Tea vs Coffee: ভিন দেশী পানীয়, অথচ বাঙালির রন্ধ্রে রন্ধ্রে রয়েছে চায়ের প্রতি ভালোবাসা। সাথে বিশ্বযুড়ে জনপ্রিয় কফিও। তবে প্রশ্ন একটাই, এই ভালোবাসা ক্ষতিকর নয় তো? কফি বা চা কতটা পান করা নিরাপদ, কিভাবেই বা ক্ষতি হতে পারে?
Tea vs Coffee: সকালের ঘুম ভাঙা থেকে শুরু করে সন্ধ্যের ক্লান্তি মেটানো—চা এবং কফি বাঙালির প্রতিদিনের জীবনের অঙ্গ। কেউ চায়ে দিন শুরু করেন, কেউ আবার কফির গন্ধেই খুঁজে পান অনুপ্রেরণা। এই দুই পানীয়ই ক্যাফিনসমৃদ্ধ এবং উভয়েরই রয়েছে স্বাস্থ্য উপকারিতা ও কিছু ঝুঁকি। কিন্তু কোনটা কতটা উপকারী? আর কোন অবস্থায়, কতটা খেলে সমস্যা তৈরি হতে পারে?
এই প্রতিবেদনে আমরা বিশ্লেষণ করব চা ও কফির উপকারিতা, ক্ষতিকর দিক ইত্যাদি বিস্তারিত।
চা
তৃতীয় শতাব্দীতে চীনা চিকিৎসক হুয়া তাও তাঁর গ্রন্থে প্রথমবার চায়ের উল্লেখ করেন। পর্তুগিজ পাদ্রী ও বণিকদের হাত ধরেই ইউরোপে পৌঁছয় এই সুগন্ধি পানীয়। বাড়তি জনপ্রিয়তার জন্য ব্রিটিশরা চায়ের বাণিজ্যিকীকরণে মন দেয়। ভারতে ব্যাপক হারে চা রোপণ শুরু করে তারা।
চায়ের উপকারিতা:
* চায়ে থাকা পলিফেনলস অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে * হৃদরোগ, স্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমায় * রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে * ত্বক ও মুখের ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে * অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম উন্নত করে, ফলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে * চায়ে থাকা ভিটামিন ও খনিজ হাড়কে মজবুত রাখে, সুস্থ রাখবে আপনাকে।
চা খাওয়ার ঝুঁকি ও সীমাবদ্ধতা:
* উচ্চ মাত্রায় ক্যাফিন থাকায় কিছু ক্ষেত্রে উদ্বেগ, মাথা ঘোরা, ঘুমে ব্যাঘাত এবং বুকজ্বালা ভাব দেখা দিতে পারে। * উচ্চতাপে বারবার চা ফুটিয়ে খেলে মুখ ও খাদ্যনালীর ক্ষতি হতে পারে। ক্যান্সারের ঝুঁকিও হতে পারে। * গর্ভাবস্থায় উচ্চ মাত্রায় ক্যাফিন গর্ভপাত ঘটতে পারে। আবার জন্মের সময় শিশুর ওজন খুব কমেও যেতে পারে। * ব্ল্যাক টিতে বেশি অক্সালেট থাকে, ফলে কিডনিতে পাথর হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। নচড-১ স্ট্যাট পাথওয়ে কিডনি থেকে অ্যালবুমিন লিকেজ আটকায়। * এছাড়াও টি ব্যাগের প্লাস্টিক উপাদান থেকে মাইক্রোপ্লাস্টিক শরীরে কোষে জমা হতে থাকে, যা অঙ্গগুলির ক্ষতি করতে পারে।

কতটা চা খাওয়া যেতে পারে?
দিনে ১-২ কাপ চা উপকারী, কিন্তু দিনে ৩.৫ কাপের বেশি চা পান বিপজ্জনক। গবেষণা অনুযায়ী চায়ে চিনি যোগ করে পান একেবারে উচিত নয়, এতে চায়ের গুণ অনেকটা নষ্ট হয়ে যায়, উচ্চ ক্যালোরি থাকে। বরং তাতে ডায়াবেটিস মাথাচাড়া দিতে পারে।
কফি
চায়ের তুলনায় কফির ইতিহাস কিছুটা ভিন্ন হলেও এর ব্যবহার আজ বিশ্বজুড়ে। অফিসের ক্লান্তি হোক বা ঘুমহীন রাত—টেবিলে কফি থাকবেই। তবে কতটা পরিমাণ কফি পান করা নিরাপদ?
কফির উপকারিতা :
* কফির মধ্যে ক্যাফেইন, ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান থাকে, যা নিয়মিত পান স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। * কফি ডায়াবেটিস ও ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে। * ওরাল আলসার, প্রস্টেট ক্যান্সার, লিভার ক্যান্সার, ফ্যাটি লিভার ডিজিজ, লিভার সিরোসিসের আশঙ্কা কমাতে সক্ষম। * অ্যালঝাইমার্স, ডিপ্রেশন অর্থাৎ অবসাদ কমাতে সহায়ক। * এটি ওজন কমাতে ও মেদ ঝরাতে সাহায্য করে, বিপাকীয় হার বাড়াতেও সাহায্য করে কফি। * কফিতে উপস্থিত অ্যান্টি অক্সিডেন্ট শরীরের জন্য খুবই উপকারী।

কফির অপকারিতা
* অতিরিক্ত কফি খেলে ঘুম কমে যায়, ফলে মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকে। * পেট খারাপ, গ্যাস, অম্বল, বুকজ্বালা ইত্যাদি সমস্যা হয়, পাকস্থলীরও ক্ষতি করে। * অতিরিক্ত কফি পান শরীরে রক্তচাপ, হার্টরেটও বাড়িয়ে দেয়। * কিডনির স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা কমায়। * অতিরিক্ত কফি পান সন্তান প্রসবে সমস্যা তৈরি করে। * হাড়ের স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি করে।
কতটা কফি খাওয়া যেতে পারে?
দিনে তিন থেকে পাঁচ কাপ অর্থাৎ ২০০-৩৬০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত কফি খাওয়া যেতে পারে। তবে দুধ, ক্রিম, চিনি ছাড়া বা কম দিয়ে ব্ল্যাক কফি বা ফিল্টার কফি পান করাই ভালো।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।


