সংক্ষিপ্ত

ভারতকে ব্রিটিশদের দাসত্ব থেকে মুক্ত করতে নেতাজি বহু আন্দোলন করেছিলেন। তিনি আজাদ হিন্দ ফৌজ প্রতিষ্ঠা করেন। আসুন জেনে নিই দেশের বীর মুক্তিযোদ্ধা নেতাজির জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ দিক ও উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো।

 

নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু ভারতের স্বাধীনতায় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। তিনি 'আজাদ হিন্দ ফৌজ' প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ভারতের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মধ্যে সুভাষ চন্দ্র বসুর নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে। নেতাজির স্লোগান 'তুমি আমাকে রক্ত ​​দাও, আমি তোমাকে স্বাধীনতা দেব' আজও ভারতীয়দের মধ্যে দেশপ্রেমেক উদ্রেক করে।

ভারতকে ব্রিটিশদের দাসত্ব থেকে মুক্ত করতে নেতাজি বহু আন্দোলন করেছিলেন। ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ তীব্র করার জন্য তিনি আজাদ হিন্দ ফৌজ প্রতিষ্ঠা করেন। আসুন জেনে নিই দেশের বীর মুক্তিযোদ্ধা নেতাজির জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ দিক ও উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো।
 

নেতাজির জন্ম ও পারিবারিক জীবন-

নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু ২৩ জানুয়ারি ১৮৯৭ সালে ওড়িশার কটকে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম জানকীনাথ বসু এবং মাতার নাম প্রভাবতী দেবী। সুভাষ চন্দ্র বসু শৈশব থেকেই বুদ্ধিমান ছিলেন এবং পড়াশোনায় ছিলেন দ্রুত। তিনি ইংল্যান্ডের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিভিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

কিন্তু ১৯২১ সালে, যখন তিনি ভারতে ব্রিটিশদের শোষণের কথা পড়েন, একই সঙ্গে তিনি ভারতকে স্বাধীন করার শপথ নেন এবং ইংল্যান্ডে প্রশাসনিক চাকরির মর্যাদাপূর্ণ চাকরি ছেড়ে দিয়ে দেশে ফিরে আসেন এবং স্বাধীনতা আন্দোলনে যুক্ত হন। তাঁর স্লোগান ছিল 'তোমরা আমাকে রক্ত ​​দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব'।

সুভাষ চন্দ্র বসুকে 'নেতাজি' উপাধি দেন কে?

জার্মানির স্বৈরশাসক অ্যাডলফ হিটলার সুভাষ চন্দ্র বসুকে প্রথমবারের মতো 'নেতাজি' বলে সম্বোধন করেছিলেন এই বিষয়ে খুব কম মানুষই জানেন। নেতাজির পাশাপাশি সুভাষ চন্দ্র বসুকেও বলা হয় দেশ নায়ক। কথিত আছে, সুভাষ চন্দ্র বসু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছ থেকে দেশ নায়ক উপাধি পেয়েছিলেন।
 

নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু সম্পর্কে আকর্ষণীয় তথ্য-

১৯৪২ সালে সুভাষ চন্দ্র বসু হিটলারের কাছে গিয়ে ভারতকে স্বাধীন করার প্রস্তাব দেন। কিন্তু হিটলার ভারতের স্বাধীনতার ব্যাপারে কোনও আগ্রহ দেখাননি এবং সুভাষ চন্দ্র বসুকে কোনও সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতিও দেননি।

নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু সিভিল পরীক্ষায় চতুর্থ স্থান পেয়ে প্রশাসনিক চাকরিতে একটি মর্যাদাপূর্ণ চাকরি করছিলেন। কিন্তু দেশের স্বাধীনতার জন্য তিনি তার আরামদায়ক চাকরি ছেড়ে ভারতে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের হৃদয় বিদারক দৃশ্য দেখে সুভাষ চন্দ্র বসু গভীরভাবে ব্যথিত হয়েছিলেন, তার পরেই তিনি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগ দেন।

১৯৪৩ সালে, সুভাষ চন্দ্র বসু বার্লিনে আজাদ হিন্দ রেডিও এবং ফ্রি ইন্ডিয়া সেন্ট্রাল প্রতিষ্ঠা করেন।

১৯৪৩ সালে, আজাদ হিন্দ ব্যাঙ্ক ১০ টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত মুদ্রা জারি করেছিল। এক লক্ষ টাকার নোটে ছাপা হয়েছিল নেতাজি সুভাষ চন্দ্রের ছবি।

মহাত্মা গান্ধীকে সুভাষ চন্দ্র বসু 'জাতির পিতা' বলে সম্বোধন করেছিলেন।

সুভাষ চন্দ্র বসু ১৯২১ থেকে ১৯৪১ সালের মধ্যে দেশের বিভিন্ন কারাগারে ১১ বার বন্দী ছিলেন তিনি।

সুভাষ চন্দ্র বসু ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি হিসেবে দুবার নির্বাচিত হন।

সুভাষ চন্দ্র বসুর মৃত্যু নিয়ে কথা বললে তা আজ পর্যন্ত রহস্যই রয়ে গেছে। কারণ তার মৃত্যুর পর্দা আজ পর্যন্ত উঠানো সত্যতা জানা যায়নি। ১৯৪৫ সালে জাপানে যাওয়ার সময় সুভাষ চন্দ্র বসুর বিমান তাইওয়ানে বিধ্বস্ত হয়, যদিও এই বিষয়ে যথেষ্ট মতানৈক্য রয়েছে। কারণ নেতাজির দেহাবশেষ সেই স্থান থেকে উদ্ধার হয়নি।

জাপানের এক মন্দিরে রাখা নেতাজির চিতাভষ্ম রাখা আছে বলে অনেকাংশের দাবী। নেতাজি কন্যা অনিতা বোস পাফ এও আর্জি করেছেন তাঁর জীবদ্দশায় সেই চিতাভষ্মের সঙ্গে তাঁর ডিএনএ টেস্ট করা হোক, তবেই প্রমাণ হবে সেই চিতাভষ্ম আদৌ নেতাজির কি না।