Health News: বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার গড় পরিমাণ (পিএম ২.৫)-এর মাত্রা এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে তার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে চোখে। শ্বাসজনিত সমস্যা, সর্দিকাশি, হাঁপানি এমনকি চোখের সমস্যাও বাড়ছে এই সময়ে।

Health News: বায়ু দূষণ, চোখের সংক্রমণ, বিশেষত কনজাঙ্কটিভাইটিস (Conjunctivitis) বা চোখ ওঠা, এবং অন্যান্য চোখের সমস্যা যেমন দৃষ্টি ঝাপসা হওয়া ও জ্বালাপোড়ার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়িয়ে তোলে, কারণ দূষণের রাসায়নিক কণা ও ধুলো সরাসরি চোখে প্রদাহ সৃষ্টি করে, যা সংক্রমণ ও অস্বস্তির কারণ হয়।

বায়ুদূষণ থেকে কী কী রোগ হতে পারে?

বায়ুদূষণ শুধু ফুসফুসের নয়, চোখেরও ক্ষতি করে। বাতাসে ভাসমান ক্ষতিকর রাসায়নিক ও ধূলিকণা চোখের জন্য খুবই খারাপ। সাম্প্রতি ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন’ (এনসিবিআই) এক গবেষণায় দাবি করেছে, বায়ুদূষণ যেমন হার্টের রোগ, ফুসফুসের ক্যানসারের জন্য দায়ী, তেমনি অন্ধত্বের কারণও হতে পারে দূষণই।

দিল্লি শুধু নয়, এই সময়টাতে সার্বিক ভাবেই বাতাসের গুণগত মান অনেক নেমে যায়। বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার গড় পরিমাণ (পিএম ২.৫)-এর মাত্রা এতটাই বেড়ে যায় যে তার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে শরীরে। বাইরে বেশি ক্ষণ থাকলেই চোখে জ্বালা হয়, অনবরত চোখ দিয়ে জল পড়ে। অনেকের আবার কনজাঙ্কটিভাইটিসের সমস্যাও দেখা দেয়।

গবেষকেরা জানাচ্ছেন, বাতাসে ভাসমান দূষণবাহী কণায় ভর করে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে বহুদূর। খুব বেশি ধুলোধোঁয়া আছে, এমন জায়গায় বেশি ক্ষণ থাকলে যেমন ফুসফুস আক্রান্ত হতে পারে, তেমনই ক্ষতি হতে পারে চোখের কনজাঙ্কটিভারও। বাতাসের কণায় ভর করে ভেসে বেড়ায় অনেক ভাইরাস, যার মধ্যে শক্তিশালী অ্যাডিনোভাইরাস চোখে সংক্রমণ ঘটায়। কর্নিয়ায় ছোট ছোট দানা তৈরি হয়। যার ফলে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায়, চোখ দিয়ে অনবরত জল পড়তে থাকে, আঠালো তরল বার হয়, পিচুটি জমে। যায়।

** দূষণ যেভাবে চোখকে প্রভাবিত করে:

* রাসায়নিক কণা ও ধোঁয়া: বায়ু দূষণকারী পদার্থ (যেমন PM2.5, সালফার ডাই অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড) চোখের সংস্পর্শে এলে জ্বালাপোড়া, লালভাব ও জল পড়ার কারণ হয়, যা কনজাঙ্কটিভাইটিসের মতো সংক্রমণের পথ খুলে দেয়।

* অ্যালার্জির কারণ: দূষণ অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া বাড়ায়, ফলে চোখ চুলকানো ও প্রদাহ বাড়ে, যা ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের সংক্রমণকে সহজ করে তোলে।

* শুষ্ক চোখ (Dry Eye): দূষণের কারণে চোখের জলীয় অংশ বাষ্পীভূত হয়ে যায়, ফলে চোখ শুষ্ক হয়ে পড়ে, যা অস্বস্তিকর এবং সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।

* দৃষ্টি ঝাপসা: চোখের উপরিভাগে প্রদাহ বা দূষণের কণা জমে থাকলে দৃষ্টি সাময়িকভাবে ঝাপসা হতে পারে।

বিষবাষ্পের প্রভাব:

বিষাক্ত গ্যাস বা বাষ্প (যেমন শিল্পের ধোঁয়া) সরাসরি চোখের সংবেদনশীল টিস্যুতে আঘাত করে, প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং চোখের স্বাভাবিক কার্যকারিতা ব্যাহত করে, যার ফলে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায় এবং সংক্রমণপ্রবণতা বাড়ে।

প্রতিরোধের উপায়:

* চশমা বা সানগ্লাস ব্যবহার: বাইরে বের হলে দূষণ থেকে চোখকে রক্ষা করতে সানগ্লাস বা চশমা পরুন।

* চোখ পরিষ্কার রাখা: চোখে ধুলো বা ময়লা লাগলে পরিষ্কার জল দিয়ে ধুয়ে নিন।

* হাত পরিষ্কার রাখা: চোখ স্পর্শ করার আগে অবশ্যই হাত ধুয়ে নিন।

* দূষণ এড়িয়ে চলা: অতিরিক্ত দূষণযুক্ত পরিবেশে (যেমন যানজটপূর্ণ রাস্তা, শিল্পাঞ্চল) অপ্রয়োজনে ঘোরাঘুরি এড়িয়ে চলুন।

* স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন: পর্যাপ্ত জল পান করুন এবং পুষ্টিকর খাবার খান।

সংক্ষেপে, দূষণ চোখের স্বাস্থ্যকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং কনজাঙ্কটিভাইটিস সহ নানাবিধ সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়। তাই, দূষণ নিয়ন্ত্রণে সচেতন হওয়া এবং চোখকে সুরক্ষিত রাখা অত্যন্ত জরুরি।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।