কিডনিতে কোনও অসুখ বাসা বাঁধলে তা প্রথমে একেবারেই বোঝা যায় না, যতক্ষণ না বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যায়। সেই কারণে প্রাথমিক পর্যায়ে কিডনির অসুখ হলে আমরা টের পাই না।
সামগ্রিক স্বাস্থ্যকে সুস্থ রাখতে কিডনিকে সুস্থ রাখা, এর যত্ন নেওয়া প্রয়োজন, কারণ কিডনি শরীর থেকে টক্সিন বা দূষিত পদার্থকে আলাদা করে বের করে দেয়। আবার কিডনিতে কোনও অসুখ বাসা বাঁধলে তা প্রথমে একেবারেই বোঝা যায় না, যতক্ষণ না বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যায়। প্রতিটি কিডনি প্রায় ১১ লক্ষ নেফ্রন নিয়ে গঠিত, কিন্তু ১০-২০ হাজার নেফ্রন নিয়েও আমরা ভালভাবে বাঁচে থাকতে পারি। সেই কারণে প্রাথমিক পর্যায়ে কিডনির অসুখ হলে আমরা টের পাই না।
কিডনি সমস্যার লক্ষণসমূহ:
১. পা ফুলে ওঠা।
২. প্রস্রাব করার সময় তা থেকে সাবানের মতো ফেনা হওয়া।
৩. কোনও কারণ ছাড়াই সারাদিন খুব ক্লান্তিভাব।
৪. খাওয়ার ইচ্ছে চলে যাওয়া।
৫. ঘুমের অত্যধিক সমস্যা।
৬. মেয়েদের ক্ষেত্রে কিডনির সমস্যা থাকলে বারবার ইউরিন ট্রাক্ট ইনফেকশন হতে পারে।
কিডনি সুস্থ রাখার সহজ উপায় :
১. কিডনি ভাল রাখতে সবারই পর্যাপ্ত পরিমাণ জল খেতে হবে, হাইড্রেটেড রাখতে হবে। অসুস্থতায় (জ্বর, ডায়রিয়া, বমি প্রভৃতি) এবং ব্যায়ামের পর, গর্ভবতী এবং স্তন্যদায়ী মায়ের জন্য শরীরে জলের চাহিদা বেশি। আবহাওয়ার পরিবর্তনের ওপর ভিত্তি করে অন্তত আট গ্লাস জল সারাদিনে গ্রহণ করতে হবে। চিনি মেশানো জুস, সফ্ট ড্রিঙ্কসের বদলে সাদা জল পান করুন। রসালো ফল এবং শাকসবজি বেশি করে খেতে হবে। সকালে খালি পেটে ডিটক্স ওয়াটার খেতে পারেন, এতে কিডনি টক্সিনমুক্ত হবে।
২. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। রোজ অন্তত ৩০ মিনিটের জন্য দ্রুত হাঁটা, সাইকেল চালানো বা সাঁতারের মতো মাঝারি-তীব্রতার ব্যায়ামগুলি করতে পারেন, এতে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকবে ও কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য উল্লেখযোগ্যভাবে উপকারী। সাথে বাইরের প্রক্রিয়াজাত খাবার ও নুন গ্রহণ কম করুন। উচ্চ পরিমাণে সোডিয়াম, ফসফরাস এবং যুক্ত শর্করা থাকে এইসব খাবারে। অতিরিক্ত সোডিয়াম রক্তচাপ বাড়ায়, আপনার কিডনিতে স্ট্রেইন পড়ে। উচ্চ ফসফরাস শরীরের ক্যালসিয়াম ভারসাম্যকে ব্যাহত করে। এগুলি সরাসরি কিডনির ক্ষতি না করলেও, অতিরিক্ত শর্করা স্থূলতা এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়, যা দীর্ঘস্থায়ী কিডনির রোগের ঝুঁকির কারণ।
৩. কিডনির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিয়মিত ব্লাড সুগার চেক করে দেখতে হবে, দরকারে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সুগার সরাসরি কিডনিতে প্রভাব ফেলে। সুষম খাদ্যভ্যাস অবশ্যই সাহায্য করবে তবে সকালে খালি পেজে মিষ্টি জাতীয় খাবার, মিষ্টি ফল এসব এড়িয়ে চলুন। নাহলে একধাক্কায় সুগার অনেকটা বাড়িয়ে দিতে পারে।
৪. অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন আপনার কিডনির ক্ষতি করবে। এটি কিডনিতে রক্ত প্রবাহ কমাতে পারে, কিডনির টক্সিন ফিল্টার করার ক্ষমতাতে বাধা দেয়। একইভাবে আপনার জন্য ক্ষতিকর ধূমপানও।


