সংক্ষিপ্ত
- ট্রেড ইউনিয়নগুলির ডাকে ৮ জানুয়ারি সাধারণ ধর্মঘট
- মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বনধ বিরোধিতা করছেন
- বিরোধিতা নিয়ে নেটদুনিয়ায় প্রশ্ন
- তাহলে কি মোদিকে তুষ্ট করতেই এই বিরোধিতা
অবস্থান স্পষ্ট করুন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি যদি এতই মোদি বিরোধী হন, তাহলে কেন ৮ তারিখ বনধের এমন আগ্রাসী বিরোধিতায় নেমেছেন তিনি? কেনই বা যাদবপুরের পড়ুয়াদের ওপর লাঠি চালিয়েছে তাঁর পুলিশ? কেনই বা এমন গুজব শোনা যাচ্ছে, কলকাতায় মোদীর সঙ্গে একই মঞ্চে দেখা যেতে পারে তাঁকে?
মমতা বনধ-সংস্কৃতির বিরোধী বলেই কি এর বিরোধিতা করছেন? সিআইটিউয়ের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য আসাদুল্লা গায়েন বক্তব্য, মোটেও তা নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে একসময়ে ৮৩টা বনধ করেছিলেন। আজ তিনি আচমকাই বনধ-বিরোধী হয়ে গেলেন কেমন করে? বনধে আমরা কী দাবি করছি? মাসে ন্যূন্যতম বেতন বা মজুরি ২১ হাজার টাকা করা হোক। অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করা একজন রিক্সাচালক যাতে একটা বয়সের পর ১০ হাজার টাকা পেনশন পান। এনআরসির ইস্যুও রয়েছে এই বনধে। বিজেপি আর তৃণমূলের ট্রেড ইউনিয়ন ছাড়া দেশের প্রায় সবকটা ট্রেড ইউনিয়ন এই বনধকে সমর্থন করছে। এরপরেও মমতার এই বনধ বিরোধিতা মোদিকে তুষ্ট করার জন্যই।"
মমতা বনধ বিরোধী, তাই এই বনধের বিরোধিতা করছেন, এমনটা মানতে নারাজ সমাজবিশ্লেষক ও সাংবাদিক সুমিত চৌধুরী, "আসলে এই ব্যাখ্যাটুকুই কিন্তু যথেষ্ট নয়। কতগুলো হিসেব কিন্তু মিলছে না। যেমন নাগরিত্ব বিল পাশ হওয়ার সময়ে সংসদে কিন্তু তৃণমূলের আটজন সাংসদ উপস্থিত ছিলেন না। কেন? আবার ধরুন, নারদাকাণ্ডে সাংসদদের গ্রেফতারির প্রশ্নে সিবিআই লোকসভার স্পিকারের কাছ থেকে অনুমতি চেয়েছিল। আজ অবধি তা পাওয়া যায়নি। কেন? মমতা মোদি-বিরোধী ঠিকই। কিন্তু এই প্রশ্নগুলোর উত্তরও তো পাওয়া দরকার।"
নেটিজেনদের পোস্টেও ঘোরাফেরা করছে ঠিক এই প্রশ্নগুলোই। সেইসঙ্গে যুক্ত হয়েছে সোমবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের অপ্রিয় প্রসঙ্গটি। তবে বনধের প্রশ্নটাই অনেক বেশি করে উঠে এসেছে। অনেকেই দাবি করছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করুন। কেউ তাঁর ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করছেন, "সোজা কথা বলুন। আমি মোদি অমিকে তুষ্ট রাখবো, নিজের ভাইপো, রাজীবকে বাঁচাতে।৩১ শতাংশ মুসলমানকে বোকা বানিয়ে তুষ্ট রাখবো ভোটে গদি বাঁচাতে।"
এদিকে এই পরিস্থিতিতে মমতার অস্বস্তি বাড়াতে কাকতালীয়ভাবেই যেন কলকাতায় আসছেন নরেন্দ্র মোদি। সোশাল মিডিয়ায় এনআরসি-এনপিআর বিরোধী কিছু গোষ্ঠী ওইদিন কলকাতা বিমানবন্দর ঘেরাও করার ডাক দিয়েছে। যদি ওই জমায়েত আদৌ হয় আর সেখানে লাঠি চলে পুলিশের, তাহলে মমতার মোদি-বিরোধিতা আবারও প্রশ্নের মুখে পড়বে। নিঃসন্দেহে।