সংক্ষিপ্ত
রিপোর্ট দেখে শিউরে উঠেছেন তামাম বিশ্বের সাধারণ মানুষ। রিপোর্টে বলা হয়েছে ভয়ঙ্কর পরিণতি কীভাবে হয়েছিল ওই ব্যক্তির।
শ্রীলঙ্কান ম্যানেজারকে(Sri Lankan factory manager) পাকিস্তানে (Pakistan) নির্মমভাবে পিটিয়ে মারার ঘটা প্রকাশ্যে আসতেই বিশ্ব জুড়ে নিন্দার ঝড়। এবার সামনে এল ওই ম্যানেজারের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট(postmortem report)। সেই রিপোর্ট দেখে শিউরে উঠেছেন তামাম বিশ্বের সাধারণ মানুষ। রিপোর্টে বলা হয়েছে ভয়ঙ্কর পরিণতি কীভাবে হয়েছিল ওই ব্যক্তির। তাকে চরম মাত্রায় নির্যাতন করা হয়েছিল এবং তার মাথার খুলি এবং শরীরের অন্যান্য হাড়েরও মারাত্মক ক্ষতি হয়েছিল, পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট প্রকাশ করে স্থানীয় মিডিয়া জানিয়েছে।
রিপোর্টে আরও জানানো হয়েছে একটি ভাঙা মাথার খুলি এবং পোড়া ক্ষত প্রমাণ করছে শ্রীলঙ্কান নাগরিক প্রিয়ন্তা দিয়াওয়াদানার শরীরের ৯৯ শতাংশ টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ARY নিউজ জানাচ্ছে তার মাথার খুলিতে একাধিক আঘাতের কারণে দিয়াওয়াদানার মৃত্যু ঘটে। তার শরীরের একটি পা ছাড়া সমস্ত হাড় ভাঙ্গা পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে চরম নির্যাতন দিয়াওয়াদানাকে মৃত্যুর আগে সহ্য করতে হয়েছিল।
দীর্ঘক্ষণ ধরে এই নারকীয় কাণ্ড চললেও, ধারেকাছে কোথাও পুলিশের দেখা পাওয়া যায়নি। পাক সংবাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, অনেক পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় বড় পুলিশ বাহিনী পাঠানো হয়। পাক পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী উসমান বুজদার (Usman Buzdar) ঘটনাটি 'খুবই দুঃখজনক' বলেছেন, এবং পুলিশের কাছ থেকে এই ঘটনার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন তলব করেছেন। বিষয়টি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছেন।
শিয়ালকোট পুলিশের পক্ষ থেকে এই ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। তবে, তদন্তে কতদূর কী হবে তা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে। ঘটনার পর, সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে বহু ব্যক্তিকে এই হত্যার দায় নিতে দেখা গিয়েছে। প্রসঙ্গত কয়েক বছর আগে পাকিস্তানে এই চরমপন্থী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু, ইমরান খান (Imran Khan) ক্ষমতায় আসার পর, তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান-এর উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন। তাঁর আমলে পাকিস্তানে ক্রমেই শক্তিশালী হচ্ছে চরমপন্থা।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন ডটকম জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার সকালে, শিয়ালকোটের ওয়াজিরাবাদ রোড এলাকায়। সেখানে এক স্পোর্টস ফ্যাক্টরিতে এক্সপোর্ট ম্যানেজার হিসাবে কাজ করতেন শ্রীলঙ্কান নাগরিক, ৪০-এর গোড়ায় বয়স। আর তাঁকে হত্যা করেছে, তাঁরই অধীনে কাজ করা কারখানার শ্রমিকরা।
কেন তাঁকে এরকম বর্বরের মতো হত্যা করল উন্মত্ত জনতা? শিয়ালকোট জেলার এক পুলিশ অফিসার, উমর সঈদ মালিক জানিয়েছেন, এর পিছনে পাকিস্তানের কট্টরপন্থী সংগঠন তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান বা টিএলপি (Tehreek-e-Labbaik Pakistan) দলের অনুগামীরা রয়েছে। তাদের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার জন্যই অকথ্য নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে তাঁকে এবং তারপর দেহটুকুও অবশিষ্ট না রেখে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।