গ্রিন এক্সারসাইজ কেবল শরীর নয়, মনকেও সুস্থ রাখে। প্রকৃতির কোলে ফিরে গিয়ে ফিজিকাল ও মেন্টাল হেল্থের ‘ডুয়াল থেরাপি’ এটি।

আজকের দিনে ওবেসিটি, মানসিক চাপ, ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশনের মতো অসুখগুলো ঘরে ঘরে বাসা বেঁধেছে। বছরে ওই দু দিনের ছুটিতে প্রকৃতি দেখতে যাওয়ায় কতই বা মন ভাল রাখা যায়? তার ওপর ব্যস্ত জীবনে শরীরচর্চার সময় পাওয়াই কঠিন। চার দেওয়ালের ভেতর একঘেয়ে জীবন ব্যায়ামেও অনীহা নিয়ে আসে। জীবন ও শরীর থেকে হারিয়ে যাচ্ছে সতেজতা। এই পরিস্থিতি কাটাতে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এক নতুন ধরনের শরীরচর্চার পরামর্শ দেন এখন — গ্রিন এক্সারসাইজ বকে একে।

প্রকৃতির কোলে পায়ের তলায় সবুজ ঘাস, মাথা ওপর খোলা আকাশ নিয়ে গাছপালা ঘেরা পরিবেশে শরীরচর্চা করা এর উপকারিতাকে আরও বাড়িয়ে দেয়। হালকাভাবে হাঁটা, দৌড়ানো, যোগব্যায়াম, সাইক্লিং বা সাধারণ শরীরচর্চা যাই করুন, সবই খোলা আকাশের নিচে।

গ্রিন এক্সারসাইজ কেন বেছে নেবেন?

ফিটনেস প্রশিক্ষক অনুপ আচার্যের মত, সময় ও জায়গার অভাবে জিমের বাতানুকূল ঘরে অথবা বন্ধ চার দেওয়ালের মধ্যেই ব্যায়াম করানো হয়। কিন্তু যদি সেই ব্যায়ামই সবুজ গাছপালা ঘেরা জায়গায় করা যায়, তা হলে যেমন প্রকৃতির সঙ্গে মনের সংযোগ তৈরি হবে তেমনই শরীরে অক্সিজেনও বেশি যাবে। গ্রিন এক্সারসাইজ়ে মন শান্ত হয়, ভাবনাচিন্তা স্বচ্ছ হয়, শরীর বেশি পরিমাণে ভিটামিন ডি পায়, অবসাদ ও একঘেয়েমি থেকেও রেহাই পাওয়া যায়। হার্টের স্বাস্থ্যের জন্যও ভাল গ্রিন এক্সারসাইজ়।

কী কী ব্যায়াম করা যেতে পারে?

১. খালি পায়ে হাঁটা : মাঝে মাঝে খালি পায়ে অন্তত ১০ মিনিট সতেজ ঘাসের উপর হাঁটুন। ঠান্ডা সবুজ সতেজ ঘাসের উপর হাঁটতে আরাম লাগে। এতে শরীর সতেজ থাকবে, দুশ্চিন্তা কমবে।

২. দৌড়নো বা জগিং : কোনো পার্কে মাঠে বা ঝিকের ঝিলের ধারে গিয়ে সকাল সকাল দৌড়তে বা জগিং করতে পারলে উপকার অনেক বেশি। খেলোয়ার কোচরা বলেন, খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ দেওয়ার সময়ে প্রকৃতির মাঝেই নানা অনুশীলন করানো হয়। এতে শান্ত মনে, শুদ্ধ পরিবেশে শরীরের ব্যায়াম ভালো হয়।

৩. সূর্য নমস্কার : সূর্য নমস্কার ঠিকভাবে করলে সারা শরীরের ব্যায়াম হয়। রক্ত সঞ্চালন ভাল থাকে। ফুসফুস থেকে হার্ট, লিভার, কিডনি সব অঙ্গই ভাল থাকবে এই ব্যায়ামে। ত্বকের স্বাস্থ্য ভাল হয়, মনও ভাল থাকে নিয়মিত সূর্য নমস্কার করলে। অনেক জটিল অসুখের ঝুঁকিও কমে যায়।

৪. শ্বাসের ব্যায়াম : পিঠ সোজা করে পদ্মাসনে বা সুখাসনে বসতে হবে। চোখ বন্ধ রেখে মনোনিবেশ করতে হবে নিঃশ্বাস ও প্রশ্বাসের উপরে। নাক দিয়ে গভীর o বড়ো বড়ো করে শ্বাস নিন। সাধ্যমতো কয়েক সেকেন্ড ধরে রাখুন। তার পর ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন। এই সম্পূর্ণ পদ্ধতিটি সাত থেকে আট বার করে করতে হবে নিত্য। যন্ত্র ও ফুসফুস ভালো থাকে শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়।