আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে (ICC Champions Trophy 20250 আর একদিন পর নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামবে ভারত।
গত ২০১৩ সালে, এই ট্রফি জেতে ভারত। কিন্তু ২০১৭ সালে ফাইনালে হারতে হয়েছিল পাকিস্তানের কাছে। কিন্তু এবার এই ট্রফি জেতার জন্য কার্যত ঝাঁপাতে চাইছেন রোহিত শর্মারা।
এটিই সম্ভবত শেষ আইসিসি মেগা ইভেন্ট রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলির। তাছাড়া রোহিত এবং কোহলি থাকায় ভারতের টপ অর্ডার ব্যাটিং লাইন-আপের যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে। তারা দুজন খেলতে পারলে বাকিদের উপর চাপ অনেকটাই কমে যাবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। অবশ্যই, এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চাইবে ভারত।
এই মুহূর্তে ভারতীয় ক্রিকেট দলে চারজন অলরাউন্ডার রয়েছেন। হার্দিক, অক্ষর, ওয়াশিংটন এবং জাদেজা। বাকি দলগুলির থেকে এই বিষয়ে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে ভারত। কারণ, তাদের হাতে অনেকগুলি বিকল্প রয়েছে। প্রথম একাদশে সুযোগ পাওয়ার বিষয়ে নিঃসন্দেহে এগিয়ে থাকবেন হার্দিক, অক্ষর এবং জাদেজা।
ফলে, এত অলরাউন্ডার থাকার সুবাদে কোনওদিন ব্যাটিং বা বোলিং বিভাগ খারাপ খেললে তা ভালোভাবেই সামাল দিতে পারবেন তারা। সেইসঙ্গে, ভালো মানের স্পিনারও রয়েছে টিম ইন্ডিয়ার হাতে। দুবাইয়ের পিচে স্পিনারদের ফর্ম কাজে আসতে পারে। দলে রয়েছেন বরুণ চক্রবর্তীর মতো স্পিনার। এছাড়াও অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ জাদেজা কিংবা অক্ষর প্যাটেল যে কোনও সময় ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন।
এমনকি, তারা যদি দলে নাও থাকেন, কুলদীপ যাদবও যথেষ্ট কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারেন বলে মত ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের। ফলে, স্পিন বিভাগে বাকিদের থেকে অনেকটাই এগিয়ে আছে ভারত। তাছাড়া পেস বোলার মহম্মদ শামি গত একদিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপে প্রথম চারটি ম্যাচে খেলেননি। তবুও প্রতিযোগিতার সবচেয়ে বেশি উইকেট ছিল মহম্মদ শামিরই দখলে।
বড় প্রতিযোগিতায় সবসময় নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যান শামি। চোট সারিয়ে ফেরার পর ভালো ফর্মেও দেখা গেছে তাঁকে। গোলে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও সেই ছবি দেখা যেতে পারে।
সম্প্রতি আগ্রাসী ক্রিকেট খেলা ভারতের মূলমন্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তৃতীয় একদিনের ম্যাচে তা আবারও প্রমাণিত। শুরুটা আগ্রাসী হলে গোটা ম্যাচেও তা বজায় রাখতে চাইছে তারা। ফলে, স্কোরবোর্ডে বড় রানও উঠছে। স্বাভাবিকভাবেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও রোহিতরা সেই ছন্দেই খেলতে চাইবেন।
অপরদিকে ভারতের দুর্বলতা যশপ্রীত বুমরার দলে না থাকা। তাঁর অনুপস্থিতি নিঃসন্দেহে ভারতের জন্য অনেক বড় ধাক্কা। শুরুতে, মাঝে এবং শেষে, ম্যাচের যে কোনও সময়ে উইকেট নিতে বুমরার অবদান কার্যত অনস্বীকার্য।
তাছাড়া ক্রিজে জমে যাওয়া জুটি ভাঙতে তিনি এমনিতেই অগ্রণী ভূমিকা নিয়ে থাকেন। এই কথা অস্বীকার করা যাবে না যে, বুমরার অভাব প্রতিযোগিতায় ভোগাতে পারে ভারতকে।
কিন্তু শামি ছাড়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে আর কোনও অভিজ্ঞ পেসার নেই। হর্ষিত রানা সবে দলে এসেছেন। আর্শদীপ সিং আবার একদিনের ক্রিকেটে খুব বেশি ম্যাচ খেলেননি। তবে হার্দিক পেস বোলিং করলেও, কখনোই দলের প্রধান বোলার তিনি নন।

অন্যদিকে, প্রয়োজনের তুলনায় বেশি স্পিনার রয়েছে ভারতীয় দলে। দুবাইতে দলের সঙ্গে গেছেন পাঁচজন স্পিনার। কিন্তু দুবাইয়ের মাঠে আবার স্পিনারদের ভূমিকা ক্রমশই যেন কমছে। পাটা উইকেটে বল ঘোরাতে গেলে যে দক্ষতা দরকার, তা এই স্পিনারদের কতটা রয়েছে তা নিয়ে অবশ্যই প্রশ্ন উঠতে বাধ্য।
স্পিনাররা যদি সাহায্যই না পান, তাহলে এতজনকে নিয়ে যাওয়ার কী দরকার? কেএল রাহুলের ফর্ম অনুযায়ী, তিনি দলের প্রথম উইকেটকিপার হতে চলেছেন। অর্থাৎ, প্রথম একাদশে জায়গা হবে না ঋষভ পন্থের। তবে ব্যাটার রাহুলের ফর্ম নিয়ে ভারতের যথেষ্ট চিন্তা থাকছে। আগের ম্যাচে করা ৪০ রান সাম্প্রতিককালে সর্বোচ্চ ইনিংস তাঁর। তিনি ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ হয়েছেন।
ওদিকে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিনটি একদিনের ম্যাচে ভারতের টপ অর্ডারই বেশি রান পেয়েছে। মিডল অর্ডারে থাকা রাহুল, হার্দিক এবং জাদেজা রান একেবারেই পাননি। অবস্থা এমন জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে যে, অক্ষরকে তুলে আনতে হয়েছে অনেকটাই উপরের দিকে।
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কাজ কিন্তু একেবারেই সহজ হবে না। কোনওদিন টপ অর্ডার ব্যর্থ হলে রাহুল কিংবা হার্দিককে ভালো খেলতে হবে। তবে সাম্প্রতিক ফর্মের বিচারে এই বিভাগটি নিয়ে যথেষ্ট চিন্তা থেকেই যাচ্ছে।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।
