সংক্ষিপ্ত

ভারতে মূলত করোনাভাইরাসের JN.1 উপ-ভেরিয়েন্টের মাধ্যমে সংক্রমিতদের সংখ্যাই বৃদ্ধি পেয়েছে।বেঙ্গালুরুর মণিপাল হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বাসবরাজ কুন্তোজি এই বিষয়ে সতর্ক করেছেন। তিনি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে সতর্ক থাকতেও পরামর্শ দিয়েছেন।

 

নতুন করে দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞদের কথায় ভারতে মূলত করোনাভাইরাসের JN.1 উপ-ভেরিয়েন্টের মাধ্যমে সংক্রমিতদের সংখ্যাই বৃদ্ধি পেয়েছে। কর্ণাটক, কেরল-সহ একাধিক রাজ্যেই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এই ভাইরাস কতটা মারাত্মক বা ক্ষতিকারক তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বেঙ্গালুরুর মণিপাল হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বাসবরাজ কুন্তোজি এই বিষয়ে সতর্ক করেছেন। তিনি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে সতর্ক থাকতেও পরামর্শ দিয়েছেন।

করোনাভাইরাসের JN.1 উপ-ভেরিয়েন্ট থেকে সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে ৬০ বা তারও বেশি বছর বয়সীদের। যাদের কিডনি, হার্ট ও লিভারের অসুস্থতা রয়েছে তাদেরও এই ভাইরাস থেকে সাবধানে থাকা জরুরি। সংশ্লিষ্টদের মাস্ক ব্যবহার ও নিরাপদ দূরত্ব মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি যেসব ব্যক্তিরা জ্বর,সর্দি, কাশি-র সমস্যায় ভুগছেন তারা যেন দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেন - তারই নির্দেশিকা জারি করেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রকও করোনাভাইরাসের JN.1 উপ-ভেরিয়েন্ট নিয়ে ইতিমধ্যেই সতর্কতা জারি করেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডব্য বুধবার রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে একটি বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছেন। সেখানেই সারা দেশের কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে বলে কেন্দ্র সূত্রের খবর। ইতিমধ্যেই কেরলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। ১-১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে কেরলেই শুধুমাত্র ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে এক সপ্তাহের মধ্যে দৈনিক রিপোর্ট তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

JN.1 ভেরিয়েন্ট সম্পর্কে আরও জানতে বেঙ্গালুরুর মল্লেশ্বরামের মণিপাল হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিনের পরামর্শক ডাঃ বাসভরাজ কুন্তোজির সাথে যোগাযোগ করেছে এশিয়ানেট নিউজ নেটওয়ার্ক। তিনি এই বিষয়ে একটি স্পষ্ট ধারনা দিয়েছেন।

COVID-19 কি একটি নতুন রূপ নিয়ে ফিরে এসেছে?

এই প্রশ্নের উত্তরে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জানিয়েছেন, হ্যাঁ। গত ১০-১৫ দিনে কোভিড -১৯ আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। পূর্ববর্তী ইন্টারস্টিশিয়াল ফুলফুসের রোগ একজন বয়স্ক পুরুষ কোভিড-১৯ পজেটিভ ছিলেন। তাঁরে ভর্তি করা হয়েছিল আইসিইউতে। সেখানেই ধরা পড়ে তাঁর ৭০-৮০ শতাংশ অক্সিজেনের ঘাটতি। যা স্পষ্ট করে দেয় করোনার মারাত্মক অবস্থাকে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আরও জানিয়েছেন আরও একজন বয়স্ক ব্যক্তিকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে।

নতুন COVID ভেরিয়েন্ট কি উদ্বেগের কারণ?

এই প্রশ্নের উত্তরে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেছেন, এখনও বলার সময় আসেনি এই ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত রোগীরা ঠিক কেমন আচরণ করবে। যদিও মনে করা হচ্ছে কিছু রোগীর পরিস্থিতি জটিল হতে পারে। তবে বয়স্ক আক্রান্তদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে।

আগে গুরুতর COVID বা দীর্ঘ কোভিড দ্বারা প্রভাবিত ব্যক্তিদের জন্য কি বিশেষ বিবেচনা আছে?

যদি ব্যক্তিরা পূর্ববর্তী COVID-19 সংক্রমণ থেকে সম্পূর্ণরূপে সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক স্বাস্থ্যে ফিরে আসেন, তবে তাদের ক্ষেত্রে তেমন উদ্বেগের কিছু নেই বলেও আশ্বস্ত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে সতর্ক থাকার প্রয়োজন রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

তবে বিশেষজ্ঞদের কথায় বয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রে বেশি সাবধানতার প্রয়োজন রয়েছে। তবে শিশু ও প্রাপ্ত বয়স্ক নাগরিকদের বিশেষ যত্নের প্রয়োজন।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আরও বলেছেন, যেহেতু ইতিমধ্যেই আমরা কোভিড-১৯ এর বিভিন্ন পর্যায় পার হয়ে এসেছি, সেই কারণে শিশু ও প্রাপ্ত বয়স্করা এই ভেরিয়েন্ট ভালোভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম বলেও দাবি করেছেন। তারা হালকাভাাবেই করোনার লক্ষণগুলি অনুভব করবে। অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই তারা সুস্থ হয়ে যাবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। প্রবীণ নাগরিকদের জন্য এটি গুরুতর হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

COVID-19-এর উপসর্গের প্রাথমিক চিকিৎসা পদ্ধতি কী?

প্রাথমিক উপসর্গ হল- জ্বর, সর্দি,কাশি, গলা ব্যাথা। অনেকটাই ইনফ্লুয়েঞ্জার মত অবস্থা তৈরি করবে। অনেক সময় এটি কোভিড হতে পারে। স্ট্যান্ডার্ড সতর্কতা হিসেবে জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল খেতে পারেন। তবে দুই দিন পরেও যদি এজাতীয় লক্ষণ থাকে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যান্ত জরুরি। আতঙ্কিত হওয়ার মত কোনও ব্যাপার নেই। এটি ভাইরাস জ্বরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। তবে সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।