বড়সড় হোক বা ছোটখাটো, প্রতারণার শিকার অনেকেই। এর পিছনে লুকিয়ে অনেক কারণ - যেগুলি আপাত দৃষ্টিতে তেমন গুরুত্বপূর্ণ না হলেও একটা সম্পর্ক ভাঙার জন্য যথেষ্ট।
ভালবাসা ও ভরসা — একটি সম্পর্কের মূল ভিত্তি। অথচ সেই ভালোবাসার আড়ালে যখন গোপনে বেড়ে ওঠে প্রতারণা, ঠকে যায় ভালোবাসার মানুষ। এ এক যন্ত্রণাদায়ক অভিজ্ঞতা, যা মানসিক এবং শারীরিক ভীতকেও নাড়িয়ে দিয়ে যায়।
তবে আজকালকার যুগে প্রেমে প্রতারণা নতুন কিছু নয়। বড়সড় হোক বা ছোটখাটো, ঠকেছেন অনেকেই। কত সমস্যারই তো সমাধান বার করে নিয়েছে আধুনিক মানুষ। কিন্তু এই প্রতারণা কি কোনও ভাবেই আটকানো যায় না?
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতারণার পিছনে লুকিয়ে অনেক কারণ - যেগুলি আপাত দৃষ্টিতে তেমন গুরুত্বপূর্ণ না হলেও একটা সম্পর্ক ভাঙার জন্য যথেষ্ট। আত্মবিশ্বাসের অভাব থেকে শুরু করে একাকিত্ব, একঘেয়েমি, সমাজমাধ্যমের সহজলভ্যতা, এমনকি সম্পর্কের আধুনিকীকরণ মানুষের মধ্যে প্রতারণার প্রবণতা তৈরি করে।
যে কারণগুলিতে প্রতারণার প্রবণতা তৈরি হতে পারে -
১। আত্মবিশ্বাসের অভাব
যখন মনের মধ্যে নিজের প্রতি বিশ্বাস ফুরিয়ে যায়, নিজের কাছে বা সঙ্গীর কাছে যথেষ্ট বা গুরুত্বপূর্ণ মনে না হয়, তখন তৃতীয় কারও কাছ থেকে প্রশংসা বা গুরুত্ব পেতে চায় মন। কিন্তু তৃতীয় ব্যক্তি সেই ব্যক্তির সবটা তো জানে না। ফলে সুবিধা হয় কথা বলা শুরু করতে। কিন্তু শুরুতেই সঙ্গীর সঙ্গে কথা বলে নিলে এই প্রতারণার অবকাশ তৈরি হত না।
২। একঘেয়েমি ও নতুনত্বের খোঁজ
সম্পর্ক পুরনো হয়ে গেলে রোমাঞ্চ কমে যেতে পারে।তখন নতুন কারও প্রতি আকর্ষণ হয়। এই “নতুন কিছু চাই” মানসিকতা অনেকসময় প্রতারণার দিকে ঠেলে দেয়। কিন্তু সে মুহূর্তেই সঙ্গীর সঙ্গে সব কথা ভাগ করে নিলে আর সমস্যা হয় না।
৩। একাকিত্ব
সঙ্গী পাশে থেকেও অনুপস্থিত মনে হওয়া।জীবনের কঠিন সময়ে সহানুভূতির খোঁজে অন্য কারও আশ্রয় নেওয়া। এই মানসিক সংযোগটাই পরবর্তী সময়ে গভীর প্রতারণার রূপ নেয়। সব সময়ই যে শারীরিক সম্পর্ক মানেই প্রতারণা করা, তা নয়। লুকিয়ে কথা বললেও সঙ্গীকে ঠকানো হয়।
৪। মানসিক বিচ্ছিন্নতা
প্রতারণা করা মানেই সম্পর্কে ভালবাসা কমে যাওয়া নয়, বরং হতে পারে বোঝাপড়ার অভাব, মানসিক সংযোগের অভাব। অনেকের মনে হতে পারে সঙ্গীর থেকে যথেষ্ট ভালবাসা পাচ্ছেন না, বা সঙ্গী তার দিকে ভাল ভাবে তাকান না, অথবা প্রয়োজনের সময়েও সঙ্গী পাশে দাঁড়িয়ে সহানুভূতিশীল হতে পারেন না, তখনই অন্য মানুষের দরকার পড়ে।
৫। সামাজিক পরিবর্তন ও বহুগামিতা
আধুনিক সমাজে একগামিতা, বহুগামিতা নিয়ে চর্চা বিতর্ক বেশ। অনেকেই মনে করছেন, একসঙ্গে একাধিকের সঙ্গে সম্পর্ক রাখলে তিনি ভাল থাকবেন। কিন্তু সমস্যা হল, যে মুহূর্তে বহুগামিতায় গোপনীয়তা চলে আসে, তা তো আর বহুগামিতা থাকে না। তা কেবলই প্রতারণা হয়ে থেকে যায়। তাই সামাজিক পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে চলতে গেলে কমিউনিটিতে কথাবার্তা বলা উচিত।
৬। ডিজিটাল যুগ ও সমাজমাধ্যম
অনলাইনে মানুষের সহজলভ্যতা, ডেটিং অ্যাপ ও ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে আগ্রহ জাগা ও গোপনে কথা বলা - সবেতেই মানুষের কাছে বিকল্প অনেক বেশি। আর এখানে থেকেই প্রতারণার সূত্রপাত।
