- Home
- Lifestyle
- Parenting Tips
- বাচ্চাদের হোস্টেলে রাখা কি ঠিক? কেন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয় জেনে নিন এর কারণ
বাচ্চাদের হোস্টেলে রাখা কি ঠিক? কেন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয় জেনে নিন এর কারণ
- FB
- TW
- Linkdin
বাচ্চাদের জন্য শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষা একজনকে সুশিক্ষিত করে তোলে। বর্তমান সময়ে, বাবা-মায়ের চাকরির জন্য এবং অন্যান্য কারণে বাচ্চাদের বাড়িতে লালন-পালন করা কঠিন হয়ে পড়ে। বাচ্চাদের পড়াশোনায় বাবা-মায়ের সাহায্য প্রয়োজন। তাই কিছু বাবা-মা তাদের বাচ্চাদের হোস্টেলে পাঠিয়ে দেন।
সকালে বাচ্চাকে ঘুম থেকে তুলে পড়াশোনা করানো, তাদের সময়মতো খাবার দিয়ে স্কুলে পাঠানো বাবা-মায়ের দায়িত্ব। স্কুল থেকে ফিরে টিউশনে পাঠানো বাচ্চার পড়াশোনার উন্নতি করে। বাচ্চাদের পড়াশোনা থেকে মনোযোগ সরিয়ে নেওয়া বিষয়গুলো ঠিক করতে হবে।
বিশেষ করে দশম, দ্বাদশ শ্রেণীর বাচ্চাদের প্রতি বাবা-মায়ের অতিরিক্ত মনোযোগ দেওয়া উচিত, যা তাদের নম্বর বাড়াবে। এই চাপ সামলাতে না পেরে কিছু বাবা-মা বাচ্চার ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাদের হোস্টেলে পাঠিয়ে দেন। এর ফলে বাচ্চাদের পড়াশোনা ভালো হবে বলে বাবা-মা মনে করেন।
কিন্তু বাচ্চাদের হোস্টেলে পড়াশোনা করানো তেমন ভালো সিদ্ধান্ত নয়। বাচ্চাদের বাড়িতেই লালন-পালন করা উচিত। বাবা-মায়ের কাজকর্ম দেখে বড় হওয়া বাচ্চারা তাদের কষ্ট, ক্ষতি বুঝতে পারে। বাবা-মাকে দেখে বাচ্চারা তাদের ব্যক্তিত্ব গড়ে তোলে। বাবা-মায়ের ভালোবাসা এবং আদর পেয়ে বড় হওয়া বাচ্চারা নিরাপদ বোধ করে।
বাচ্চাদের বাবা-মায়ের ভালোবাসা এবং যত্ন প্রয়োজন। তাদের সাথে থাকার ইচ্ছা বাচ্চাদের মনে জাগ্রত হয়। বাবা-মায়ের সাথে মাঝেমধ্যে বাইরে বেড়াতে যেতে পারে। বাচ্চা এবং বাবা-মায়ের মধ্যে ভালো সম্পর্ক থাকে। হোস্টেলে বড় হওয়া বাচ্চাদের এই সুযোগ থাকে না
হোস্টেলে বড় হওয়া বাচ্চাদের নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হয়। অসুস্থ হলেও তাদের নিজের কাজ নিজে করতে হয়। খাবারও তেমনই। বাড়ির মতো হোস্টেলে খাবার এবং জলখাবার পাওয়া যায় না। বাড়ির স্বাধীনতা হোস্টেলে থাকে না। এভাবে নিয়ন্ত্রণে বড় হওয়া বাচ্চার ব্যক্তিত্বের ত্রুটি দেখা দেয় বলে মনে করা হয়।
হোস্টেলে বড় হওয়া বাচ্চারা বাইরের জগতের সাথে পুরোপুরি পরিচিত হয় না। কেউ কেউ খুব রাগী হয়ে যায়, আবার কেউ কেউ খুব নরম হয়ে যায়। বাড়িতে বড় হওয়া বাচ্চাদের মতো তারা জীবনযাপনের পদ্ধতি শিখতে পারে না।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হোস্টেলের বাচ্চারা স্বার্থপর হয়ে যায়। আত্মীয়-স্বজনদের প্রতি তাদের তেমন টান থাকে না। তাদের সম্মান করা উচিত বলে তারা মনে করে না। নিজের সম্পর্কে বেশি ভাবতে থাকে। অন্যের অনুভূতি নিয়ে তাদের কোনো চিন্তা থাকে না। বাচ্চাদের ব্যক্তিত্ব এবং স্বভাব হোস্টেল পরিবর্তন করে দিতে পারে।
হোস্টেলে এতগুলো ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও, অনিবার্য পরিস্থিতিতে বাচ্চাদের হোস্টেলে পাঠানো ভুল নয়। বাবা-মা তাদের পরিস্থিতি অনুযায়ী বাচ্চাদের হোস্টেলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তবে হোস্টেলে পাঠানোর ফলে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে তা ঠিক করার জন্য তাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
কিছু শহরে ভালো স্কুল বা শিক্ষা সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধা কম থাকে। কেউ কেউ বিদেশে বা অন্য শহরে থাকতে পারেন। কিছু বাড়িতে বাচ্চাদের লালন-পালনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ নাও থাকতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, বাবা অতিরিক্ত মদ্যপান করতে পারেন। বাবা-মায়ের একজন অনুপস্থিত থাকতে পারেন। এই ধরনের কারণে বাচ্চাদের হোস্টেলে পাঠানোয় কোনো ভুল নেই। অনিবার্য কারণে বাচ্চাকে হোস্টেলে পাঠানো গ্রহণযোগ্য। তবে যথাযথ কারণ ছাড়া বাবা-মা তাদের দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার জন্য বাচ্চাদের হোস্টেলে পাঠানো ঠিক সিদ্ধান্ত নয়। এটি বাচ্চাদের ভবিষ্যতের ক্ষতি করবে।