Marriages Dementia Risk: 'বিয়ে' দুই অক্ষরের ছোট্ট শব্দ হলেও এর ভার কিন্ত প্রচুর। বিয়ে নিয়ে অনেকের অনেক স্বপ্ন থাকে। বিয়ে এমন একটা বন্ধন যেখানে দুই মেরুর বাসিন্দা একসঙ্গে সারাজীবন থাকার অঙ্গীকারবদ্ধ হন। বিয়ে যে সবার জীবনে সুখকর তা কিন্তু মোটেও নয়।
Marriages Dementia Risk: 'বিয়ে' দুই অক্ষরের ছোট্ট শব্দ হলেও এর ভার কিন্ত প্রচুর। এই বিয়ে নিয়ে অনেকেরই অনেক স্বপ্ন থাকে। বিয়ে এমনই একটা বন্ধন যেখানে দুই মেরুর বাসিন্দা একসঙ্গে সারাজীবন থাকার অঙ্গীকারবদ্ধ হন। তবে বিয়ে যে সবার জীবনে সুখকর তা কিন্তু মোটেও নয়। বিয়ের যেমন ভালো দিক আছে, তেমনই খারাপ দিকও আছে। তবে বিয়ে না করাই সবথেকে ভালো বলছে গবেষণা। কারণ জানলে অবাক হবেন আপনিও।
কেন বিয়ে করা মোটেও ভালো সিদ্ধান্ত নয়? জানতে সম্পূর্ণ প্রতিবেদন পড়ুন...
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে বিয়ে নামক সামাজিক বন্ধনের অপকারিতা। বিয়ে মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি—এই প্রচলিত ধারণা এখন চ্যালেঞ্জের মুখে। ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকদের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা গিয়েছে, অবিবাহিত—হোক সে কখনও বিয়ে না করা বা বিবাহবিচ্ছিন্ন—ব্যক্তিদের মধ্যে বিবাহিতদের তুলনায় ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম থাকতে পারে।
তবে এর আগে এর আগে, ২০১৯ সালের একটি গবেষণায় দেখা যায়—অবিবাহিতদের মধ্যে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বিবাহিতদের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি ছিল। ২০১৯ সালের সেই গবেষণা অনুসারে, অবিবাহিত ব্যক্তিরা ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে বিবাহিতদের তুলনায় অনেক বেশি ঝুঁকির সম্মুখীন ছিলেন। এবার নতুন গবেষণায় পাল্টে গেল সেই ছবি। গবেষণায় ২৪,০০০-এরও বেশি আমেরিকান নাগরিককে ১৮ বছরেরও বেশি সময় ধরে পর্যবেক্ষণ করেছে, তারপরই ফলাফলের ভিত্তিতে এই তথ্য উপস্থাপন করেছে।
বিয়ে হয়তো ততটা সুরক্ষামূলক নয়—ডিমেনশিয়া নিয়ে গবেষণায় নতুন পর্যবেক্ষণ:-
এই বিষয়ে গ্লেনইগলস বিগিএস হাসপাতালের নিউরোলজিস্ট ড. অবিনাশ কুলকর্ণি জানান, দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক মেলামেশাকে মানসিক অবক্ষয় প্রতিরোধে একটি সুরক্ষামূলক উপাদান হিসেবে ধরা হলেও, বিষয়টিকে সরলীকরণ করা উচিত নয়। তিনি বলেন, “প্রতিটি সম্পর্কের নিজস্ব একটি আবেগীয় পরিবেশ থাকে। শুধুমাত্র বিয়ে করলেই কেউ মানসিক সমস্যার হাত থেকে সুরক্ষিত থাকবেন—এটা ভাবা ঠিক নয়।”
তিনি আরও জানান, সাম্প্রতিক গবেষণাটি আসলে “মিশ্র ফলাফল” দিয়েছে, যেখানে বিবাহিত জীবনের সঙ্গে ডিমেনশিয়ার সরাসরি সম্পর্ক স্পষ্ট নয়। তার ভাষায়, “গবেষণাটি স্পষ্টভাবে বলে না যে বিয়ে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি তৈরি করে, বরং এটা দেখায় যে বিয়ে হয়তো আগের মতো ততটা সুরক্ষামূলক নয় যতটা আমরা ভাবতাম।”
আমেরিকান গবেষণার ফলাফল ভারতের প্রেক্ষাপটে প্রয়োগ করা জটিল:-
ড. অবিনাশ কুলকর্ণি আরও জানান, আমেরিকা ভিত্তিক এই গবেষণার তথ্য ভারতীয় বাস্তবতার সঙ্গে সরাসরি মিলিয়ে দেখা কঠিন। তার পর্যবেক্ষণ, ভারতে ডিমেনশিয়া তুলনামূলকভাবে বেশি দেখা যায় বিবাহিত নারীদের মধ্যে। বিশেষ করে সেইসব নারীদের ক্ষেত্রে, যাঁরা পরিবার কেন্দ্রিক ভূমিকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকেছেন। এবং ব্যক্তিগত উন্নয়ন বা পেশাগত জীবন গড়ে তুলতে পারেননি। তিনি বলেন, “আবেগীয় অতৃপ্তি বা অপূর্ণতার অনুভূতি মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।”
বিয়ে নয়, জীবনধারাই প্রভাব ফেলে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যে—মত বিশেষজ্ঞের:-
ডিমেনশিয়ার ঝুঁকির সঙ্গে বিয়ে সরাসরি যুক্ত নয়। বরং বিবাহিত বা অবিবাহিত জীবনে একজন ব্যক্তি কীভাবে জীবনযাপন করছেন, সেটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, “বিয়ে একটি সামাজিক গঠনমাত্র, এটি সরাসরি ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি নির্ধারণ করে না। বরং মানসিক চাপ, দৈনন্দিন সক্রিয়তা এবং আবেগীয় সুস্থতা, এই জীবনধারার উপাদানগুলোই মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে।”
তিনি আরও জানান, বিশেষ করে পশ্চিমা সমাজে সামাজিক মানসিকতার পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেকেই অবিবাহিত থাকার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। যা ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, শক্তিশালী সামাজিক যোগাযোগ এবং আত্মউন্নয়নের আরও বেশি সুযোগ এনে দিচ্ছে। এই উপাদানগুলো ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমাতে সহায়ক হতে পারে বলেও তিনি মত প্রকাশ করেন।
প্রসঙ্গত, শুধুমাত্র বিয়ে করলেই ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমে যাবে—এই ধারণা যথেষ্ট নয়। সম্পর্কের মান, বিবাহবিচ্ছেদের পর একজন ব্যক্তি কেমন অনুভব করছেন, সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট এবং অবিবাহিতদের সামাজিক যোগাযোগ কতটা দৃঢ়—এসব বিষয়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
গবেষণাটি শেষ পর্যন্ত এই বার্তাই দেয় যে, সম্পর্কের অবস্থান নয়, বরং একজন ব্যক্তি কতটা আবেগীয়ভাবে পূর্ণতা ও সহায়তা অনুভব করছেন, সেটাই মস্তিষ্কের সুস্থতার জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। ফলে গবেষণায় প্রভাবিত না হয়ে বিয়ে করুন নিশ্চিন্তে।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।


