কোন সময়টা সবচেয়ে বেশি উপযোগী পড়াশোনার জন্য রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে নাকি দিনের বেলা ঘুম থেকে উঠে জেনে নেওয়া যাক।

এক এক ব্যক্তির এক এক রকম শারীরিক ক্ষমতা থাকে। ঠিক তেমনই প্রত্যেকটা মানুষের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা আলাদা হয়। তবে সাধারণত দিনের বেলায় বা সকালে পড়াশোনা করলে ভালো ফল পাওয়া যায় তার কারণ এই সময় মস্তিষ্কের শেখার ক্ষমতা বেশি থাকে। অনেক রাতে পড়ার অভ্যাস থাকলে কিছু বিষয়ের জন্য এটি উপকারী হতে পারে হয়তো কিন্তু সঠিক পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম নিশ্চিত করা এবং দিনের বেলা মস্তিষ্কের বিশ্রাম দেওয়াও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তাই এখন এটা প্রশ্ন আসছে ঘুমোতে যাওয়ার আগে পড়া ভাল, না কি ঘুম ভাঙার পর পড়া উচিত? কোন সময়ে পড়াশোনা করলে মনে থাকে বেশি? সেক্ষেত্রে গবেষকেরা বলছেন, দু’ধরনের সময়ের আলাদা আলাদা উপকারিতা রয়েছে। আসুন দেখা যাক তাহলে:

সকালে পড়াশোনার সুবিধা কী কী হতে পারে সেবিষয়ে আলোচনা করা যাক। যেমন মস্তিষ্কের সতেজতা থাকে সকালে। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর মস্তিষ্ক থাকে সতেজ।যা নতুন তথ্য গ্রহণ এবং জটিল বিষয় বোঝার জন্য খুবই আদর্শ সময় বলে মনে করা হয়। এছাড়া বর্ধিত মনোযোগ মানে দিনের আলো মস্তিষ্কের সার্কাডিয়ান রিদম (circadian rhythm) বা দৈনিক ছন্দকে অনেকটাই উন্নত করে তোলে।ফলে মনোযোগ ধরে রাখা খুবই সহজ হয়। এছাড়া সকাল বেলা মস্তিষ্ক সতেজ হওয়ার কারণে তথ্য মনে রাখার ক্ষমতা ক্ষমতা অনেক প্রবল থাকে। সকালে শেখা বিষয়গুলো স্মৃতিতে দীর্ঘস্থায়ী হয়।তবে যদি রাতে ঘুম ভাল না হয়, তা হলে পড়া মাথায় ঢুকবে না। তা ছাড়া যাঁরা স্বভাবে নিশাচর, অর্থাৎ রাত জাগায় অভ্যস্ত, তাঁদের জন্য সকালের সময়টি উপযুক্ত না-ও হতে পারে। এ ছাড়া ঘুম থেকে পুরোপুরি জেগে উঠতে সময় লাগে অনেকের। সে ক্ষেত্রেও পড়ার বইয়ে গভীর ভাবে মনোযোগ দেওয়ার জন্য অনেকখানি সময় ব্যয় হয়ে যায়।

অন্যদিকে রাতে পড়াশোনার সুবিধা গুলি কি কি হতে পারে আসুন দেখে নেওয়া যাক। যেমন শান্ত পরিবেশ। রাতে নিরিবিলি পরিবেশে পড়াশোনার জন্য খুবই ভালো। যা মনোযোগ বৃদ্ধি করে। কিছু নির্দিষ্ট বিষয় আছে যেমন ইতিহাস বা দর্শনের মতো বিষয়গুলো রাতের শান্ত পরিবেশে ভালো মনে হতে পারে।ভালোভাবে মস্তিষ্কে ঢুকতে পারে। তবে কীভাবে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ানো যায় সেদিকেও আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। যেমন পর্যাপ্ত ঘুম খুবই প্রয়োজন। মস্তিষ্কের সঠিক কার্যকারিতার জন্য প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম অপরিহার্য। এছাড়া নিয়মিত বিরতি একটা পার্ট বলা যায়। একটানা দীর্ঘ সময় ধরে না পড়ে মাঝে মাঝে ছোট বিরতি নেওয়া দরকার, যা মস্তিষ্ককে পুনরায় সতেজ করতে সাহায্য করে। তাই পড়াশোনার জন্য একটি নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করুন এবং নিজের শরীরের চাহিদা অনুযায়ী নিজেকে সময় দিন ও সময় ঠিক করুন পড়াশোনার ।

পড়াশোনার জন্য সঠিক সময় নির্ভর করে আপনার ব্যক্তিগত মেজাজ এবং শরীরের চাহিদার উপর। আপনি কেমন নিতে পারছেন কেমন আপনার জন্য উপযোগী আপনি বুঝতে পারবেন বেশি। কারও জন্য সকালে পড়া ভালো, তো আবার কেউ রাতের শান্ত পরিবেশে বেশি মনোযোগ দিতে পারে। আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো সময় কোনটি, তা খুঁজে বের করতে উভয় সময়ই পড়াশোনা করে দেখতে পারেন যে কোন সময়টি আপনার জন্য উপযোগী।