বাচ্চাদের একদম দেখানো যাবে না আইটেম সং! বারবার সতর্ক করল মনোবিজ্ঞানীরা
- FB
- TW
- Linkdin
সিনেমার প্রভাব বাচ্চাদের উপর, সমাজের উপর অনেক বেড়ে যাচ্ছে। আজকের সব বাচ্চাদের কাছে সহজেই টিভি এবং মোবাইল ফোন পাওয়া যায় বলে সব সিনেমা, ওয়েব সিরিজ এবং সোশ্যাল মিডিয়া রিল দেখার পরিমাণ বেড়েছে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম এবং শিশুদের উপর এই প্রভাব বেশি। সেল ফোনের কারণে এই প্রভাব আরও বেড়েছে। কিন্তু, বাচ্চাদের উপর আইটেম গানের প্রভাব পড়ছে, তাই সেগুলো না দেখানোর পরামর্শ দিয়েছেন মনোবিজ্ঞানীরা।
এখনও বাচ্চাদের সমাজে কী করা উচিত, কী করা উচিত নয় সেই বুদ্ধি আসেনি। এইভাবে সঠিক ভুল চিনতে শেখার আগেই তরুণ প্রজন্মের ভুল পথে যাওয়ার পিছনে সিনেমার অবদান অনেক। শুধু তাই নয়, ছোটো বাচ্চারাও সিনেমার অশ্লীল দৃশ্য, আইটেম গান এবং অন্যান্য দৃশ্য দেখে প্রভাবিত হচ্ছে। এগুলোর অর্থ তাদের বোধগম্য না হলেও তারা সেগুলো অনুকরণ করছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মনোবিজ্ঞানীরা। তাই, বাচ্চাদের লালন-পালনে অভিভাবকদের সতর্ক থাকা উচিত বলে সতর্ক করেছেন।
বাচ্চারা যখন বয়সের তুলনায় বড়দের কাজ করে, তখন বাবা-মা খুশি হন। বিশেষ করে সিনেমার গান গাওয়া, নাচ করা দেখে বাবা-মা খুশি হয়ে তাদের উৎসাহিত করেন। এমনকি, তাদের মনে হয় এতে বাচ্চাদের অনেক উপকার হবে। কিন্তু এটা সত্য নয় বলে জানিয়েছেন মনোবিজ্ঞানীরা।
সিনেমার আইটেম গান, অশ্লীল অ্যালবামের গান বাচ্চাদের উপর খুব খারাপ প্রভাব ফেলে বলে সতর্ক করেছেন শিশু মনোবিজ্ঞানীরা। বাড়িতে, পার্টিতে বাজানো গান সহজেই বাচ্চাদের আকর্ষণ করে। ফলে, তারা সেগুলো অনুকরণ করে। গানের অর্থ না বুঝলেও তারা সেই অশ্লীল শব্দগুলো মনে রাখতে পারে। অথবা একইভাবে অশ্লীলভাবে নাচ করারও সম্ভাবনা থাকে।
একবার আমি একটি ডান্স রিয়েলিটি শো-এর অডিশনে গিয়েছিলাম। সেই সময় ৭ বছরের একটি মেয়েকে খুব অদ্ভুত আচরণ করতে দেখে আমি অবাক হয়ে যাই। মেয়েটি দুটি কাগজের বল তৈরি করে তার পোশাকের ভেতরে রাখছিল। এত ছোট বয়সে মেয়েটির এমন আচরণ দেখে আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম বলে জানিয়েছেন মুম্বাইয়ের একজন শিশু মনোবিজ্ঞানী এবং প্যারেন্টিং কাউন্সিলর।
কিছু সিনেমার গান শুনতে খুব ভালো লাগে। কিন্তু তার কথাগুলো খুব খারাপ। শুধু তাই নয়, সিনেমার সহিংসতা, মাদক, যৌনতা, অশ্লীল দৃশ্য বাচ্চাদের বোধগম্য হয় না। কিন্তু, এগুলো সম্পর্কে জানার কৌতূহল তাদের মধ্যে থাকে। গানের কথার অর্থ কী, অথবা ওই দৃশ্যে কেন এমনটা করা হয়েছে, বাচ্চারা বাবা-মাকে জিজ্ঞেস করে। কিন্তু, বাচ্চারা যখন এমন প্রশ্ন করে, তখন বাবা-মা সঠিক উত্তর না দিয়ে তাদের প্রশ্ন এড়িয়ে যান।
এতে করে বাচ্চাদের মনে সেই বিষয়গুলো সম্পর্কে জানার কৌতূহল আরও বেড়ে যায়। তারা বন্ধুদের কাছে অথবা অন্য কারও কাছে এসব জানার চেষ্টা করে। অপ্রাপ্ত বয়সেই তারা মোবাইলে এসব খোঁজাখুঁজি শুরু করে। সেখানে না পেলে তারা কারও কাছে গিয়ে এসব জানতে চাইতে গিয়ে বলির পাঁঠাও হতে পারে।
বাচ্চাদের বেড়ে ওঠার পর্যায় অভিভাবকদের হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। এই সময়েই বাচ্চাদের মধ্যে সৃজনশীলতা এবং অন্যান্য প্রতিভা বিকশিত হয়। এই সময়ে তাদের সঠিক দিকনির্দেশনা প্রয়োজন। কোন পথে এগিয়ে যেতে হবে তা অভিভাবকদেরই দেখিয়ে দিতে হবে।
আজকের অনলাইন যুগে বাচ্চাদের উপর নজর রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাচ্চারা মোবাইলে, টিভিতে কী দেখছে তার উপর নজর রাখতে হবে। যদি বাচ্চারা কোনও খারাপ কিছু দেখছে অথবা শুনছে, তাহলে তাদের সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে হবে। কী সঠিক, কী ভুল তা তাদের বোঝাতে হবে। এতে করে বাচ্চারা ভুল পথে যাবে না।
বাচ্চারা যাতে মোবাইলের প্রতি আসক্ত না হয়ে পড়ে, সেদিকে নজর রাখাও অভিভাবকদের দায়িত্ব। বাচ্চারা চাইছে বলে তাদের হাতে মোবাইল তুলে দিলে পরবর্তীতে তা বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই, বাচ্চাদের সাথে সময় কাটানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাদের সাথে খেলাধুলা করা, বই পড়া ইত্যাদিতে উৎসাহিত করলে বাচ্চাদের মোবাইল আসক্তি থেকে দূরে রাখা সম্ভব বলে মত মনোবিজ্ঞানীদের।