সংক্ষিপ্ত
গত কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে ডিসেম্বরের এই শেষ সপ্তাহে শীতকালীন আবহাওয়াকে প্রভাবিত হতে। বিশেষ করে পশ্চিমি ঝঞ্জার প্রভাবে প্রভাবিত হচ্ছে আবহাওয়া। এর ফলে শীতের প্রকোপ যেমন কমছে তেমনি হালকা বৃষ্টিও প্রত্যক্ষ করছে মানুষ।
ফের পশ্চিমি ঝঞ্জার উপস্থিতি (Western Disturbance in Weather)। যা এই মুহূর্তে একটি ঘূর্ণিঝড়ের মতো আকার নেওয়ার চেষ্টায় (Cyclonic Circulation)। আর এর জেরেই বর্ষবিদায়ের এই শেষলগ্নে প্রভাবিত হবে উত্তর-ভারত থেকে শুরু করে উত্তর-পশ্চিমভারত, পূর্ব ভারত এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের শীতের আবহাওয়া (Weather Report Today)। পাকিস্তান এবং পূর্ব-আফগানিস্তানের উপরে একটি পশ্চিমি ঝঞ্জা তৈরি হয়েছে যা অনেকটা ঘূর্ণিঝড়ের মতো আকার নিয়েছে। এর থেকেই আবহাওয়া প্রভাবিত হচ্ছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করেছে আবহাওয়া দফতর। এর প্রভাবে আগামী কয়েকদিন আকাশের মুখ ভার থাকবে। রোদের তেজ কম হবে এবং হালকা কুয়াশাচ্ছন্ন পরিস্থিতি তৈরি হবে। কোথাও কোথাও ভারি কুয়াশার পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলেও আবহাওয়ার পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে। কলকাতা শহর এবং তার সংলগ্ন অঞ্চলেও এই ধরনের আবহাওয়া বজায় থাকবে বলেও এই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে (Weather Report Kolkata)। এমনকী, ২৮ তারিখ থেকে এই অঞ্চলে হালকা এবং ঝিরঝিরে বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। এই ধরনের আবহাওয়াতে উত্তরবঙ্গের শীতকালীন পরিস্থিতি প্রভাবিত হবে এবং তুষারপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে দার্জিলিং, কালিমপং এবং সিকিমে (Weather Report West Bengal)।
পূর্ব আফগানিস্তান ও তার সংলগ্ন পাকিস্তান ভূখণ্ডে যেমন একটা পশ্চিমি ঝঞ্জা তৈরি হয়েছে, তেমনি এক পশ্চিমি ঝঞ্জা ভারতের রাজস্থান মরুভূমি এবং বিদর্ভ ও মধ্যপ্রদেশের পশ্চিমাংশের লোয়ার ট্র্যাটোস্ফিয়ারেও তৈরি হয়েছে। এই দুই মিলিত পশ্চিমি ঝঞ্জা ডিসেম্বরের শেষ কয়েকটা দিনে শীতের আমেজতে হাইজ্যাক করে নিতে তৎপর বলেই আবহাওয়ার পূর্বাভাসে ইঙ্গিত মিলেছে। এর জেরে পাহাড়ি এলাকায় বাতাসের গতি বৃদ্ধি পাবে। এমনকী এর ফলে হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে তুষারপাতের প্রকোপ বাড়তে পারে। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে ২৮ ডিসেম্বর থেকে বৃষ্টি হতে পারে বলেও আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। তবে, উত্তর-পশ্চিমভারতে ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হলেও পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে এটা হালকা ও ঝিরঝিরে বৃষ্টির কথা বলেছে আবহাওয়া দফতর।
এদিকে, আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসে এটাও বলা হয়েছে যে পঞ্জাব-এর কিছু অংশ, দিল্লি, উত্তর-প্রদেশের কিছু অংশ, মধ্যপ্রদেশের একটা অংশ, বিহার, ঝাড়খণ্ডেও আগামী কয়েকটা দিন বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা। এর প্রভাবে উত্তর-পশ্চিমভারতের বহু অংশে তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে শুরু করে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করবে। তবে, শীতকালের অনুপাতে এই অঞ্চলে এই ধরনের তাপমাত্রা এই সময়ে স্বাভাবিক বলেই জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। পূর্ব ভারতের কিছু অংশেও এই তাপমাত্রা বজায় থাকার সম্ভাবনার কথাও বলা হয়েছে ওয়েদার রিপোর্টে।
যদিও কলকাতা এবং বাংলার তাপমাত্রায় খুব একটা কমছে না বলেই উল্লেখ। স্বাভাবিকের থেকে একটু বেশি তাপমাত্রাই এই কয়েকতদিন ঘোরাফেরা করার সম্ভাবনা। বাতাসে গতি থাকায় একটা শীতের অনুভব থাকতে পারে। কিন্তু তাতে তাপমাত্রার পতন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। যদিও, এই পরিস্থিতি কেটে গেলে নতুন বছরের শুরু থেকেই তাপমাত্রা হঠাৎ করে কয়েক ডিগ্রি নেমে যেতে পারে বলে মনে করছেন আবহওয়াবিদরা। কারণ, এই ধরনের পরিস্থিতির উপর য়খন মেঘ কাটতে থাকে এবং রোদের তেজ বাড়তে থাকে তখন তাপমাত্রার পারদটা অনেকটাই নামে। ফলে শীতের আমেজ ফের নতুন বছরেই মিলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে বর্ষবিদায়টা একটু অস্বস্তি এবং বৃষ্টির মধ্যে দিয়েই কাটার সম্ভাবনা রয়েছে উত্তরভারত থেকে শুরু করে পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের। পাহাড়ি এলাকায় তুষারপাত হলে সেক্ষেত্রে বর্ষবরণের সময় উপভোগ্য হতে পারে, কিন্তু একে স্মুথিং ওয়েদার কন্ডিশন কোনওভাবেই বলা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন-
দেখুন ভিডিও- Weather forecast: শীতে বাধা পশ্চিমী ঝঞ্ঝা, বড়দিনে কমতে পারে ঠান্ডা
Changu Snowfall: ছাঙ্গুতে তুষারপাত, আটকে পড়া প্রায় শতাধিক পর্যটককে উদ্ধার সেনার
দেখুন ভিডিও- Kalimpong snowfall: মরসুমের প্রথম তুষারপাত, কালিম্পংয়ে গিয়ে উপরি পাওনা পর্যটকদের