সংক্ষিপ্ত
কলকাতা শহরে এতদিন সরকারিভাবে আম আদমি পার্টির কোনও ঠিকানা ছিল না। মূলত দলের কর্মীরা কোথাও সমবেত হয়ে পার্টি কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করতেন। এবার সেই কাজ নিজেদের পার্টি অফিসে বসেই করতে পারবেন আম আদমির পশ্চিমবঙ্গ শাখার সদস্যরা।
কলকাতায় আম আদমি পার্টি-র রাজ্য দফতরের প্রথম ছবি। আর সেই ছবি এখন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হাতে। কেমন দেখতে সেই বহুতল, যেখানে রাজ্য দফতর খুলছে আম আদমি পার্টি! সেই ছবি এখন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হাতে। আম আদমি পার্টি যে বিজ্ঞপ্তি শনিবার সকালে জারি করেছে তাতে দেখা গিয়েছে যে তাদের রাজ্য দফতর খোলা হচ্ছে দক্ষিণ কলকাতার সেলিমপুর এবং কসবা লাগোয়া হালতু অঞ্চলে। এমনকি রাজ্য দফতরের ঠিকানাও তারা বলে দিয়েছে। রবিবার অর্থাৎ মহালয়ার দিন সেখানেই প্রেস কনাফারেন্স করার কথা পশ্চিমবঙ্গে আপ-এর কেন্দ্রীয় পর্যেবক্ষক ও দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সঞ্জয় বসুর।
আম আদমি পার্টির যে ঠিকানা ইতিমধ্যেই প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে যা জানানো হয়েছে তা এরকম- থার্ড ফ্লোর, হসপিটাল রোড ইস্ট, সাউথ পূর্বাচল, হালতু, গড়ফা, কলকাতা ৭০০০৭৮। এছাড়াও আম আদমি পার্টির পক্ষ থেকে তাদের দলের ওয়েবসাইটের ইউআরএল বা ওয়েব অ্যাড্রেসও শেয়ার করা হয়েছে, যা এমন- ডবলুডবলুডবলু ডট আম আদমি পার্টি ডট ওআরজি। ইমেল অ্যার্ডেস- ওয়েস্টবেঙ্গলআমআদমিপার্টি@জিমেলডটকম। হেল্পলাইন নম্বর- ৯১৬৩৪৭৮০০০। ফেসবুক পেজ- আপওয়েস্টবেঙ্গল।
দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে ঐতিহাসিক জয়ের পর থেকেই কলকাতায় আম আদমি পার্টির প্রতি মানুষের সমর্থনের একটা ঢেউ আঁছড়ে পড়তে দেখা গিয়েছিল। সেই সময় দলে দলে অসংখ্য মানুষ অরবিন্দ কেজরিওয়ালদের প্রতি অনুরক্ত প্রকাশ করে আম আদমি পার্টি-তে যোগ দিয়েছিলেন। দলের সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল শুরু থেকেই একটা বার্তা সাধারণ জনমানসে দিয়েছিলেন যে তাঁদের দল সাধারণ মানুষের জন্য কথা বলবে এবং সাধারণ মানুষের সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্য-কে বাড়তি গুরুত্ব দেবে। দিল্লি-তে ক্ষমতায় এসে নানা ধরনের জনহিতকর কাজের মধ্যে দিয়ে সে কথা প্রমাণও করে দিয়েছিল আম আদমি পার্টি।
গত কয়েক বছরে দিল্লি-সহ উত্তরভারতে, পশ্চিমভারতে যথেষ্টই শক্তিবৃদ্ধি করেছে আম আদমি পার্টি। বিশেষ করে মোদী বিরোধিতায় গো-বলয়ে বিজেপি-র কাছে কোনও কোনও রাজ্যে রাজনৈতিকভাবে মাথা ব্যথার কারণও হয়ে উঠেছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি। যার প্রমাণ মিলেছে পঞ্জাবে বিধানসভা নির্বাচনে। বিজেপি থেকে কংগ্রেস সকলকে ধুলিসাৎ করে দিয়ে এক ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে আম আদমি পার্টি। যার জেরে পঞ্জাবে সরকারও তৈরি করেছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল। এবার অন্য রাজ্যের মধ্যে গুজরাটকে পাখির চোখ করেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। সামনেই গুজরাটের বিধানসভা নির্বাচন। ২০২৪-এ দেশে সাধারণ নির্বাচনের আগে গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনের লড়াই রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শনে একটা তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে। এমন এক পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য দফতর খুলতে চলেছে আপ। রাজনৈতিক মহলের মতে এই তৎপরতা আরও কয়েক বছর আগে দেখাতে হত আপ-কে। এখন যেখানে পঞ্চায়েত নির্বাচন ছাড়া সামনে কিছু নেই সেখানে তাহলে রাজ্য দফতরের প্রয়োজনীয়তাটা কেন। এখানেও অনেকে মনে করছেন অরবিন্দ কেজরিওয়ালের কৌশল।
কারণ, গত কয়েক বছরে আম আদমি পার্টি তাদের যতটুকু রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বিষয়ে শহরকেন্দ্রীক যতটা না কাজ করেছে, তার থেকে বেশি কাজ করেছে কলকাতার শহরতলি, বাংলা ডুবতে বসা বিভিন্ন শিল্প তালুক এবং গ্রামাঞ্চলে কৃষকদের মাঝে। সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে মাথায় রেখে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি নিজেদের মধ্যে হেভিওয়েট লড়াই নিয়ে ব্যস্ত, ঠিক সেই অলক্ষ্যে গত কয়েক বছর ধরে পঞ্চায়েত স্তরে আম আদমি পার্টির কর্মীরা যে ফসলটা ফলিয়েছেন, তাকে ঘরে তুলতে চাইছেন কেজরিওয়াল। এক্ষেত্রে কলকাতার বুকে একটা স্থায়ী ঠিকানা কর্মীদের মনোবলকে আরও চাঙ্গা করবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
আরও পড়ুন-
তৃণমূলের দুর্নীতি থেকে দলবদল- একাধিক প্রসঙ্গে দুর্গা পুজোর আগেই 'জোর কা ঝটকা' দিলেন মিঠুন চক্রবর্তী
বাংলায় মিঠুন চক্রবর্তীর পুজো উদ্বোধনের আগেই বড়সড় বাধা, বালুরঘাটে সার্কিট হাউসে মিলল না থাকার অনুমতি
‘আমার যাবার সময় হল, দাও বিদায়!’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা ফেসবুক পোস্ট, তৃণমূলের অন্দরে বেসুরো সমীর