সংক্ষিপ্ত
পরিচিত যে সকল ব্লাড গ্রুপগুলি রয়েছে অর্থাত 'এবিও' ব্লাড গ্রুপ সিস্টেম থেকে প্রকৃতিগতভাবে অনেকটাই আালাদা বম্বে ব্লাড গ্রুপ। এই ব্লাড গ্রুপে কোনও অ্যান্টিজেন তৈরি হয় না কিন্তু অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। ফলে একই ব্লাড গ্রুপের ব্যক্তি ছাড়া কেউ এই গ্রুপের রক্তের বাহকদের রক্তদান করতে পারে না।
সম্প্রতি ফের বম্বে ব্লাড গ্রুপের অভাবে কলকাতার বুকে ভুগতে হয়েছে এক সদ্যজাত শিশুকে। এ এক বিরল রক্তের গ্রুপ। ১০ লক্ষ মানুষের মধ্যে ৪ জনের দেহে মেলে। তার চেয়েও বড় সমস্যা হল এই ব্লাড গ্রুপ থাকা ব্যক্তিদের একই গ্রুপের রক্ত ছাড়া আর কোনও গ্রুপের রক্ত দেওয়া যায় না এই বিরল ব্লাড গ্রুপের রোগীদের। কাজেই এই ব্লাড গ্রু সম্পর্কে জেনে রাখা জরুরি।
পরিচিত যে সকল ব্লাড গ্রুপগুলি রয়েছে অর্থাত 'এবিও' ব্লাড গ্রুপ সিস্টেম থেকে প্রকৃতিগতভাবে অনেকটাই আালাদা বম্বে ব্লাড গ্রুপ। এই ব্লাড গ্রুপে কোনও অ্যান্টিজেন তৈরি হয় না। এই অ্যান্টিজেনই কিন্তু অন্যান্য গ্রুপের রক্তে রোগ প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরি করে। বম্বে গ্রুপের রক্তে অ্যান্টিজেন না থাকলেও অ্যান্টিবডি থাকে।
মুশকিল হল, এই অ্যান্টিবডি এ, বি কিংবা ও গ্রুপের রক্তে উপস্থিত অ্যান্টিজেনগুলিকেও ক্ষতিকর হিসেবেই মনে করে। ফলে অন্য গ্রুপের রক্ত বম্বে ব্লাড গ্রুপ থাকা রোগীর দেহে প্রবেশ করলেই অ্যান্টিজেন-প্রতিরোধী প্রতিক্রিয়া হয়। তাই এই বিরল গ্রুপের রক্ত যাদের আছে তারা বাকিদের সবাইকে রক্ত দিতে পারলেও তাদের থেকে রক্ত নিতে পারে না। এমনকী সর্বজনীন জাতা হিসেবে পরিচিত 'ও পজিটিভ' গ্রুপের ব্লাডও দেওয়া যায় না।
এর অদ্ভুত নামের পিছনে একটি কাহিনি রয়েছে। ১৯৫২ সালে তৎকালীন বম্বে শহরে এক রোগীর চিকিৎসা করতে গিয়ে ডা. ওয়াই এম ভেন্দে প্রথম এই রক্তের গ্রুপের সন্ধান পেয়েছিলেন। সেই রোগীর রক্তের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু, সব গ্রুপের রক্তেই তার দেহে অদ্ভুত প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল। সেই থেকেই একে বম্বে ব্লাড গ্রুপ বলা হয়।
এই রক্তের গ্রুপ এতটা বিরল হওয়ার কারণে প্রয়োজনের সময় এই রক্ত খুঁজে পাওয়াটা সমস্যার। একই সঙ্গে সাধারণভাবে রক্ত পরীক্ষা করতে গিয়ে ব্বে ব্লাড গ্রুপ-কে ও পজিটিভ বলে ভুল হতে পারে। এই কারণেই এই বিরল ব্লাড গ্রুপ থাকা ব্যক্তিদের তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলাটা অত্যন্ত জরুরি। গত কয়েক বছর ধরেই পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য দপ্তর এই বিষয়ে একটি কেন্দ্রীয় তথ্য ভাণ্ডার গড়ে তোলার কথা বলেছে।
করব-করছি করে এখনও তা করতে না পারায় খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। কলকাতার কয়েকটি ব্লাড ব্যাঙ্কে বম্বে ব্লাড গ্রুপ থাকা ব্যক্তিদের বিক্ষিপ্ত তথ্য থাকলেও সার্বিক কোনও ডাটা ব্যাঙ্ক এখনও নেই। সর্বভারতীয় স্তরে অবশ্য বম্বে ব্লাড গ্রুপ সংক্রান্ত এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আছে। তাদের তথ্য অনুযায়ী সারা দেশে অন্তত সাতশো জন বম্বে ব্লাড গ্রুপের দাতা রয়েছেন।