হার্ট ব্লকের সমস্যা কখনও একদিনে তৈরি হয় না। দীর্ঘদিন ধরে শরীরে নীরব ঘাতক রূপে পালিত হতে থাকা এই রোগের লক্ষণ আগে থেকেই বোঝা যায়, আমরাই সেগুলোকে উপেক্ষার চোখে দেখে আসি। লক্ষণ বুঝলে সতর্ক হোন, দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ অত্যন্ত জরুরী।
হার্টে অস্ত্রোপচার বা হার্ট অ্যাটাকের নাম শুনলেই অনেকের মন আতঙ্কে ভরে ওঠে। কিন্তু যদি এমন কিছু উপায় থাকে, যার মাধ্যমে আগেভাগেই হার্টের সমস্যার ইঙ্গিত ধরা যায়, তবে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দিলীপ কুমারের মতে, যদিও নির্ভুলভাবে রোগ নির্ণয়ের জন্য পরীক্ষার প্রয়োজন, তবুও কিছু সহজ লক্ষণ ঘরে বসেই চিনে নেওয়া সম্ভব, যা আপনার হার্টের সমস্যার পূর্বাভাস দিতে পারে।
হার্ট ব্লকেজের প্রাথমিক ধারণা ও ধরণ
মানবদেহে কোলেস্টেরল জমা হওয়া একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, যা জন্মের পর থেকেই ধীরে ধীরে আর্টারিতে জমতে থাকে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জীবনযাত্রা, খাদ্যাভ্যাস ও বংশগত কারণের ফলে এই কোলেস্টেরল ধমনীর মুখ সরু করে দেয়, যার ফলে রক্ত চলাচলে বাধা তৈরি হয়। এটিই হার্ট ব্লকেজের প্রধান কারণ।
* বংশগত কারণে হার্ট ব্লজেজ হলে তাকে বলা হবে, ‘কনজেনিটাল হার্ট ব্লক’।
* হার্টের ধমনীতে রক্ত চলাচল বাধাপ্রাপ্ত বা স্তব্ধ হয়ে গেলে তাকে ‘করোনারি থ্রম্বোসিস’ বলা হয়।
* হৃৎস্পন্দনের হার অনিয়মিত হয়ে গেলে রক্তপ্রবাহের গতি বাধা পায়, তখন তাকে বলা হয় অ্যারিদ্মিয়া। এক্ষেত্রে ফার্স্ট, সেকেন্ড ও থার্ড ডিগ্রি ব্লকেজ হয়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধরনের ব্লকের জন্য পেসমেকারও বসাতে হতে পারে।
ঘরে বসেই যেভাবে বুঝবেন হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি আছে কিনা -
১। অ্যানজাইনা
সরু ধমনীর মধ্যে অক্সিজেন-সমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছতে না পারার ফলে শরীরে ব্যাথা শুরু হয়। হাঁটলে বা সিঁড়ি বেয়ে উঠলে বুকের ভিতর ভারী চাপ অনুভব করবেন, শোয়ার সময়েও চিনচিনে ব্যথা হবে, মনে হবে বুকে পাথরের মতো কিছু চাপিয়ে দেওয়া রয়েছে। হাঁটাচলা, দৌড়নো, খাওয়ার সময়ও বুকে ব্যথা হতে পারে। এই লক্ষণ গুলো দেখা গেলে বুঝতে হবে অ্যানজাইনা হয়েছে।
২। চোয়াল ও বাঁ হাতে ব্যথা
দাঁতের ব্যথার মতো চোয়ালে ব্যথা, পেশিতে টান বা টানটান ভাব, শ্বাস নিতে কষ্টও হতে পারে। বাঁ হাতে, ঘাড়ে, কাঁধে বা কাঁধের নিচের অংশে ব্যথা হলে অনেক সময় এটি স্পন্ডিলাইটিসের মতো মনে হলেও এটি হার্ট ব্লকেজের লক্ষণ হতে পারে।
৩। অকারণ শ্বাসকষ্ট ও ক্লান্তি
শুয়ে বাপসে বিশ্রাম নেয়ার সময় দমবন্ধ ভাব, হালকা কাজেও ক্লান্ত হয়ে পড়া, শরীর ঝিমঝিম করা, বারবার বিশ্রামের প্রয়োজন মণে হওয়া ইত্যাদি লক্ষণগুলো মানে শরীর ঠিকঠাক রক্ত পাচ্ছে না, যা হার্ট ব্লকেজের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এই ধরনের লক্ষণগুলি দেখা দিলে সত্বর ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরী।


