সংক্ষিপ্ত

ব্রাউন রাইস কীভাবে তৈরি হয় জানেন? এই চাল বানানোর গোপন রহস্য জেনে নিন

সাদা চালের তুলনায় ব্রাউন রাইস অনেক ভালো। এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। এই চালে পুষ্টিগুণও প্রচুর পরিমাণে থাকে। তাই অনেকেই ব্রাউন রাইস খেয়ে থাকেন। এই চাল সাদা চালের তুলনায় একটু বেশি দামি। কিন্তু স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো।

তবে ব্রাউন রাইস বেশিরভাগ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরাই বেশি খেয়ে থাকেন। শুধু তাদের জন্যই নয়.. অন্যরাও ব্রাউন রাইস খেতে পারেন। তবে অনেকেরই ব্রাউন রাইস এবং সাদা চালের মধ্যে পার্থক্য জানেন না। ব্রাউন রাইস কিভাবে তৈরি হয় তা নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন থাকে। এই প্রশ্নের উত্তর এবার জেনে নেওয়া যাক।

ব্রাউন রাইস কীভাবে তৈরি হয়?

অন্যান্য ধানের মতোই ব্রাউন রাইসের চাষ করা হয়। ব্রাউন রাইস, সাদা চালের মতোই ওরাইজা স্যাটিভা প্রজাতি থেকে নেওয়া হয়। এই ধানের গাছ পরিপক্ক হওয়ার পর ধান কাটার জন্য প্রস্তুত হয়। ফসল হাতে আসার সাথে সাথেই ধান প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য রাইস মিলে নিয়ে যাওয়া হয়।

মিলিং প্রক্রিয়া: রাইস মিলে নিয়ে যাওয়ার পর মিলিং প্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে এই ব্রাউন রাইস এবং সাদা চালের মধ্যে মিলিং প্রক্রিয়ায় অনেক পার্থক্য রয়েছে। এই ব্রাউন রাইস সম্পূর্ণ শস্য হিসেবে বিবেচিত হয়। কারণ এই প্রক্রিয়ায় শুধুমাত্র বাইরের আবরণ, যাকে তুষ বলা হয়, তা তোলা হয়। ফলে ভুসির স্তর অক্ষত থাকে। এই স্তরেই ভিটামিন, ফাইবার, খনিজ পদার্থ প্রচুর পরিমাণে থাকে। তাই পুষ্টির দিক থেকে সাদা চালের তুলনায় ব্রাউন রাইসই ভালো। সাদা চাল বেশি মিলিং করা হয়। অতিরিক্ত পালিশ এবং পরিশোধনের ফলে সাদা চালের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়।

ব্রাউন রাইস তৈরির পদ্ধতি কেমন?

কাটা ধান মিলে নিয়ে গিয়ে সেখানে শুধু তুষ তোলা হয়। এই তুষ একটি শক্ত রক্ষাকারী আবরণ। বাকিটা ব্রাউন রাইস। এর ভুসির স্তর অক্ষত থাকে। তুষ তোলার পর ধান ভালো করে পরিষ্কার করা হয় ধুলোবালি তোলার জন্য। এরপর ব্রাউন রাইস প্যাকেট করে বিক্রির জন্য রাখা হয়।

ব্রাউন রাইস সম্পর্কে কিছু আকর্ষণীয় তথ্য

আপনি কি জানেন? এই ব্রাউন রাইস ৯,০০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চাষ করা হচ্ছে। ব্রাউন রাইস অনেক বছর ধরে প্রতিদিনের খাবারের অংশ। শিল্প বিপ্লবের সময় পরিশোধন প্রক্রিয়া উন্নত হয়। এই চাল অনেক দিন সংরক্ষণ করা যায়। এছাড়া রান্না করাও সহজ। তাই এটি বেশ জনপ্রিয়। এক কাপ ব্রাউন রাইসে ৩.৫ গ্রাম ফাইবার থাকে। সাদা চালে এক গ্রামেরও কম ফাইবার থাকে। এছাড়াও ব্রাউন রাইস সাদা চালের তুলনায় ৮০% বেশি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। তাই এই চালকে স্বাস্থ্যকর বলে বিবেচনা করা হয়।

এক কাপ ব্রাউন রাইস খেলে আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ম্যাঙ্গানিজ পাওয়া যায়। ম্যাঙ্গানিজ একটি খনিজ পদার্থ। এটি আমাদের হাড়কে সুস্থ রাখে। এছাড়াও বিপাক বৃদ্ধি করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে সম্পূর্ণ শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ব্রাউন রাইসে গ্লুটেন থাকে না। এই চাল পেটের রোগে আক্রান্তদের জন্য উপকারী। এছাড়াও হাইপোঅ্যালার্জেনিক, খাদ্য অ্যালার্জি থাকলেও উপকারী।

ব্রাউন রাইস শুধু এক ধরনের ধান নয়। এই ব্রাউন রাইস ছোট, মাঝারি, লম্বা সহ অনেক প্রকারের হয়। প্রতিটি ধরনের ধানের আকার এবং স্বাদ আলাদা হয়। অর্থাৎ চিবানোর জন্য সহজ, আঠালো থেকে শুকনো পর্যন্ত অনেক রকমের হয়। ভুসির কারণে ব্রাউন রাইস রান্না করতে বেশি সময় লাগে। সাধারণত ব্রাউন রাইস রান্না করতে ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘন্টা সময় লাগে। সাদা চাল মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিটে রান্না হয়ে যায়।