স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডসের কলমে: সাধারণ ক্রিকেট ভক্তরা কিন্তু রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকেই (RCB) প্রথমবারের জন্য চ্যাম্পিয়ন হিসেবে দেখতে চাইছে। 

স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডসের কলমে: আইপিএলে গত মরশুমে রানার্স আপ সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদও সঠিক টিম কম্বিনেশন ধরে রাখে পারেনি এবং পরিস্থিতি বিবেচনা না করে ব্যাটিং করতে গিয়ে চলতি প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড় থেকে ছিটকে গেছে তারা। এদিকে লখনউ সুপার জায়ান্টস এবং গতবারের চ্যাম্পিয়ন কলকাতা নাইট রাইডার্সের ক্ষেত্রেও প্রায় একই কথা প্রযোজ্য।

আপাতত ২০২৫-এর আইপিএল ট্রফি জয়ের লড়াই এই মুহূর্তে ৫টি টিমের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। যার মধ্যে থেকে চারটি দল আইপিএল-এর প্লে-অফে জায়গা করে নেবে এবং তাদের মধ্যে থেকেই কেউ চ্যাম্পিয়ন হবে।

ক্রিকেট ভক্তদের বেশিরভাগই এবার নতুন কাউকে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে পেতে চাইছে

অর্থাৎ, আইপিএল-এর ইতিহাসে এর আগে ট্রফি জেতেনি তেমন কোনও দলের হাতেই ট্রফি দেখতে চাইছেন ক্রিকেট অনুরাগীরা।

লিগ টেবিলের প্রথম সাতটি দলের মধ্যে থাকা রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু, দিল্লী ক্যাপিটালস, পাঞ্জাব কিংস এবং লখনউ সুপার জায়ান্টস এখন‌ও পর্যন্ত আইপিএলে চ্যাম্পিয়ন হয়নি। এই তালিকায় থাকা মুম্বই ইন্ডিয়ান্স সর্বোচ্চ পাঁচবার আইপিএল ট্রফি ঘরে তুলেছে। যাদেরকে বিশেষজ্ঞরা এবারেও চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড়ে সবচেয়ে শক্তিশালী দল বলে মনে করছেন। আর ঠিক একইভাবে চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড়ে এগিয়ে রাখা হচ্ছে আইপিএল ২০২২-এর বিজয়ী দল গুজরাত টাইটান্সকেও।

এই চারটি দলের মধ্যে থেকে কোনও একটি দল চ্যাম্পিয়ন হলে, তাদের মাথায় প্রথমবারের মত আইপিএল-এর মুকুট উঠবে। কিন্তু তাদের সামনে কড়া চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে আইপিএলে প্রথম দল হিসেবে ১৫০টি ম্যাচ জেতা মুম্বই ইন্ডিয়ান্স।

এই মুহূর্তে মুম্বইয়ের খেলায় কোনোরকম দুর্বলতা দেখা যাচ্ছে না, তারা প্রতিটি ম্যাচে যেন আরও শক্তিশালী হয়েই খেলতে নামছে। টানা শেষ পাঁচটা ম্যাচ জিতেছে মুম্বই। 

দলে রোহিত শর্মা, সূর্যকুমার যাদব, হার্দিক পান্ডিয়া ও যশপ্রীত বুমরার মত ভারতীয় দলের তারকা তারকারা রয়েছেন এবং তারা যেভাবে খেলছেন তাতে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে ষষ্ঠ আইপিএল শিরোপা এনে দিতেই পারেন। তবে রোহিত শর্মার বিধ্বংসী ব্যাটিং নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও, ভারতীয় দলের এই মহাতারকা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ফর্মে ফিরে এসেছেন এবং শেষ কয়েকটি ম্যাচে তাঁর ব্যাট থেকে ভালো রান পেয়েছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স।

সূর্যকুমার যাদব ও তিলক ভার্মা মুম্বই ব্যাটিংয়ের অন্যতম দুই প্রধান স্তম্ভ। তাছাড়া প্রয়োজনের সময় ব্যাট এবং বলে পারফর্ম করে টিমকে সাহায্য করছেন অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া। তাদের কাঁধে ভর করেই চলতি আইপিএলের নকআউটে যোগ্যতা অর্জন করার দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে গেছে মুম্বই। এছাড়াও দক্ষিণ আফ্রিকার রায়ান রিকেলটন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে শুরুটা দারুণ করছেন। অলরাউন্ডার উইল জ্যাকসও বেশ ভালো ফর্মে আছেন।

দুই অভিজ্ঞ পেস বোলার যশপ্রীত বুমরা এবং ট্রেন্ট বোল্টের আগুনে অ্যাটাক দিয়ে যেমন উইকেট আসছে, তেমনই রান আটকে প্রতিপক্ষকে চাপেও ফেলে দিচ্ছেন তারা। তাদের যোগ্য সঙ্গত করছেন দীপক চাহার, মিচেল স্যান্টনার এবং উইল জ্যাকসরা।

তবে এই আইপিএলে বেঙ্গালুরু হল আরেকটি দল, যারা সমস্ত বিভাগে ভালো পারফর্ম করছে

ব্যাটিং এবং বোলিংয়ে দুই অভিজ্ঞ খেলোয়াড় বিরাট কোহলি ও জশ হ্যাজেলউডের কাঁধে ভর করে আরসিবি-র খেলা দারুণভাবেই উপভোগ করছেন ক্রিকেট ফ্যানরা। সেইসঙ্গে, দলের বাকিরাও তাদের যোগ্য সঙ্গত দিচ্ছেন।

তবে রাজস্থানের ১৪ বছরের বিস্ময় বালক বৈভব সূর্যবংশীর কতজাও বলতে হয়। কিন্তু খেতাবের লড়াই থেকে খুব একটা পিছিয়ে নেই শুভমন গিলের গুজরাত টাইটান্সও। বোলিং বিভাগে গুজরাতের হয়ত কিছুটা দুর্বলতা রয়েছে। বিশেষত, যে ব্যাটাররা তাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত আক্রমণাত্মক খেলেন, তাদের সামনে কিছুটা দিশেহারা দেখাচ্ছে গুজরাত বোলারদের। তবে এই দুর্বলতা শুধরে নিয়ে লড়াইযতে জোরদারভাবে থাকার ক্ষমতা গুজরাত দলের আছে।

তবে পাঞ্জাব কিংসও কিন্তু নিজেদের প্রতিভা এবং দক্ষতার প্রমাণ এবারের প্রতিযোগিতায় ইতিমধ্যেই রেখেছে

শ্রেয়স আইয়ার, প্রভসিমরণ সিং, প্রিয়াংশ আর্য, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল এবং মার্কাস স্টয়নিসদের নিয়ে গড়া পাঞ্জাবের ব্যাটিং লাইনআপ রীতিমতো বিধ্বংসী। অপরদিকে অআর্শদীপ সিং এবং যুযুবেন্দ্র চাহালের জুটি তাদের বোলিংকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে। 

তবে সমস্ত বিভাগ মিলিয়ে বেশ ভালো পারফর্ম করছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এবং রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। তাই আপাতত ট্রফি জয়ের সবচেয়ে যোগ্য দাবিদার বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যদি মুম্বই ট্রফি জেতে, তবে তারা মোট ৬বার জিতে আইপিএল ট্রফি জেতার নজির গড়বে। আর যদি আরসিবি ট্রফি জেতে, তবে দীর্ঘ ১৮ বছরের খরা কাটিয়ে প্রথমবারের মতো তারা আইপিএল ট্রফি ঘরে তুলবে তারা।

আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।