বড়দের মতই কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগায় শিশুদেরও। এবিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই খাদ্যতালিকায় সঠিক পরিবর্তন, জলের সঠিক পরিমাণ এবং মানসিক চাপ কমানো—এই তিন উপাদানে মিলতে পারে স্থায়ী সমাধান।

শিশুর ছোট থেকে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় চিন্তিত অনেক অভিভাবকেরাই। বাচ্চারা স্নানঘরে ঢুকতেই, কান্নাকাটি জুড়ে দেয়। এমতাবস্থায় ছোটদের চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ খাওয়াতে হয়। কখনও সেই ওষুধেও দেখা যায় তেমন লাভ হচ্ছে না। তখন নিতে হয় অন্য পন্থা। এ বিষয়ে বিশেষ পরামর্শ দিচ্ছেন মুম্বইয়ে করিনা কাপুরের পুষ্টিবিদ রুজুতা দিবেকর।

কোষ্টকাঠিন্য বিষয়টি শিশুদের কাছে কষ্টকর, তাদের যদি এ নিয়ে বকাবকি করা হয় বা জোর করে সমানঘরে বিষিয়ে রাখা হয় এই বলে, যে পেট পরিষ্কার না হলে বেরোনো যাবে না স্নানঘর থেকে, এতে তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়। এই সমস্যার সমাধানে রজুতা বলেন খাদ্যাভ্যাসের উপর নজর দিতে। পাতে ফাইবারযুক্ত খাবারের অভাব হজম ব্যবস্থা দুর্বল করে, তাতে মলত্যাগের সমস্যাও বেশি হবে।

১. ঘি

রুজুতার পরামর্শ অনুযায়ী, প্রতিদিন সকালে, দুপুরে ও রাতে এক চামচ করে ঘরে তৈরি খাঁটি ঘি শিশুর খাবারে মেশাতে হবে। ঘি অন্ত্রের স্বাস্থ্য ঠিক রাখে এবং মলত্যাগের প্রক্রিয়া সহজ করে। এটি দীর্ঘস্থায়ী ওষুধের চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর ও প্রাকৃতিক।

২. ফল, বিশেষত কলা

ফল শুধু ভিটামিনের উৎস নয়, ফাইবারেরও বড় ভাণ্ডার। জলখাবারে, স্কুল থেকে ফেরার পরে বা বিকেলে খেলে ফেরার পর বাচ্চার পছন্দের যেকোনো মরশুমি ফল খাওয়ান।

বিশেষ করে পেট পরিষ্কারের জন্য কলা খুবই ভাল। প্রতিদিন দুপুরে খাবার খাওয়ার পরে অন্তত আধখানা করে হলেও কলা খাওয়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন করিনার পুষ্টিবিদ।

৩. জল

অভিভাবকদের লক্ষ্য রাখা উচিত, শিশুটি পর্যাপ্ত জল খাচ্ছে কি না। বয়স অনুযায়ী প্রতিদিন যতটা জল প্রয়োজন, তা ঠিকমতো না খেলেও কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। তাই খাবার ও ফলের পাশাপাশি সঠিক হাইড্রেশন অপরিহার্য।

কোন খাবারে নিয়ন্ত্রণ জরুরি?

কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমাতে হলে চকোলেট, কুকিজ়, চিপ্‌স -গুলোর মতো ফাস্ট ফুড খাওয়া নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে বাচ্চার। নাহলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে। এক সপ্তাহে মাত্র একটি 'ট্রিট ফুড' খেতে দেওয়া যেতে পারে। যেমন, এক সপ্তাহে কুকিজ দিলে, চিপস বা চকলেট নয়। পরের সপ্তাহে চিপস দিলে, কুকিজ বা চকলেট বাদ। এই নিয়মে চললে পেটের স্বাস্থ্যও থাকবে ঠিকঠাক, আবার শিশুও তার প্রিয় খাবার থেকে পুরো বঞ্চিত হবে না।