মাত্র ২ টাকা কুড়িয়ে নেয়ার অনুশোচনায়, ৫৫ বছর পর মন্দিরে দশ হাজার টাকা ফেরত দিলেন ভক্ত। খবর ছড়িয়ে পড়তেই ভক্তের প্রশংসা সকলের মুখে।

মানুষের কর্ম বদলালেও অনুভূতি বদলায় না। বিশেষ করে অনুশোচনা বা বিবেক কখনও হারিয়ে যায় না। সেটাই প্রমাণ করলেন তামিলনাড়ুর এক অজ্ঞাত ভক্ত। ১৯৭০ সালে একটি মন্দির চত্বর থেকে কুড়িয়ে পাওয়া ২ টাকার নোট পকেটে পুরে নিয়েছিলেন। দীর্ঘ ৫৫ বছর সেই ঘটনাটি তাঁকে কুরে কুরে খেয়েছে। অবশেষে নিজের ‘ভুল’ শুধরে দিতে সেই ২ টাকার বিনিময়ে ১০,০০০ টাকা মন্দিরে ফিরিয়ে দিলেন তিনি। তাঁর এই কাজ আজ প্রমাণ করছে, বিবেকবোধ ও সততা এখনও বেঁচে আছে।

ঘটনাটি কোথায় ঘটেছে?

ঘটনাটি ঘটেছে ইরোড জেলার নেরুঞ্জিপেট্টাইয়ের চেল্লান্ডি অম্মান মন্দিরে। মন্দির কর্তৃপক্ষদের থেকে জানা যায়, শুক্রবার মন্দিরের প্রণামী বাক্সে একটি সাদা খাম দেখতে পান কর্মকর্তারা। খুলে দেখা যায় তার ভেতরে রাখা ১০,০০০ টাকা এবং একটি হাতে লেখা চিঠি। চিঠিতে নিজের নাম বা পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

চিঠিতে কী লিখেছিলো?

ঐ বেনামি চিঠিতে লেখা ছিল, ‘৫৫ বছর আগে মন্দির থেকে ২ টাকার নোট কুড়িয়ে পেয়েছিলাম। মালিককে খুঁজে না পাওয়ায় টাকাটি ফেরাতে পারিনি। কিন্তু বারবার মনে হয়েছে ওই টাকা মন্দিরে দিয়ে দেওয়া উচিৎ ছিল। তাই এখন ২ টাকার বিনিময়ে ১০ হাজার টাকা মন্দিরে ফিরিয়ে দিলাম'।

হিসাব করলে বোঝা যায়, ১৯৭০ সালের ২ টাকার বর্তমান মূল্য প্রায় ১০২ টাকা। কিন্তু ওই ব্যক্তি ফিরিয়ে দিয়েছেন ১০০ গুণ বেশি অর্থ, দশ হাজার টাকা। এটা শুধু আর্থিক পরিশোধ নয়, বরং এক ব্যক্তির গভীর অনুশোচনার প্রমাণ। এই উপায়ে প্রায়শ্চিত্তের মাধ্যমে আত্মিক দায়বদ্ধতার প্রকাশও বটে।

সমাজের প্রতিক্রিয়া

খবরটি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই, এত বছর পরেও টাকা ফিরিয়ে দেওয়া এমনকি অস্তিত্ব গোপন রেখে এমন কাজে ব্যক্তির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন অনেকে। তবে ৫৫ বছর পর শত গুন বেশি টাকা মন্দিরে ফিরিয়ে দিয়ে ভুলের প্রায়শ্চিত্ত যখন করেছেন তখন নিজের নাম-ধাম প্রকাশ করতেই পারতেন, বলেও মনে করছেন অনেকে।