সংক্ষিপ্ত
পশ্চিমবঙ্গের একজন মহান চিকিত্সক এবং বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ডঃ বিধান চন্দ্র রায়ের সম্মানে জাতীয় ডাক্তার দিবস পালিত হয় বিশ্বজুড়ে। ডাঃ রায়ের জন্ম ১ জুলাই, এই কারণে ১ জুলাই দিনটিকে জাতীয় চিকিৎসক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
চিকিৎসক ছাড়া এই পৃথিবী কল্পনা করা যায় না। প্রত্যেক ডাক্তারের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য প্রতি বছর ১ জুলাই জাতীয় চিকিৎসক দিবস পালিত হয়। আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন কেন শুধু ১ জুলাই ডাক্তার দিবস পালন করা হয়? আপনি যদি এই সম্পর্কে না জানেন তবে আজ আমরা আপনাকে এটি সম্পর্কে বলব।
প্রকৃতপক্ষে, পশ্চিমবঙ্গের একজন মহান চিকিত্সক এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ডঃ বিধান চন্দ্র রায়ের সম্মানে জাতীয় ডাক্তার দিবস পালিত হয় বিশ্বজুড়ে। ডাঃ রায়ের জন্ম ১ জুলাই, এই কারণে ১ জুলাই দিনটিকে জাতীয় চিকিৎসক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মুখ ও নাড়ি দেখে চিকিৎসা
ডঃ বিধান চন্দ্র রায়ের পেশার উপর তার যে দখল ছিল তা থেকে অনুমান করা যায় যে যখনই কোনও রোগী তার কাছে আসতেন তখনই তিনি তার মুখ ও নাড়ি দেখে তার রোগ ও চিকিৎসা বলতেন। ডাঃ রায় মহাত্মা গান্ধী থেকে জওহরলাল নেহরুর পর্যন্ত চিকিৎসা করেছিলেন। ডাঃ রায় একজন চিকিৎসকের পাশাপাশি একজন সার্জনও ছিলেন।
ড. রায় মহান চিকিৎসক
যে যুগে ডঃ রায় ডাক্তার হয়েছিলেন, সেই যুগে ডাক্তার হওয়াটাই বড় ব্যাপার ছিল। এটিতে উচ্চ যোগ্যতা অর্জন করা আরও কঠিন ছিল। কিন্তু ডঃ রায় মেধায় পরিপূর্ণ ছিলেন। কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে প্রথমে এমবিবিএস ও পরে এমডি করেন। এরপর পড়াশোনার জন্য লন্ডনে যান। সেখান থেকে ডাঃ রায় এমআরসিপি এবং এমআরসিএস-এর মতো ডিগ্রি অর্জন করে ফিরে আসেন। তখন খুব কম ডাক্তারই এত শিক্ষা অর্জন করতে পেরেছিলেন।
বাংলার উন্নয়নে বিরাট অবদান
ডঃ বিধান চন্দ্র রায় যেমন একজন মহান চিকিৎসক ছিলেন, তেমনি একজন মহান রাজনীতিবিদও ছিলেন। তাকে বাংলার স্রষ্টাও বলা হয়। মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে ডক্টর রায় বাংলায় অনেক বড় বড় শিল্প স্থাপনের পাশাপাশি বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শুরু করেছিলেন। ডঃ রায় নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তিনি মহাত্মা গান্ধী এবং জওহরলাল নেহরুরও ভালো বন্ধু ছিলেন। স্বাধীনতার পর প্রধানমন্ত্রী নেহেরু ডঃ রায়কে উত্তর প্রদেশের গভর্নর করেন কিন্তু তিনি সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ডঃ প্রফুল্ল চন্দ্র ঘোষের পদত্যাগের পর ১৯৪৮ সালে ডঃ রায়কে মুখ্যমন্ত্রী করা হয়।
ব্যক্তিগত জীবন
ডাঃ বিধান চন্দ্র রায় ১৮৮২ সালের ১ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ১ জুলাই ১৯৬২ সালে মারা যান। ডঃ রায়ের প্রথম জীবন কেটেছে অনেক বঞ্চনার মধ্যে। তিনি সাধারণত কলেজের লাইব্রেরি থেকে বই নিয়ে পড়াশোনা করতেন। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সময় মাত্র একবার বই কিনেছিলেন ৫ টাকায়। তিনি বিহারের পাটনার বাঁকিপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সারা জীবন বিয়ে না করে সারা জীবন মানব সেবায় নিয়োজিত করেন। আজও বিশ্ব সেরা বাঙালি চিকিৎসক হিসেবে ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে তাঁর নাম।