প্যারেন্টিং টিপস: এক থেকে পনেরো বছর বয়সী শিশুদের বয়স অনুযায়ী ওজন এবং উচ্চতা কত হওয়া উচিত তা এই পোস্টে জানুন।
প্রতিটি অভিভাবক তাদের সন্তানের বিকাশে সর্বাধিক মনোযোগ দেন। তাদের সন্তানদের সুন্দরভাবে লালন-পালন করাই অধিকাংশ অভিভাবকের লক্ষ্য। এর জন্য তারা তাদের শারীরিক পরিশ্রম এবং আনন্দকেও ত্যাগ করতে প্রস্তুত। এমন যত্নশীল অভিভাবকদেরও উদ্বেগ থাকে। অর্থাৎ, তাদের সন্তানরা কি বয়স অনুযায়ী বিকাশ লাভ করছে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে এই পোস্টটি পড়ুন।
আপনার সন্তান যদি তাদের বয়স অনুযায়ী উচ্চতা এবং ওজনে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে তারা সঠিক বিকাশে রয়েছে। তারা সঠিক পুষ্টি পাচ্ছে বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে। প্রতিটি অভিভাবকেরই খেয়াল রাখা উচিত যে তাদের সন্তান কি স্বাস্থ্যকর খাবার পাচ্ছে? আপনার সন্তান যদি পুষ্টিকর খাবার এড়িয়ে শুধুমাত্র ফাস্টফুড বা জাঙ্কফুড বেশি খায়, তাহলে তারা প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাবে না। বিকাশ ব্যাহত হবে। এটি তাদের উচ্চতা এবং ওজন বৃদ্ধিতে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। আপনি যখন সঠিক সময়ে সন্তানকে স্বাস্থ্যকর খাবার খাইয়ে লালন-পালন করবেন, তখন বিকাশও স্বাস্থ্যকর হবে। এটি নিশ্চিত করতে মাঝে মাঝে তাদের ওজন এবং উচ্চতা পরিমাপ করুন।
আপনার বাড়িতে তাদের উচ্চতা প্রতিটি বয়স অনুযায়ী পরিমাপ করে দেয়ালে চিহ্নিত করে রাখুন। এভাবে পরিমাপ করার মাধ্যমে তাদের বয়স অনুযায়ী উচ্চতা এবং ওজন বৃদ্ধি ধাপে ধাপে পর্যবেক্ষণ করা যাবে। আপনার সন্তান যদি বয়স অনুযায়ী বৃদ্ধি না পায়, তাহলে তার সমস্যা কী তা জানা জরুরি। ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়ে সঠিক পরামর্শ নেওয়া উচিত।
বয়স অনুযায়ী শিশুর উচ্চতা, ওজন:
এক বছর:
আপনার সন্তানের এক বছর বয়স হলে ৯.২ কেজি ওজন হওয়া উচিত। ২৯.২ ইঞ্চি উচ্চতা থাকা জরুরি।
দুই বছর:
আপনার সন্তানের ২ বছর বয়স হলে ১২ কেজি ওজন এবং ৩৩.৫ ইঞ্চি উচ্চতা হওয়া উচিত।
তিন বছর:
তিন বছর বয়সী শিশুর প্রায় ১৪.২ কেজি ওজন হওয়া ভালো। ৩৭ ইঞ্চি উচ্চতা থাকলে ভালো।
চার বছর:
চার বছর বয়স হলে ১৫.৪ কেজি ওজন এবং ৩৯.৫ ইঞ্চি উচ্চতা হওয়া উচিত।
পাঁচ বছর:
আপনার সন্তানের ৫ বছর বয়স হলে ১৭.৯ কেজি ওজন এবং ৪২.৫ ইঞ্চি উচ্চতা হওয়া উচিত।
ছয় বছর:
আপনার সন্তানের ৬ বছর বয়স হলে ১৯.৯ কেজি ওজন এবং ৪৫.৫ ইঞ্চি উচ্চতা হওয়া উচিত।
সাত বছর:
সাত বছর বয়স হলে ২২.৪ কেজি ওজন এবং ৪৭.৭ ইঞ্চি উচ্চতা হওয়া উচিত।
আট বছর:
শিশুর ৮ বছর বয়স হলে ২৫.৮ কেজি ওজন এবং ৫০.৫ ইঞ্চি উচ্চতা থাকলে স্বাস্থ্যকর।
নয় বছর:
শিশুদের ৯ বছর বয়স হলে ২৮.১ কেজি ওজন হওয়া উচিত। ৫২.৫ ইঞ্চি উচ্চতা থাকা ভালো।
দশ বছর:
দশ বছর বয়সে শিশুদের ৩১.৯ কেজি ওজন হওয়া উচিত। উচ্চতা ৫৪.৫ ইঞ্চি থাকা ভালো।
এগারো বছর:
১১ বছর বয়সে ৩৬.৯ কেজি ওজন এবং ৫৬.৭ ইঞ্চি উচ্চতা হওয়া উচিত।
বারো বছর:
বারো বছর বয়সে শিশুদের ৪১.৫ কেজি ওজন হওয়া উচিত। উচ্চতা ৫৯.০ ইঞ্চি হওয়া উচিত।
তেরো বছর:
এই বয়সে ৪৫.৮ কেজি ওজন এবং ৬১.৭ ইঞ্চি উচ্চতা হওয়া উচিত।
১৪ এবং ১৫ বছর:
চৌদ্দ বছরে ৪৭.৬ কেজি ওজন এবং ৬২.৫ ইঞ্চি উচ্চতা, পনেরো বছর বয়সে শিশুর ৫৩.৫ কেজি ওজন এবং ৬৪.০ ইঞ্চি উচ্চতা হওয়া উচিত।
ওজন, উচ্চতায় কেন পরিবর্তন আসে?
বয়স অনুযায়ী ওজন, উচ্চতা বৃদ্ধি পেওয়া উচিত। এর জন্য শিশুদের ভালো পুষ্টিকর খাবার পাওয়া উচিত। কারণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাবারই বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শিশুদের খনিজ, প্রোটিন, ভিটামিন, ফাইবার ইত্যাদি সমৃদ্ধ সুষম খাবার দেওয়া উচিত। এটিই তাদের শারীরিক এবং মানসিক বিকাশ ঘটাবে।
শিশুদের স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া যতটা জরুরি, ততটাই জরুরি অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলা। শিশুদের বিকাশের উন্নতি এবং তাদের ওজন ও উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য ভালো খাবার এবং শারীরিক কার্যকলাপ অপরিহার্য। অর্থাৎ খেলাধুলা, ব্যায়াম জরুরি। কিছু শিশুর বংশগত বৈশিষ্ট্যের (জিনের ভিত্তিতে) কারণে তাদের বিকাশ বেশি হবে না। এ নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
