বিশেষজ্ঞরা আগেভাগেই সাবধান করছেন। বর্তমানে ৪৫ বছরের কম বয়সিদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক বা বুক ধড়ফড় করার সমস্যা মারাত্মক হারে বাড়ছে। চিকিৎসকরা একে বলছেন ‘হলিডে হার্ট সিনড্রোম’।

‘হলিডে হার্ট সিনড্রোম’ (Holiday Heart Syndrome) হল ছুটির দিনে অতিরিক্ত মদ্যপান, অতিরিক্ত খাওয়া, মানসিক চাপ ও ক্লান্তি থেকে হঠাৎ হার্টবিট অনিয়মিত হয়ে যাওয়া । যা দ্রুত হৃদস্পন্দন, বুক ধড়ফড়, শ্বাসকষ্ট ও দুর্বলতা সৃষ্টি করে এবং যদিও এটি সাধারণত ক্ষণস্থায়ী হয়, তবে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়, তাই অতিরিক্ত অ্যালকোহল ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলা, পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিয়ে ও মানসিক চাপ কমিয়ে সতর্ক থাকা জরুরি।

হলিডে হার্ট সিনড্রোম কী?

* এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে কোনও পূর্ববর্তী হৃদরোগের ইতিহাস না থাকা সত্ত্বেও অতিরিক্ত মদ্যপান, অতিরিক্ত খাওয়া, অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা ক্লান্তি জনিত কারণে হার্টের ছন্দে ব্যাঘাত ঘটে, বিশেষ করে ছুটির সময়।

* মূলত, এটি অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশন (AFib), যেখানে হার্টের উপরের প্রকোষ্ঠগুলি (atria) সঠিকভাবে সংকুচিত না হয়ে কাঁপতে থাকে।

কারণসমূহ (Causes):

* অতিরিক্ত মদ্যপান (Binge Drinking): এটিই প্রধান কারণ। ছুটির দিনে অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন করলে এটি হতে পারে।

* অতিরিক্ত খাওয়া (Overeating): বিশেষত চর্বিযুক্ত, নোনতা ও চিনিযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া।

* মানসিক চাপ ও ক্লান্তি (Stress & Fatigue): ছুটির দিনে ভ্রমণ, সামাজিকতা ও রুটিন পরিবর্তনের কারণে মানসিক চাপ ও ক্লান্তি বাড়ে।

* ডিহাইড্রেশন (Dehydration): পর্যাপ্ত জল পান না করা।

লক্ষণসমূহ (Symptoms):

* বুক ধড়ফড় করা বা হৃৎপিণ্ডের অনিয়মিত স্পন্দন।

* দ্রুত হৃদস্পন্দন বা দুর্বলতা।

* ক্লান্তি ও শক্তি হ্রাস।

* মাথা ঘোরা বা অস্থিরতা।

* শ্বাসকষ্ট।

* বুক ব্যথা বা অস্বস্তি।

কারা বেশি ঝুঁকিতে (Who is at Risk)?

* যে কেউ আক্রান্ত হতে পারে, তবে যাদের আগে থেকেই হৃদরোগ আছে বা বয়স্করা (৬৫+) বেশি ঝুঁকিতে থাকেন।

সতর্কতা ও প্রতিরোধ (Prevention):

* অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ: মদ্যপান সীমিত করুন। মহিলাদের জন্য দিনে ১ পেগের বেশি এবং পুরুষদের জন্য ২ পেগের বেশি নয়, এমন পরামর্শ দেওয়া হয়।

* স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: অতিরিক্ত খাওয়া, বিশেষত নোনতা, চর্বিযুক্ত ও মিষ্টি খাবার এড়িয়ে চলুন।

* চাপ কমান: পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন।

* পর্যাপ্ত জল পান: শরীরকে হাইড্রেটেড রাখুন।

* ওষুধপত্র: হৃদরোগ থাকলে নিয়মিত ওষুধ খান।

যদি লক্ষণ দেখা দেয় (If Symptoms Occur):

* তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, কারণ এটি স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যায়।