সংক্ষিপ্ত
কোনও কারণ ছাড়াই বারবার আল্ট্রাসাউন্ড করালে শিশুর ক্ষতি হতে পারে। তার হাড় ও মস্তিষ্ক আক্রান্ত হতে পারে। জেনে নিন কখন করতে হবে...
Health Tips: গর্ভাবস্থা একটি সংবেদনশীল পর্যায় যেখানে মা এবং শিশুর স্বাস্থ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষা গর্ভাবস্থায় মা এবং শিশুর অবস্থা ট্র্যাক করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আল্ট্রাসাউন্ড শরীরের ভিতরে রশ্মি পাঠিয়ে জরায়ু এবং ভ্রূণের ছবি নেয়। এটি নাভির অবস্থা, ভ্রূণের বিকাশ, হৃদস্পন্দন ইত্যাদি দেখতে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় কমপক্ষে ৩-৪ বার আল্ট্রাসাউন্ড করা প্রয়োজন। কিন্তু এর চেয়ে বেশি আল্ট্রাসাউন্ড করাটা ঠিক বলে মনে করা হয় না। কোনও কারণ ছাড়াই বারবার আল্ট্রাসাউন্ড করালে শিশুর ক্ষতি হতে পারে। তার হাড় ও মস্তিষ্ক আক্রান্ত হতে পারে। জেনে নিন কখন করতে হবে...
প্রথম আল্ট্রাসাউন্ড:
গর্ভাবস্থায় করা প্রথম আল্ট্রাসাউন্ড খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত, ডাক্তাররা গর্ভধারণের ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ পরে প্রথম আল্ট্রাসাউন্ড করার পরামর্শ দেন। এই আল্ট্রাসাউন্ডের মূল উদ্দেশ্য হল ফ্যালোপিয়ান টিউব এবং ভ্রূণের অবস্থা পরীক্ষা করা। এতে ফ্যালোপিয়ান টিউব সঠিক জায়গায় আছে কি না, ভ্রূণের বিকাশ ঠিক মতো হচ্ছে কি না, ভ্রূণের হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক আছে কি না ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়। কোনও সমস্যা হলে আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে তা শনাক্ত করা যায় এবং যথাযথ চিকিৎসা করা যায়। অতএব, গর্ভাবস্থার প্রথম ত্রৈমাসিকে আল্ট্রাসাউন্ড করানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
দ্বিতীয় আল্ট্রাসাউন্ড:
গর্ভাবস্থার ১৮ থেকে ২০ সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় আল্ট্রাসাউন্ড করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়কালে, ভ্রূণের শারীরিক বিকাশ দ্রুত ঘটে এবং শরীরের অঙ্গগুলি স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হয়। দ্বিতীয় আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে ভ্রূণের প্রধান অঙ্গ যেমন হার্ট, মস্তিষ্ক, কিডনি ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়। এর মাধ্যমে, শারীরবৃত্তীয় অসঙ্গতিগুলি অর্থাৎ জন্মগত ব্যাধিগুলিও সনাক্ত করা যায়।
তৃতীয় আল্ট্রাসাউন্ড:
গর্ভাবস্থার ২৮ থেকে ৩২ সপ্তাহের মধ্যে তৃতীয় আল্ট্রাসাউন্ড খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এটি গর্ভাবস্থার তৃতীয় ত্রৈমাসিক যখন ভ্রূণ দ্রুত বিকাশ শুরু করে। তৃতীয় আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে ভ্রূণের শারীরিক বিকাশ ও ওজন পর্যবেক্ষণ করা যায়। বয়স অনুযায়ী শিশুর ওজন ঠিক আছে কি না তা পরীক্ষা করা হয়। শিশুর প্রধান অঙ্গ যেমন মস্তিষ্ক, হৃদপিন্ড, কিডনি ইত্যাদি সঠিকভাবে বিকশিত হচ্ছে কি না।
চতুর্থ আল্ট্রাসাউন্ড:
চতুর্থ আল্ট্রাসাউন্ডটি গর্ভাবস্থার ৩৪ থেকে ৩৬ সপ্তাহের মধ্যে করা হয়। এটি গর্ভাবস্থার শেষ পর্যায় যখন প্রসবের সময় ঘনিয়ে আসে। চতুর্থ আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে ভ্রূণের অবস্থা এবং প্ল্যাসেন্টার অবস্থা পরীক্ষা করা হয়। দেখা হয় শিশুটি সঠিক অবস্থানে আছে কি না। প্লাসেন্টার অবস্থা কী এবং পর্যাপ্ত রক্ত সঞ্চালন হচ্ছে কি না। এর মাধ্যমে প্রসবের আগে যে কোনও জটিলতা শনাক্ত করা যায় এবং সময় মতো চিকিৎসা করা যায়। এইভাবে শেষ আল্ট্রাসাউন্ড খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।