আবর্জনা নেহাতই আবর্জনা নয়, অসাবধানতায় বা ভুল ভাবে ফেললে এ থেকে সংক্রমণ এবং বিস্ফোরণের ঝুঁকিও থাকতে পারে। তাই সচেতন থাকুন, জানুন সঠিকভাবে বর্জ্য নিষ্কাশনের উপায়।
ঘরের যেকোনো আবর্জনা ডাস্টবিনে ফেলে দিলেই বুঝি দায় শেষ। কিন্তু জানেন কি, এমন অনেক জিনিস রয়েছে যেগুলো খুব সাধারণ হলেও রান্নাঘরের ডাস্টবিনে ফেলা খুবই বিপজ্জনক হতে পারে? এসব বস্তু শুধু পরিবেশ দূষণই করে না, অনেক ক্ষেত্রে বিস্ফোরণ, সংক্রমণ বা দুর্ঘটনার কারণ হয়ে উঠতে পারে।
বাড়িতে থাকা এমন ১০টি জিনিস, যেগুলি রান্নাঘরের ডাস্টবিনে ফেলবেন না-
১। হেয়ার স্প্রে, ডিওডোরেন্ট, স্প্রে পেইন্ট
ব্যবহার করা ডিওডোরেন্ট, হেয়ার স্প্রে, পোকামাকড় মারার স্প্রে, স্প্রে পেইন্ট - এই সমস্ত বোতল অত্যন্ত দাহ্য। বোতলে থাকা এতটুকু উপাদানও বাতাসে উপস্থিত অন্যান্য গ্যাসের সঙ্গে বিক্রিয়া ঘটিয়ে বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে।
ঘরে বা রান্নাঘরের ডাস্টবিনে না ফেলে বাড়ির বাইরে রাখুন, পারলে স্থানীয় রিসাইক্লিং বা হ্যাজার্ডাস ওয়েস্ট কালেকশনের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করুন।
২। রঙিন কাগজ
সাধারণ কাগজ ফেলে দিলে মাটিতে মিশে যায়, তবে রঙিন কাগজে থাকা রাসায়নিক রং পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
বিশেষ বর্জ্য হিসেবে আলাদা করে ফেলুন বা রিসাইক্লিং করতে দিন।
৩। মাটি ও সেরামিক পাত্র
এই জিনিসগুলি ডাস্টবিনে ফেলার পর তা সহজে মিশে যায় না এবং ল্যান্ডফিলের বোঝা বাড়ায়।
সৃজনশীল উপায়ে পুনঃব্যবহার করুন, গাছের টব, শো'পিস, পেন দানি বানাতে পারেন ঘরে।
৪। ডায়পার
ব্যবহৃত ডায়পার জীবাণুযুক্ত হয়। রাসায়নিক জেল ও প্লাস্টিক মেশানো হওয়ায় সহজে ধরে পচে না। সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।
কাগজে মুড়ে নির্দিষ্ট স্যানিটারি বর্জ্য হিসেবে ফেলুন।
৫। জীবাণুনাশক, রং ও রাসায়নিক বোতল
এই বোতলগুলি মাটিতে ফেলে দিলে তা জল এবং মাটির দূষণ ঘটাতে পারে। রান্নাঘরের ডাস্টবিনে ফেললে দুর্ঘটনাবশত বোতল ফেটে বা লিক করে বিস্ফোরণও ঘটতে পারে।
হ্যাজার্ডাস ওয়েস্ট হিসেবে আলাদা ভাবে বর্জ্য মুক্ত করার ব্যবস্থা করুন।
৬। ভাঙা কাচ বা বাল্ব
ভাঙা যে কোন ধরনের কাচের জিনিস ঠিকমতো ডাস্টবিনে না ফেললে কারও হাত-পা কেটে যাওয়ার আশঙ্কা থাকতে পারে। বিশেষ করে যারা আবর্জনা নিয়ন্ত্রণ, বাছাইয়ের কাজ করে তাদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেশি।
মোটা কাপড় বা কাগজে ভালো করে জড়িয়ে তবেই ফেলুন, পারলে গায়ে লিখে দিন "ভাঙা কাচ", এরপর অন্য সব আবর্জনা থেকে আলাদাভাবে বিনে ফেলুন।
৭। জুসের টেট্রা প্যাক
প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়াম যুক্ত জুস, দুধ বা যেকোনো পানীয়র টেট্রা প্যাক সহজে মাটিতে মেশে না, পরিবেশে দীর্ঘমেয়াদি দূষণ ঘটায়।
রিসাইক্লিং ইউনিটে জৈব বর্জ্য থেকে আলাদা করে ফেলুন।
৮। ব্যান্ডেজ, সিরিঞ্জ, গ্লাভস
ব্যান্ডেজ, সিরিঞ্জ, গ্লাভসের মতো বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য ভুল করেও রান্নাঘরে থাকা ডাস্টবিনে ফেলবেন না। তা থেকে জীবাণু সংক্রমণের সমস্যা বাড়ে।
নির্দিষ্ট মেডিকেল ওয়েস্ট ডিসপোজাল পদ্ধতি অনুসরণ করুন।
৯। ন্যাপকিন ও টিস্যু
অনেক সময় এসব কাগজে ক্ষতিকর রং বা রাসায়নিক থাকে, যা পরিবেশের ক্ষতি করে। দূষণ রুখতে চাইলে ভুলেও রান্নাঘরে থাকা ডাস্টবিনে ফেলবেন না।
সঠিকভাবে পুড়িয়ে বা কম্পোস্টিং পদ্ধতিতে নিষ্পত্তি করুন।
১০। ব্যাটারি, ইলেকট্রনিক্সের ছোট যন্ত্রাংশ
ব্যাটারি বা ইলেকট্রনিক্স বর্জ্য থেকে বিষাক্ত ধাতু লিক হতে পারে, যা মাটি ও জল দূষণ করতে পারে।
এখনও পাড়ায় পাড়ায় ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রাংশ কেনার জন্য লোক ঘুরে বেড়ায়। তাদের কাছে বিক্রি করলে আপনি সামান্য কিছু টাকাও পাবেন, সাথে আপনার ই-ওয়েস্টের সঠিক গতিও হবে।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।

