আপনার কি ঘন ঘন হাই ওঠে? এটি বিপদ সংকেত! জানুন কারণ ও প্রতিকার
অতিরিক্ত হাই ওঠা শুধু ঘুমের অভাব নয়, এটি হৃদরোগের পূর্বলক্ষণও হতে পারে। স্নায়ু জটিলতা, হৃৎপিণ্ডের সমস্যা বা স্ট্রোকের কারণেও ঘন ঘন হাই উঠতে পারে। তাই, এই লক্ষণটিকে অবহেলা না করে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
হাই কেন ওঠে তা নিয়ে এক একজনের এক একমন্তব্য শুনবেন। আপাতত জানতাম ঘুম পেলেই বোধহয় হাই ওঠে শুধু। কিন্তু জানেন কী, অতিরিক্ত হাই ওঠা মানে বিপদের সংকেত?
অফিসে বা বাড়িতে বসে, ভিড় বাসে-ট্রামে যাওয়ার সময়েও হাই তুলছেন। কোনো অনুষ্ঠানে বসে যথেষ্ট সক্রিয় মস্তিস্ক থাকলেও উঠছে হাই। ক্লান্তির লক্ষণ ভেবে এড়িয়ে যাচ্ছেন অনেকেই। কিন্তু জানেন কী, সকাল থেকে রাত অবধি হাই উঠতেই থাকা বা ঘন ঘন হাই তোলা হতে পারে হৃদ্রোগের পূর্বলক্ষণ!
‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ’ থেকে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে এমনটাই দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, শরীর অতিরিক্ত ক্লান্ত থাকলে বা ভাল ভাবে ঘুম না হলে ঘন ঘন হাই ওঠা স্বাভাবিক। তা ক্লান্তির জন্যই হয়। কিন্তু যদি ঠিকমতো বিশ্রাম নেওয়ার পরেও হাই উঠতেই থাকে তা হলে বুঝতে হবে শরীরে বাসা বাঁধছে গুরুতর সমস্যা।
কী কী কারণে ঘন ঘন হাই উঠতে পারে বলে জানাচ্ছেন গবেষকরা? গবেষকেরা বলছেন -
১. স্নায়ু সংক্রান্ত জটিলতা বাড়লে অতিরিক্ত হাই উঠতে পারে।
২. হৃৎপিণ্ডের আশপাশে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলেও হাই ওঠে।
৩. আবার যদি হৃদ্পেশির সঙ্কোচন ও প্রসারণে সমস্যা হয়, হৎস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে যায়, তখনও ঘন ঘন হাই উঠতে পারে।
৪. এমনকি এ-ও দেখা গিয়েছে, স্ট্রোকের আগে এবং পরে অস্বাভাবিক ভাবে হাই ওঠে অনেকের।
এই বিষয়ে চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার কিছু উপায় বাতলেছেন। তিনি বলছেন–
ক) মোটামুটি ২০-২৫ বছর বয়স থেকেই রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে কোলেস্টেরলের পরিমাণ নজরে রাখতে হবে।
খ) লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করে খুব সহজেই দেখা যেতে পারে কোলেস্টেরল স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কি না। পরিবারে কোলেস্টেরলের ইতিহাস না থাকলেও, ৩০-৩৫ বছর বয়স থেকে লিপিড প্রোফাইল স্ক্রিনিং করাতে হবে।
গ) বিশেষ করে রক্তচাপ বেশি থাকলে, উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে, দেরি করা ঠিক হবে না।
ঘ) বংশগত ভাবে যাঁদের পরিবারে হৃদ্রোগের ইতিহাস রয়েছে, তাঁদের আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে।
আসলে অনেকের কাছেই হৃদরোগ মানে বুকে ব্যথা, মাথা ঘোরা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গই দেখা দেবে। কিন্তু ছোটখাটো এমন আরও লক্ষণ আছে, যেগুলি এড়িয়ে যান সকলেই।
পরে সেটিই বিপদের কারণ হয়ে ওঠে। বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে, ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সিরাই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি। ।
হার্টের ধমনী অর্থাৎ করোনারি আর্টারি ব্লক হয়ে গিয়ে আচমকা হার্ট অ্যাটাকে বিপদও ঘটছে অনেক। তাই শরীর ক্লান্ত না থাকলেও যদি হাই তোলার সমস্যা থাকে, তা হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত

