বৃষ্টির সময় ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া এবং চিকুনগুনিয়ার মতো মশা-বাহিত রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এই তিনটি রোগের মধ্যে পার্থক্য বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। ডেঙ্গু একটি ভাইরাল সংক্রমণ যা উচ্চ জ্বর এবং ফ্লুর মতো লক্ষণ দেখা দেয়।
বৃষ্টি হলে মশা দ্বারা সৃষ্ট রোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। অতিবৃষ্টি, জলবদ্ধতা এবং বন্যার মতো পরিস্থিতিতে মশার লার্ভা বেড়ে ওঠার সুযোগ পায় এবং বর্ষা এবং তার পরের মাসগুলিতে ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়া এবং চিকুনগুনিয়ার মতো রোগে আক্রান্তের পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদন অনুসারে, জুলাইয়ের প্রথম ১০ দিনে দিল্লি-এনসিআরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। চিকিৎসকের মতে, ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়া বা চিকুনগুনিয়া খুবই বিপজ্জনক এবং প্রতি বছর এদের কারণে বহু মানুষ মারা যায়। সেজন্য তাদের এড়াতে মনোযোগ দেওয়া উচিত। শুধুমাত্র এই তিনটি রোগ বোঝার মাধ্যমে কার্যকরভাবে প্রতিরোধ করা সম্ভব। আসুন জেনে নিই তিনটির মধ্যে পার্থক্য...
ডেঙ্গু-
ডেঙ্গু ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট একটি ভাইরাল সংক্রমণ। এই ভাইরাসে আক্রান্ত মশা দিনে বেশি কামড়ায়। তাই মানুষকে ফুল হাতা পোশাক পরার পরামর্শ দেওয়া হয়। হালকা ডেঙ্গু উচ্চ জ্বর এবং ফ্লুর মতো উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে। গুরুতর ক্ষেত্রে, রক্তপাত, নিম্ন রক্তচাপ এমনকী মৃত্যুও হতে পারে। ডেঙ্গু জ্বরের কারণে রক্তে প্লেটলেটের পরিমাণ দ্রুত হ্রাস পায়। সবচেয়ে বড় কথা হলো আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসলে ডেঙ্গু জ্বর হয় না। এ থেকে বাঁচতে হলে মশাকে এড়িয়ে চলতে হবে।
ম্যালেরিয়া-
ম্যালেরিয়াও ডেঙ্গুর মতো বিপজ্জনক। এই রোগটি পরজীবী দ্বারা হয়। প্যারাসাইট সংক্রমিত মশার কামড়ে ম্যালেরিয়া হয়। ম্যালেরিয়ায় প্রচণ্ড জ্বর ও কাঁপুনি দিয়ে ঠান্ডা লাগে। ম্যালেরিয়াও মারাত্মক হতে পারে। এর কারণে ফুসফুসে তরল জমা হতে পারে, যার কারণে শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়। অনেক সময় ম্যালেরিয়া কিডনি-লিভারেরও ক্ষতি করতে পারে। তবে ওষুধ দিয়ে এই রোগ নিরাময় করা যায়।
চিকুনগুনিয়া-
চিকুনগুনিয়াও মশা দ্বারা সৃষ্ট একটি রোগ। এটি চিকুনগুনিয়া ভাইরাস (CHIKV) দ্বারা ছড়ায়। এর প্রথম লক্ষণ হল জ্বর এবং ত্বকে ফুসকুড়ি। জ্বর হঠাৎ আসে এবং খুব দ্রুত বাড়তে থাকে। এর পাশাপাশি জয়েন্টে ব্যথা, মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব এবং বমির মতো সমস্যাও হতে পারে। চিকুনগুনিয়ার জন্য কোনও নির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ নেই। এটি মশা দ্বারা সৃষ্ট অন্যান্য রোগের মতো চিকিত্সা করা হয়। চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের প্রচুর জল ও তরল পান করার পরামর্শ দেওয়া হয়।


