সংক্ষিপ্ত

প্রথমে দেশের মাটিতে নিউজ়িল্যান্ডের কাছে হোয়াইটওয়াশ।

কয়েক মাসের মধ্যেই ভারতীয় ক্রিকেট দলের অবস্থা ভীষণই খারাপ। সে দেশের মাটি হোক কিংবা বিদেশের মাটি, কোনও জায়গাতেই টিকতে পারছেন না ভারতীয় ক্রিকেটাররা। সেইসঙ্গে, যে মানসিকতা নিয়ে তারা খেলছেন, তা নিয়েও রীতিমতো প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে।

ঠিক এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে, আরও একবার ঘরোয়া ক্রিকেটের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন কোচ গৌতম গম্ভীর। ঘরোয়া ক্রিকেটকে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে মনে করছেন ভারতীয় দলের কোচ।

প্রসঙ্গত, রঞ্জি ট্রফির দ্বিতীয় পর্ব শুরু হচ্ছে চলতি মাসেই। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা সেখানে একটি ম্যাচ খেলতে পারেন কি না, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল গৌতম গম্ভীরের কাছে।

ভারতের কোচ জানিয়েছেন, “আমি সবসময় চাই ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলুক সবাই। এখন ঘরোয়া ক্রিকেটকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। শুধু একটা ম্যাচ নয়। যারা আরও বেশি খেলতে পারবে এবং যাদের লাল বলের ক্রিকেটের প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে তাদের সকলেরই খেলা উচিত বেশ করে। যদি আপনি ঘরোয়া ক্রিকেটকে কোনওরকম গুরুত্ব না দেন, তাহলে টেস্ট ক্রিকেটে খেলার মতো ক্রিকেটার খুঁজে পাওয়া যাবে না।”

সম্প্রতি ভারতীয় ব্যাটাররা কোনও পিচেই ভালো করে খেলতে পারছেন না। দেশের পিচও তারা সঠিকভাবে চিনতে পারছেন না। নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে বেঙ্গালুরুতে পেস সহায়ক উইকেট বানানো হয়েছিল। সেখানে ভারতীয় ব্যাটাররাই উল্টে খেলতে পারেননি। মাত্র ৪৬ রানে অলআউট হয়ে যান। বাকি দুটি টেস্টে অবিশ্য ঘূর্ণি পিচ বানানো হয়েছিল।

কিন্তু ভারতীয় স্পিনাররা সেখানেও গড়পড়তা বোলিং করেন। সেখানে নিউজিল্যান্ডের স্পিনাররা টেক্কা দিয়ে বেরিয়ে যান। ঘরোয়া ক্রিকেট না খেলার কারণে, দেশের পিচ চিনতে ব্যাটারদের অসুবিধা হচ্ছে বলে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে। তবে শ্রেয়স আইয়ার, ঈশান কিশান, সূর্যকুমার যাদব, হার্দিক পান্ডিয়াদের নিয়মিত ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে দেখা যাচ্ছে।

তাছাড়া ঘরোয়া ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা ফেরাতে চায় বোর্ড। পাশাপাশি ক্রিকেটারদের ধারাবাহিকভাবে ম্যাচ খেলার মধ্যে রাখতে চায় তারা। তাই শুধু গম্ভীর নন, ভারতীয় বোর্ডের প্রাক্তন সচিব জয় শাহ পর্যন্ত কড়া সুরে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

কেউ কেউ সেটা শুনলেও, অনেকেই আবার উপেক্ষা করেছেন। কিন্তু গম্ভীর জমানায় কোনও অজুহাত শোনা হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।

সিডনির পিচে কোনও জুজু ছিল না বলে মনে করেন গম্ভীর। নাম না করেই দলের ব্যাটারদের দুষে চলেছেন তিনি। গম্ভীরের মতে, “সিডনির উইকেট খুবই ভালো হয়েছে। টেস্টের জন্য খুবই ভালো উইকেট। বোলার এবং ব্যাটার দুই বিভাগকেই যথেষ্ট সাহায্য করেছে। ব্যাটারদের অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে রান করতে। অবশ্য অতীতে সিডনির উইকেটের মতো এই পিচ ছিল না। টেস্টে ফলাফল হবে এমন উইকেটই হওয়া উচিত। তাই দেশে ফিরে আমরা পিচ নিয়ে আরও আলোচনা করব।”

রবিবার, ভারতীয় দল সিডনিতে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৬ উইকেটে পরাজিত হয়েছে। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের ইনিংস শেষ হয়ে যায় মাত্র ১৫৭ রানে। জয়ের জন্য ১৬২ রান তাড়া করতে নেমে ৬ উইকেটে জিতেছে অজিরা। আর ভারত সিরিজ়ে হারল ৩-১ ব্যবধানে।

এদিকে এই মন্তব্যের পর থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে কি অফ ফর্মে থাকা বিরাট-রোহিতের উদ্দেশ্যেই এমন হুঁশিয়ারি দিলেন গম্ভীর? উল্লেখ্য, মার্চ মাসের পর থেকে আর টেস্ট ক্রিকেট খেলেনি ভারত। দীর্ঘ ৬ মাস পর, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে লাল বলের অভিযান শুরু করেন রোহিতরা।

ওদিকে বাংলাদেশ সিরিজের আগে প্রত্যেক ক্রিকেটারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে। কিন্তু সেই নির্দেশ উড়িয়ে দিয়ে কার্যত, ছুটি কাটাতে ব্যস্ত ছিলেন বিরাট-রোহিতরা। যদিও জাতীয় দলের অনেককেই দলীপ ট্রফি খেলতে দেখা গিয়েছিল।

এদিকে গত দুই সিরিজে মোটামুটি সাফল্যও পেয়েছেন যশস্বী জয়সওয়াল এবং কে এল রাহুলরা। তবে কি এবার হেডস্যারের কড়া বার্তার পর হুঁশ ফিরবে বিরাট-রোহিতদের?

আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।