Milk News: দুধ নাকি আমিষ, আমেরিকা-ভারতের এক বাণিজ্য প্রেক্ষাপটে এই প্রশ্নই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। আমেরিকার 'আমিষ দুধ' বাজারে আমদানির প্রস্তাবে অনুমতি দেয়নি ভারত।
Milk Tips: দুধ—ভারতীয় সমাজে এটি কেবল একটি খাদ্যপণ্য নয়, বরং ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক বিশ্বাস। পুজো থেকে শুরু করে উপবাসের সময় গরু বা মহিষের দুধ পান করে থাকেন অনেকে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ের এক আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আলোচনা এই বিশ্বাসকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে এক বিতর্কিত ধারণা - আমিষ দুধ।
আমেরিকার মতো কিছু দেশে, দুগ্ধ খামারে বাঁধা গরুগুলিকে মৃত প্রাণীর হাড়, মাছের গুঁড়ো এবং মাংসের গুঁড়ো তাদের খাবারে মিশ্রিত করা হয়। গরু যখন এই পশু থেকে প্রাপ্ত খাবার খায়, তখন ধর্মীয়ভাবে কিছু সম্প্রদায়ের কাছে তাদের দুধ আর 'খাঁটি নিরামিষ' থাকে না।
তবে গরুকে কেন আমিষ খাওয়ানো হয়?
আমেরিকা, ব্রাজিল ও ইউরোপে, অনেক দুগ্ধ খামারে গরুকে এমন খাদ্য দেওয়া হয় যার মধ্যে থাকতে পারে মৃত প্রাণীর হাড় গুঁড়ো, মাছের গুঁড়ো, মুরগির ছাঁট, পশু চর্বি ইত্যাদি।
গরুর খাওয়ারে প্রোটিনের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য মৃত প্রাণীর হাড় বা মাংস গরুর খাবারে যোগ করা হয়। ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড এবং প্রোটিন বাড়ানোর জন্য মাছের গুঁড়ো যোগ করা হয়। আবার মুরগির বর্জ্য সস্তায় পুষ্টিকর এবং শূকর, গরুর চর্বি ক্যালোরির পরিপূরক হিসাবে খাওয়ানো হয় গরুকে। ফলে যেসব গরু এই ধরনের খাবার খায়, তাদের থেকে প্রাপ্ত দুধ মতে ‘নিরামিষ’ নয়, বরং ‘আমিষ’ - এমনটাই ধারণা অনেকের।
ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য বিরোধ:-
FSSAI অর্থাৎ ভারতের খাদ্য সুরক্ষা মান কর্তৃপক্ষ ২০২১-২২ সালে প্রস্তাবিতা নিয়ম অনুযায়ী বলা হয়, যদি কোনও দুগ্ধজাত পণ্যে ব্যবহৃত দুধের উৎস পশু-ভিত্তিক খাদ্য হয়, তবে তা 'আমিষ' চিহ্ন দিয়ে বিক্রি করতে হবে।
এই নিয়মের ভিত্তিতেই আমেরিকার দুধ 'আমিষ দুধ' বলে বাণিজ্য প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত। ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতার কারণে ভারত এটিকে একটি অ-আলোচনাযোগ্য লাল রেখা বলে অভিহিত কিরে হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, যেসব গরু আমিষ খাদ্য খায়, তাদের দুধ ভারতীয় বাজারে প্রবেশ করতে পারবে না। অন্যদিকে আমেরিকা এই অবস্থানকে অপ্রয়োজনীয় বাণিজ্য বাধা বলে অভিহিত করেছে।
ভারতে এখনও গরকে শুকনো খড়, সবুজ পশুখাদ্য, ভুট্টা, খৈল এবং গমের দানা দেওয়া হয়। আবার, ভারতের মতো দেশে যেখানে বিশাল জনগোষ্ঠী নিরামিষভোজী এবং গরুকে "মা" হিসেবে পুজো করা হয়, সেখানে গরুকে আমিষ খাওয়ার খাওয়ানো এবং এই ধরনের দুধ খাওয়াও একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। যদিও কিছু বৃহৎ দুগ্ধ খামার বিদেশি পশুখাদ্য ব্যবহারের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, কিন্তু সাধারণত আমিষ দুধ ভারতের ধর্মের ক্ষেত্রে অগ্রহণযোগ্য।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।


