সংক্ষিপ্ত
- পাকিস্তানে ইমরান খানের দিন প্রায় শেষ হয়ে এল
- সরকারের গুরুত্বপূর্ণ জায়গার দখল নিয়েছে সেনাবাহিনী
- অর্থনৈতিক মন্দা, জিনিসপত্রের আকাশ ছোঁয়া দাম, দুর্নীতি
- সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে জনপ্রিয়তা এখন তলানিতে পৌঁছেছে
ইমরান খান এখনও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদে আছেন ঠিকই তবে দেশ চালাচ্ছে সেনাবাহিনী। রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থা, বিদ্যুৎ নিয়ামক সংস্থা, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ইমরানের লোকজনকে সরিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন সেনাবাহিনী লোকজন। মূলত সরকারের গুরুত্বপূর্ণ নীতি নির্ধারণের ক্ষমতা পাকিস্তান সেনা নিজেদেরে হাতে তুলে নিয়েছে।
তেহেরেকি ইনসাফ পাকিস্তান পার্লামেন্টের ৪৬ শতাংশ আসন দখল করলেও ইমরান খানকে মসনদে বসেতে বেশ কয়েকটি ছোট দলের সঙ্গে জোট করতে যেমন, তেমনই সেনাবাহিনীর সহায়তা নিতে হয়েছিল।
ক্ষমতায় টিকে থাকতে গোড়া থেকেই দেশটির প্রাক্তন ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তারাই ছিলেন রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে। পারভেজ মুশাররফের মন্ত্রিসভায় ছিলেন এমন অন্তত ১২ জন সদস্য আছেন ইমরান খানের সরকারে, তারা যে সেনাবাহিনীর অনুগত সে কথা বলাই বাহুল্য। এর মধ্যে রয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ইজাজ শাহ ও ইমরান খানের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা আব্দুল হাফিজ শেখ।
দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে শুরুর দিকে ঘনিষ্ঠতা থাকলেও ক্রমশই তাতে ফাটল ধরেছে। এর ওপর দিনকাল খুব খারাপ হয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট মাঠের জনপ্রিয় তারকা থেকে প্রধানমন্ত্রী হওয়া ইমরানের।
একদিকে অর্থনৈতিক মন্দা এবং জিনিসপত্রের আকাশ ছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধির জেরে পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের ক্ষোভ, একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ইমরানের একাধিক ঘনিষ্ঠ সহযোগীর বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ- সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষকে নতুন পাকিস্তান গড়ার স্বপ্ন দেখিয়ে পাকিস্তানের সিংহাসনে বসা ইমরানের জনপ্রিয়তা খুব দ্রুত নিম্নমুখী।
ইমরান খানের সরকার পরিচালনায় সেনাবাহিনীর ভূমিকা বেশ জোরালোভাবে প্রকাশ হতে শুরু করে গত মার্চে। পাকিস্তানে করোনার বিস্তার ব্যাপক হলে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানানোর পরদিনই দেশটির সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লকডাউন ঘোষণা করেন।
প্রত্যেকদিন করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফিংয়ের নেতৃত্বে থাকে সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখা। এমনকি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও থাকে সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখার লোগো এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তার নাম।
এছাড়া গত ৬৮ বছরের মধ্যে এবারই পাকিস্তানের অর্থনীতির রেকর্ড সংকোচন। চলতি মাসে আর্থিক বছর শেষে দেশটির অর্থনীতি দেড় শতাংশ সংকুচিত হতে পারে বলে পূর্বাভাষ দিয়েছে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। পাকিস্তানের অর্থনীতি ক্রমশই ঋণগ্রস্ত।
পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা প্রশ্নাতীত। সাত দশকের ইতিহাসের একটা দীর্ঘ সময় সেনা শাসনেই থেকেছে পাকিস্তান। ফের সরকারি নীতিনির্ধারণে সেনাবাহিনীর সক্রিয়তাইয় দূর থেকে ইমরান খানের বিদায় ঘণ্টার শব্দ শোনা যাচ্ছে।