সংক্ষিপ্ত

  • কোলেস্টেরল মানেই খারাপ নয়
  • ভাল কোলেস্টেরলও থাকে শরীরে
  • বেশ কিছু জিনিস খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে
  • তাহলে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকবে

কোলেস্টেরল হল একধরনের মোমের মতো পদার্থ যা শরীরের প্রত্য়েকটা কোষে থাকে বলে রাখা ভাল, এটি শরীরে থাকা মানেই কিন্তু বিপদজনক নয় কারণ, এর কিছু প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে আমাদের কোষগুলির প্রাচীরে স্বাভাবিক কাজকর্ম বজায় রাখতে কিছু কোলেস্টরল দরকার হয় এছাড়া প্রোজেস্টেরন, টেস্টোস্টেরন, ইস্ট্রোজেনের মতো হর্মোনের তৈরি হওয়াতে কাজে লাগে এই কোলেস্টেরল

বাচ্চাদের মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষগুলির স্বাভাবিক বিকাশের জন্য় কোলেস্টেরল জরুরি এই কোলেস্টেরল দুরকমের খারাপ কোলেস্টেরল বা এলডিএল, অর্থাৎ লো ডেনসিটি লাইকো প্রোটিন আর গুড কোলেস্টেরল বা এইচডিএল, অর্থাৎ হাইডেনসিটি লাইকো প্রোটিন এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরল আর্টারিতে ব্লকেজ তৈরি করে আর ভাল কোলেস্টেরল বা এইচডিএল, আর্টারির ব্লকেজ হওয়া থেকে রক্ষা করে শরীরে ১০০ মিলিগ্রামের কম এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরল থাকলে কোনও ক্ষতি নেইকারণ এটা স্বাভাবিককিন্তু এর পরিমাণ যদি বেড়ে ১০০ থেকে ১২৯ মিলিগ্রামের ভেতর থাকে তাহলে স্বাভাবিকের থেকে একটু বেশি আর, ১৩০ থেকে ১৫৯ মিলিগ্রাম থাকলে তা বেশির দিকে বলে মনে করা হয়১৬০ থেকে ১৮৯ হলে তাকে বেশি বলে মনে করা হয়আর তা ১৯০ ছাড়িয়ে গেলে খুব বেশি বলে মনে করা হয়

এবার আসা যাক ভাল কোলেস্টেরলের কথায় ৪০ মিলিগ্রামের কম থাকলে তাকে প্রয়োজনের তুলনায় কম বলে মনে করা হয় আর ৬০মিলিগ্রাম বা তার বেশি থাকলে তাকে বেশি বলা হয়

সাধারণত, অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা স্ট্রেস, টেনশন, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস,  খুব বেশি চা-কফি খাওয়া, ধূমপান মদ্য়পান, পরিশ্রমহীনতা, জন্মগত কারণ বা বংশগত কারণ, হাইপোথাইরয়েড, নেফ্রোটিক সিনড্রোম, অ্য়াকিউট প্য়ানক্রিয়াটাইটিসের কারণে এই কোলেস্টরল  বাড়তে পারে এছাড়া বিটা-ব্লকার, জন্ম নিরোধক ওষুধ একটানা খেলেও রক্তে কোলেস্টেরল বাড়তে পারে

 

কোলেস্টেরল বাড়লে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে যেমন, মাখন, ঘি, মাছের মাথা, চিজ, ক্রিম, বাদাম, নারকেল, কাজুবাদাম খাদ্য়তালিকা থেকে বাদ দিতে হবেরিচফুড একেবারেই বন্ধ করতে হবেওজন ঠিক রাখতে হবেহাঁটা, জগিং, সুইমিং, ব্য়ায়াম করতে হবে নিয়ম করেস্ট্রেস, অ্য়াংজাইটি কমানোর জন্য মেডিটেশন করতে হবেআর মদ্য়পান বা ধূমপান  দুটোই নৈব নৈব চ  দোকতা, জর্দা, পানমশলা, গুটখা একদম বাদখাদ্য়তালিকা থেকে একেবারে বাদ দিতে হবে ট্রান্স ফ্য়াটকেএই ট্র্য়ান্সফ্য়াট খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়ভাল কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায়কাজেই বাদ দিতে হবে পেস্ট্রি, সল্টেড ফুড, ডিপ ফ্রাইড খাবারকারণ এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ট্রান্সফ্য়াট থাকে

অন্য়দিকে শরীরে ভাল কোলেস্টেরল বাড়াতে খেতে হবে  মাছের তেল, রাজমা, মেথি, মুগডাল, সবুজ শাকপাতা সেইসঙ্গে খেতে হবে সবজি আর ফলমূল   রান্নার তেল হিসেবে সরষের তেল খেতে পারেন মাথাপিছু দৈনিক চার থেকে ছ-চামচ স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড, মনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড,  পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ তিনরকম তেল মিশিয়ে খেতে হবে ১:১:১ হিসেবেএকজন মাসে ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত তেল খেতে পারেন এই অনুপাতে তবে তার বেশি নয়  ঘুরিযে ফিরিযে খেতে পারেন সরষের তেল, সয়াবিনের তেল, বাদাম তেল, তিল তেল এমনকি পরিমিত মাত্রায় ঘি-মাখনও অবশ্যই কোলেস্টেরেল মাত্রা সীমার ভেতর থাকলে, তবেই