আয়ুর্বেদ শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে শারীরিক সমস্যা দূর করতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই আয়ুর্বেদিক ভেষজগুলি বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করে।

আমরা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে আয়ুর্বেদের কাজ করে চলেছে শারীরিক সমস্যা দূর করতে। মানব শরীরকে রোগ থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। আপনি যদি নিজেকে সুস্থ ও টেনশন মুক্ত রাখতে চান, তাহলে আপনি আয়ুর্বেদীয় ভেষজ ওষুধ খেতে পারেন। আজ আমরা আপনাকে এমনই ৫ টা শক্তিশালী আয়ুর্বেদিক ভেষজ সম্পর্কে বলতে যাচ্ছি যেগুলিকে ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করে অনেক রোগকে নিজের থেকে দূরে রাখতে পারেন।

১) নিম

নিম অনেক ধরনের রোগ নিমূর্লে ব্যবহৃত হয়। নিম আয়ুর্বেদ ফর্মুলেশনের প্রায় ৭৫ শতাংশ অংশ জুড়ে রয়েছে। এতে অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা শরীর থেকে টক্সিন দূর করে এবং ব্রণ, একজিমা এবং চর্মরোগ থেকে মুক্তি দেয়। মুখের স্বাস্থ্য, চুলের যত্নে নিম অনন্য। ৪-৫ টি নিম পাতা খালি পেটে চিবিয়ে খান। আপনি যদি এর তিক্ত স্বাদ কমাতে চান তবে আপনি এই পাতাগুলি মধুর সঙ্গে খেতে পারেন। জলে নিম পাতা ফুটিয়ে নিয়ে খালি পেটে পান করতে পারেন। নিম পাতার পেস্ট চুল ও ত্বকের জন্য উপকারী।

২) অশ্বগন্ধা

অশ্বগন্ধা অনেক স্বাস্থ্য সমস্যা নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়। এটি যৌন স্বাস্থ্য এবং স্নায়ুতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে খুবই উপকারী। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। এর ব্যবহার মানসিক চাপ দূর করে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়ায়। অশ্বগন্ধা ঘুমের ধরণ উন্নত করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ করে। অশ্বগন্ধা পাউডার, ট্যাবলেট বা নির্যাস হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। আপনি খাবারের সঙ্গে বা খাওয়ার আগে যে কোনও সময় এটি খেতে পারেন।

৩) ব্রাহ্মী

ব্রাহ্মী স্নায়ুজনিত রোগ নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়। এতে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়, যা স্মৃতিশক্তি, একাগ্রতা বাড়ায় এবং মনকে তীক্ষ্ণ করে তোলে। টেনশন ও হতাশা দূর করে মনকে শান্ত করতে কাজ করে। এর ব্যবহার স্নায়ুতন্ত্রের কার্যক্ষমতা উন্নত করে। এটি মস্তিষ্কের জন্য টনিকের চেয়ে কম কিছু নয়। রক্ত পরিষ্কার করে এবং ত্বক ও চুলের উপকার করে। ঘি বা মধুর সঙ্গে মিশিয়ে ব্রাহ্মী খেতে পারেন। এর পাতা সিদ্ধ করেও ব্যবহার করা যায়। দুধের সঙ্গে বা দুপুরে খাওয়ার আগে বা পরে খাওয়া যেতে পারে।

৪) শতবরী

শাতাভারিতে পাওয়া যায় স্যাপোনিন, ভেষজের রানী, যা এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য তৈরি করে। এর ব্যবহারে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয় এবং মহিলারা গর্ভাবস্থায় উপকার পান। এটি পরিপাকতন্ত্রের জন্য একটি ওষুধের মতো কাজ করে। এটি শ্বাসকষ্ট কমাতে সহায়ক। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে এবং ত্বকের বার্ধক্য রোধে শতবরীর কোনও মিল নেই। শতবরী পাউডার জল, দুধ বা রসের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। এর বড়ি খালি পেটে বা খাওয়ার এক ঘণ্টা আগে খেতে পারেন।

৫) মঞ্জিষ্ঠা

মঞ্জিষ্ঠা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে। এটি লিভার, কিডনি এবং ত্বক পরিষ্কার করতে খুবই উপকারী। ব্রণ ও অ্যালার্জির সমস্যা এর ব্যবহারে শেষ হয়ে যায়। এটি স্মৃতিশক্তি বাড়াতে এবং শেখার ক্ষমতা বিকাশে কার্যকর। এটি দুপুরের খাবার এবং রাতের খাবারের পরে মধু বা জলের সঙ্গে খাওয়া যেতে পারে।