে কাজ না হওয়ায় উচ্চপদস্থ আধিকারিকের নির্দেশে পদক্ষেপ গ্রহণ করে পুলিশ। ২০১৪ সালের প্রার্থীদের যখন টেনে হিঁচড়ে পুলিশের গাড়িতে তোলা হচ্ছে, তখন এত কিছুর দেখেও নিজেদের প্রতিবাদে অনড় ছিলেন ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণরা।
পুলিশ এসে তাঁদের সঙ্গেও কথা বলে। তাঁদের মধ্যেও কিছু জনকে বাসে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় অন্যত্র। তবে, বেশির ভাগই নিরাপত্তার কারণে অত রাতে কোথাও চলে যেতে রাজি হননি। পরে আরও বড় পুলিশ বাহিনী নিয়ে আসা হয়। প্রথমে ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীরা পুলিশকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তাঁরা সকাল হলেই করুণাময়ী চত্বর ছেড়ে চলে যাবেন। কিন্তু, তাঁদের সেই ভরসা সত্ত্বেও অবশেষে পুলিশ তাঁদের সকলকেই সরিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন-
২০১৪ বনাম ২০১৭, টেট চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের বিরুদ্ধে পালটা আন্দোলনে নামলেন টেট চাকরিপ্রার্থীরাই
ভারতের সীমানায় ‘বিচিত্র’ পরিস্থিতি, মোকাবিলা করতেই ‘অগ্নিপথ’ স্কিম চালু করেছে কেন্দ্রের মোদী সরকার?
‘রানিকে খান খান করে ছাড়ব’, শাসকদলকে কড়া হুঁশিয়ারি সুকান্ত মজুমদারের, প্রয়োজনে অস্ত্র তুলে নেওয়ার বার্তাও