সংক্ষিপ্ত
বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের (Baisakhi Banerjee) সন্তানের বাবা হলেন শোভন চট্টোপাধ্য়ায়ের (Sovan Chatterjee)। প্রাক্তন স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্য়ায়ের (Ratna Chatterjee) বিরুদ্ধে আনলেন মিথ্যাচারের অভিযোগ।
দুর্গাপুজোর দশমীর দিন তাঁদের দেখা গিয়েছিল সিঁদুর খেলতে। যা নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। শোভন চট্টোপাধ্য়ায়ের (Sovan Chatterjee) প্রাক্তন স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্য়ায় (Ratna Chatterjee) তীব্র নিন্দা করেছিলেন। তবে, তাতে যে শোভন-বৈশাখীকে (Sovan-Baishakhi) থামানো যায়নি, তার পরিচয় মিলল ফেসবুকে। এবার ফেসবুক লাইভে এসে তাঁদের সম্পর্ককে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেলেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র। বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের (Baisakhi Banerjee) সন্তানের বাবা হলেন তিনি। সেইসঙ্গে, অভিযোগ করলেন নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার জন্য, তাঁর নামে কুৎসা করছেন প্রাক্তন স্ত্রী রত্না।
কয়েকদিন আগেই গোলাপি রঙা শাড়িতে সেজেছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। শোভন চট্টোপাধ্যাায় তাঁর সঙ্গে রঙ মিলিয়ে একটি গোলাপি রঙের পাঞ্জাবি পরেছিলেন। আর রীনা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Rina Banerjee) ওরফে মহুল, অর্থাৎ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের কন্যার পরণে ছিল গোলাপি রঙের গাউন। গোলাপি মাখা সেই অনুষ্ঠান ছিল, মহুলের জন্মদিন উপলক্ষ্যে। তিনজনে ধূমধাম করে সেই জন্মদিন পালন করেছিলেন। বুধবার ফেসবুক লাইভে এসে, নিজেকে মহুলের বাবা বলেই দাবি করলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। ফেসবুক লাইভে শোভনবাবু বলেন, বর্তমানে তাঁর দুই সন্তান নয়, তিন সন্তান - সপ্তর্ষী চট্টোপাধ্যায় (Saptarshi Chatterjee) ও সুহানি চট্টোপাধ্যায় (Suhani Chatterjee) (শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং রত্না চট্টোপাধ্যায়ের পুত্র-কন্যা) এবং রীনা বন্দ্যোপাধ্যায়। রীনা ওরফে মহুলকে তিনি এবং বৈশাখী, দুজনে মিলেই বড় করছেন বলে দাবি করেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। এর আগে দুর্গাপুজোর সময়, শোভন-বৈশাখী এবং মহুলকে রঙ মিলিয়ে নতুন জামা পরে ঠাকুর দেখতে যেতেও দেখা গিয়েছিল।
বছরের শুরুতে বিধানসভা নির্বাচনে বিধায়িকা নির্বাচিত হয়েছেন রত্না চট্টোপাধ্যায়। এবার তাঁকে কলকাতা পুর নির্বাচনেও টিকিট দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তারপরই এক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাতকার দিয়েছিলেন রত্না দেবী। সেখানে তিনি জানিয়েছিলেন, রাস্তায় মাদারির খেলা দেখতে গিয়ে দুজন ছেলেমেয়েকে তুলে এনেছিলেন শোভন চট্টোপাধ্য়ায়। তারপর থেকে তাঁদের কোলেপিঠে করে মানুষ করেছিলেন রত্না দেবীই। সেইসঙ্গে শোভন বাবুকে ওয়ার্ডের কাজেও সহায়তা করতেন। সেই খবর প্রকাশিত হয়েছিল, পর্ণশ্রীর বাড়িতে শোভন চট্টোপাধ্য়ায়ের আরও দুই ছেলেমেয়ের সন্ধান মিলল, বলে। তারই জবাব দিতে এদিন লাইভে আসেন শোভনবাবু।
তিনি দাবি করেছেন, এই সমস্তই মিথ্যা কথা। তিনি জানিয়েছেন, একবার এক রিয়েলিটি শোতে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সেখানে আরও কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিও উপস্থিত ছিলেন। সেখানে, খেলা দেখাচ্ছিল একটি দল, যেখানে দুটি বাচ্চা ছেলে-মেয়েকে দেখতে পেয়েছিলেন তখনকার কলকাতার মেয়র। যা দেখে তাঁর মনে অত্যন্ত কষ্ট হয়েছিল। এরপর তাদের অভিভাবকদের খোঁজ করেন শোভন। জানতে পারেন, তারা মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরের এক প্রত্যন্ত গ্রামে থাকে। তাদেরকে বেদান্ত আশ্রমে পড়াশোনা করার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। শোভনবাবু দাবি করেছেন, সেখানেই তারা পড়াশোনা করত, ছুটিতে তাদের বাড়ির লোকজন, গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যেত।
কাজেই রত্নাদেবীর উপর তাদের ভার চাপিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি, এই কথা সত্যি নয়। এমনকী কখনও তারা শোভনবাবুদের বাড়িতেও আসেননি। রত্না দেবীর কোলে পিঠে করে মানুষ করার প্রশ্নই আসে না। শোভনবাবুর দাবি, সম্ভবত নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চেয়েই এইসব কথা বলছেন রত্না দেবী। তবে, ১০টি নির্বাচন জয়ের অভিজ্ঞতা থেকে শোভনবাবু জানিয়েছেন, এই ধরণের নিচু মানসিকতার পরিচয় দিয়ে নির্বাচনে জেতা যায় না। যে ৩৫ বছর তিনি কাউন্সিলার ছিলেন, সব কাজ নিজেই সামলেছেন, রত্না দেবীর কোনও সাহায্য নেননি, তিনি বাড়িতেই থাকতেন, এমনটাই দাবি করেছেন শোভন। আর সিঁদুর খেলা, বৈশাখীর মেয়ের বাবা বলে নিজেকে পরিচয় দেওয়ার পর, এখন তিনি অপেক্ষা করছেন রত্না দেবীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের। তা পাকা হলেই, বৈশাখী দেবীর সঙ্গে সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিয়ে যাবেন, এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র।