সংক্ষিপ্ত

শিশুদের হাতে পর্যাপ্ত টাকা দিয়ে তাদের আয় আর ব্যয় করা শেখাতে হবে। সংস্থাটি একাধিক সমীক্ষার পরই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে বাবা মায়ের উচিৎ সন্তানকে পর্যাপ্ত অর্থ দেওয়া - যা দিয়ে তারা কিছু কিনতে পারেন।

 

সাধারণত ভারতীয়রা শিশুদের হাতে টাকা দিয়ে চায় না। প্রাচীন বিশ্বাস অনুযায়ী শিশুদের হাতে টাকা দেওয়া হল সেই শিশুরা বদগুণের অধিকারী হয়। খারাপ হয়ে যায় বা তাদের জমানোর অভ্যাস তৈরি হয় না। খরচ করতেই অভ্যস্থ হয়ে পড়ে। অনেকে আবার মনে করেন শিশুদের হাতে টাকা দেওয়া হলে তাদের মধ্যে দায়িত্ববোধ তৈরি হয় না। কিন্তু শিশুদের হাতে টাকা দেওয়া বা না দেওয়া নয় আসল কথা নয়, সেই টাকা দিয়ে তাদের মধ্যে দায়িত্ববোধ তৈরি করাই আসল কথা। টাকা উপার্জন করা যে জীবনে জরুরি একটি বিষয় সেই চিন্তাভাবনাও তাদের মনের মধ্যে তৈরি করে দিতে হবে।

নেদারল্যান্ডের একটি সংস্থার মনে শিশুদের হাতে পর্যাপ্ত টাকা দিয়ে তাদের আয় আর ব্যয় করা শেখাতে হবে। সংস্থাটি একাধিক সমীক্ষার পরই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে বাবা মায়ের উচিৎ সন্তানকে পর্যাপ্ত অর্থ দেওয়া - যা দিয়ে তারা কিছু কিনতে পারেন। কোথায় টাকা খরচ করা জরুরি তাও তাদের শিক্ষা দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। কী করে টাকা খরচ করা উতিৎ, আয়ের সঙ্গে ব্যায়ের সামঞ্জস্য রাখা উচিৎ- এই শিক্ষা শিশুদের ছোট দেওয়া দেওয়া ভাল। এটি অভ্যাসে পরিণত করতে পারলে তবেই শিশুরা বেহিসেবী হয় না।

সংস্থাটির মতে শিশুদের হাতে টাকা দিলেও তার ওপর বাবা ও মায়ের পর্যাপ্ত নজর রাখতে হবে। সন্তান টাকা কোথায় খরচ করছে সেই বিষয়ে জানতে হবে। অপ্রয়োজনীয় খরচের দিকে যাতে সন্তানের ঝোঁক না বাড়়ে তারজন্য অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে হবে। সন্তানকে বোঝাতে হবে।

কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে সব শিশুদের হাতে অনেক টাকা থাকে তারা মাদক সেবন, জুয়া খেলার এজাতীয় বাজে কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। হাতে প্রচুর টাকা থাকে তারা বড়দের সম্মান করতে পারে না। তাই সেই দিকে পরিবারের সদস্যদের নজর দিতে হবে।

একটি গবেষণা রিপোর্ট বলা হয়েছে শিশুদের প্রাথমিক বিদ্যালয় পার করার আগে পর্যন্ত হাতে নগদ টাকা দেওয়া খুব একটা ভাল বিষয় নয়। তাতে শিশুদের স্বভাব খারাপ হয়ে যায়। টাকা শিশুদের তখনই দিতে হবে যখন তারা যোগ আর বিয়োগ সম্পর্কে অবগত হবে। শিশুদের লাভ-ক্ষতি সম্পর্কেও সাম্যক ধারনা থাকতে হবে। শিশুদের হাতে টাকা দিলেও তাকে শিখিয়ে দিতে হবে টাকা যেন পুরো খরচ না করে। প্রয়োজনের বাইরে টাকা খরচ করা ঠিক নয়।

তবে শিশুদের হাতে টাকা দেওয়ার পাশাপাশি তাদের টাকা জমানোর বিষয়েও সচেতন করতে হবে। প্রয়োজনে নানা ধরনের ভাঁড় বা টাকা জমানোর বাক্স কিনে দিতে হবে। তাহলেই শিশুটি টাকা মূল্য বুঝতে পারবে আর সঞ্চয়ী হবে।