প্রেম হোক বা বন্ধুত্ব, মতবিরোধ সব সম্পর্কেই হবে। অনেকক্ষেত্রেই দেখা যায়, ঝামেলা মেটাতে গিয়ে বা ক্ষমা চাইতে গিয়ে উলটে নতুন করে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন। এড়িয়ে চলতে হবে কিছু ভুল।

সম্পর্ক মানেই পারস্পরিক বোঝাপড়া, শ্রদ্ধা ও সহানুভূতির মেলবন্ধন। সেখানে মতবিরোধ থাকতেই পারে, কিন্তু সেই বিরোধ কাটিয়ে সম্পর্ক আরও মজবুত করে তুলতে গেলে ক্ষমা চাওয়া জরুরি। এটাই সম্পর্কের শক্তিশালী অস্ত্র — যদি তা সঠিক সময়ে, সঠিক উদ্দেশ্যে এবং সঠিক ভঙ্গিতে করা যায়। ভুলভাবে ক্ষমা চাওয়া বা মন থেকে না চেয়েও দুঃখপ্রকাশ সম্পর্ককে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করে তুলতে পারে। চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক এই সমস্যা এড়িয়ে চলার উপায়।

খেয়াল রাখবেন যে বিষয়গুলো -

১। আগে নিজের মন বুঝুন

ক্ষমা চাইতে চাওয়ার কারণটা নিজেকে স্পষ্ট করে জিজ্ঞেস করুন। আপনি কি সত্যিই দুঃখিত, নাকি শুধু সম্পর্কের চাপ কমাতে ‘সরি’ বলছেন? যদি মন থেকে অনুশোচনা না থাকে, তাহলে সেই ক্ষমার কোনও মূল্যই থাকবে না।

২। তাড়াহুড়ো করবেন না

সম্পর্কে ঝগড়া বা মনোমালিন্যের পর সঙ্গে সঙ্গেই সব ঠিক করে ফেলার চেষ্টা করবেন না। দু’জনেই শান্ত হয়ে পরিস্থিতি বুঝে কথা বলুন। তা না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।

৩। ক্ষমার সঙ্গে ‘কিন্তু’ ব্যবহার করবেন না

‘আমি দুঃখিত, কিন্তু…’ — এই ধরনের বাক্য ক্ষমা নয়, আত্মপক্ষ সমর্থনের মতো শোনায়। এতে সম্পর্ক আরও দূরে সরে যেতে পারে।

৪। দোষী কে, সেটা নয় — সম্পর্কটা গুরুত্বপূর্ণ

আপনি ঠিক, সঙ্গী ভুল — এই বিচার না করে আগে ভাবুন, কথায় বা আচরণে আপনি সঙ্গীকে কষ্ট দিলেন কি না। সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হলে “কী ঠিক, কী ভুল” নয়, বরং “কে কষ্ট পেল” সেটা বোঝা জরুরি।

৫। প্রত্যুত্তরের জন্য নয়, বোঝার জন্য শুনুন

ক্ষমা চাইলেই সঙ্গী সঙ্গে সঙ্গে মানিয়ে নেবে — এমনটা ভাবা ভুল। তিনি হয়তো তার কষ্টগুলো আপনার সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাইবেন। তখন মন দিয়ে শুনুন, প্রতিক্রিয়া দেওয়ার জন্য নয়, বরং তার অনুভূতি বোঝার জন্য।

৬। এক ‘সরি’তে সব মিটে যাবে ভাববেন না

অনেকক্ষেত্রেই সম্পর্কের সমস্যা অনেকদিনের জমে থাকা ক্ষোভ বা আঘাত থেকে তৈরি হয়। তাই একটা দুঃখপ্রকাশেই সব ঠিক হয়ে যাবে — এই ভ্রান্ত ধারণা রাখবেন না। বরং এটিই হতে পারে দীর্ঘ আলাপের শুরু।

৭। ‘ক্ষমা চাওয়া’ মানেই কাজ শেষ নয়

ক্ষমা চাওয়ার উদ্দেশ্য হওয়া উচিত সম্পর্ককে মেরামত করা, প্রশংসা পাওয়া নয়। যদি ‘আমি তো ক্ষমা চেয়েছি, এখন আমাকে ভালোবাসতেই হবে’ — এই মনোভাব নিয়ে ক্ষমা চান, তাহলে সেটা হবে একপ্রকার চাপ তৈরি করা, যা সম্পর্কের পক্ষে ক্ষতিকর।