কাজের চাপে বা অন্য কোনো কারণে দুপুরের খাবার এড়িয়ে যাওয়ার অভ্যাস স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এর ফলে শরীরে শক্তির অভাব, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, এবং মেটাবলিজম কমে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়।
বিভিন্ন কারণে মানুষ দুপুরের খাবার এড়িয়ে চলে। এর মধ্যে কাজের উৎসাহ এবং চাপের কারণে দুপুরের খাবার বাদ দেন এমন মানুষের সংখ্যা অনেক। এই অভ্যাস নিয়মিত চলতে থাকলে আপনার স্বাস্থ্যের উপর বড় ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে।
সকালের খাবার, যা 'ব্রেন ফুড' নামে পরিচিত, তা বাদ দিয়ে শুধু কফি বা চা পান করা এবং তারপর কাজে গিয়ে দুপুরের খাবারও এড়িয়ে যাওয়া একটি অত্যন্ত খারাপ অভ্যাস। এর ফলে আপনি হয়তো কর্মক্ষেত্রে একজন দক্ষ কর্মী হিসেবে পরিচিতি পেতে পারেন, কিন্তু স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে আপনি শূন্য হয়ে যাবেন। এই অভ্যাস চলতে থাকলে শরীর পর্যাপ্ত পুষ্টি পাবে না।
দুপুরের খাবার না খেলে...
সারাদিন সক্রিয় থাকার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি এবং মনোযোগের জন্য শরীরের শক্তির প্রয়োজন। এর জন্য সঠিক সময়ে খাওয়া দরকার। সঠিক সময়ে না খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যায়, যা আপনাকে দুর্বল করে তোলে। এর ফলে মাথা ঘোরা, বিরক্তি এবং মনোযোগের অভাব দেখা দিতে পারে। যারা সঠিক সময়ে খায় না, তাদের মধ্যে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। এর মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত রাগ, অলসতা, উদ্বেগ এবং সিদ্ধান্ত নিতে অসুবিধা। এর মূল কারণ হলো মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত শক্তির অভাব।
বিপদ
শরীর ঠিক রাখতে হরমোনের ভারসাম্য জরুরি। ঠিকমতো না খেলে হরমোনের নিঃসরণে ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্ট্রেস হরমোন কর্টিসলের মাত্রা বেড়ে গিয়ে আপনাকে উদ্বেগের মধ্যে রাখে। বিষণ্ণতা দেখা দিতে পারে। মেটাবলিজমও ধীর হয়ে যায়, যার ফলে ভবিষ্যতে অনেক রোগের শিকার হতে পারেন। হজমের সমস্যা, ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের মতো সমস্যার একটি কারণ হতে পারে সঠিক সময়ে না খাওয়া। এটি ফাস্ট ফুডের প্রতি আসক্তিও বাড়িয়ে তোলে।
কী করতে পারেন?
আগের দিন রাতেই পরের দিনের খাবারের পরিকল্পনা করে রাখুন। সম্ভব হলে তৈরি করেও রাখতে পারেন। অন্তত বাদাম, ফল বা স্মুদির মতো কিছু খান।
যদি দুপুরের খাবার খেতে দেরি হয় বা সময় না থাকে, তাহলে একমুঠো বাদাম বা কোনো ফল খেয়ে স্বাস্থ্যকর উপায়ে শক্তি অর্জন করুন। খালি পেটে চা বা কফি এড়িয়ে চলুন।
ক্লান্তির কারণ শুধু খিদে নয়, তৃষ্ণাও হতে পারে। প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন। সঠিক সময়ে খাবার গ্রহণ করলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে, যা কাজে মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে।
যত কাজই থাকুক না কেন, খেয়ে নিয়ে কাজ করা ভালো। আমরা বাঁচার জন্যই কাজ করি। তাই খেয়ে কাজ করাই যথেষ্ট।


