রেল যাত্রীদের জন্য রইল একদম লোভনীয় খবর। এবার ট্রেনে পা রাখলেই খেতে মিলবে সকলের প্রিয় মিষ্টি রসগোল্লা, পান্তুয়া। শুনে চমকে গেলেন তো? কিন্তু এটাই সত্যি। শনিবার পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রামের পাঁচুন্দি স্টেশনের দৃশ্যটা একটু অন্যরকম ছিল।জানুন বিস্তারিত।

পশ্চিম বর্ধমানের কেতুগ্রাম স্টেশনে একটি বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে যেখানে টিকিট দেখিয়ে ট্রেনে ওঠা যাত্রীদের রসগোল্লা ও পান্তুয়া দেওয়া হচ্ছে। কাটোয়া-আহমদপুর রেলওয়ে প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশন যাত্রীদের টিকিট কেটে ট্রেনে ওঠার বিষয়ে সচেতন করতে এই উদ্যোগ নিয়েছে, যা যাত্রীদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে।

শনিবার সকাল থেকেই পাঁচুন্দি স্টেশনে যেন জমে উঠেছিল এক অন্য রকমের উৎসবের আবহ। কাটোয়া-আহমদপুর জ্ঞানদাস রেলওয়ে প্যাসেঞ্জার এসোসিয়েশনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হল অভিনব জনসচেতনতা কর্মসূচি “টিকিট কাটুন, ট্রেনে চাপুন”।

স্টেশনের মধ্যেই দাঁড়িয়ে ছিলেন এসোসিয়েশনের সদস্যরা। যেসব যাত্রীর কাছে টিকিট ছিল তাঁকে আদর করে মুখে মিষ্টি তুলে দিয়েছেন তাঁরা। কেউ রসগোল্লা খেয়ে মুগ্ধ, কেউ আবার পান্তুয়ার স্বাদ নিয়ে বলেই ফেলছেন “আরে, এমন সচেতনতা হলেও ক্ষতি নেই।” দৃশ্য দেখে অন্য যাত্রীরাও হাসতে হাসতেই নিজেদের টিকিট দেখাচ্ছিলেন। কিন্তু যাঁরা টিকিট কাটেননি তাঁদের সামনে এসোসিয়েশনের সদস্যরা করজোড়ে অনুরোধ রেখেছেন “টিকিট কেটে যাত্রা করুন। রেলের আয় বাড়লে আপনাদেরই সুবিধা।”

এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হিমাদ্রি ঘোষ জানান, রেলের তরফে তাঁদের জানানো হয়েছে ভোর ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কাটোয়া-আহমদপুর রেলপথে প্রতি এক ঘণ্টা অন্তর ট্রেন সংখ্যা বাড়াতে হলে ১০০ শতাংশ যাত্রীকে টিকিট কেটে ভ্রমণ করতে হবে। যাত্রীদের নিয়ম মানার অভ্যাস তৈরি হলে রেলের আয় বাড়বে, আর তাতেই দ্রুত পূরণ হতে পারে এসোসিয়েশনের বহুদিনের দাবি ট্রেন সংখ্যা বৃদ্ধি, পরিষেবা উন্নতি, নতুন সুবিধার সংযোজন ইত্যাদি।

হিমাদ্রি বাবুর কথায়, “আমাদের দাবি পূরণ করতে রেল বলেছে আয় বাড়ান। তাই আমরাও ভাবলাম, সচেতনতার পথ মিষ্টি করে নিলেই হয়তো বেশি ভাল ফল মিলবে।” এ ধরনের কয়েকটি কর্মসূচি আগেও করেছে এসোসিয়েশন। তবে এই দিনের উদ্যোগ ছিল সত্যিই আলাদা, মিষ্টির স্বাদে সচেতনতা ছড়ানোর অভিনব প্রচার রীতিমতো নজর কেড়েছে। সকালের ট্রেন যাত্রীরা কেউ এমন উদ্যোগ আগে দেখেননি বলে জানিয়েছেন।

অনেকেই আবার হেসে বললেন, “এভাবে মিষ্টি পেলে তো প্রতিদিনই টিকিট কেটে উঠব।” স্টেশনের এ দিনের ব্যস্ততা, যাত্রীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এবং সদস্যদের আন্তরিকতা, সব মিলিয়ে পাঁচুন্দি স্টেশন যেন পরিণত হল এক মিষ্টিমাখা সচেতনতা মঞ্চে। রেলপথে পরিষেবা বাড়াতে এভাবে যাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়ে যে সুন্দর উদাহরণ তৈরি করেছে এসোসিয়েশন, তা নিঃসন্দেহে আগামী দিনে আরও বড় প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করছেন সকলেই।