সংক্ষিপ্ত
ভারতীয় ফুটবলের সর্বকালের সেরা ফুটবলারদের অন্যতম তুলসীদাস বলরাম। বরাবরই প্রতিবাদী চরিত্র তিনি। কোনওদিন অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। ব্যক্তিগত স্বার্থকেও কোনওদিন প্রাধান্য দেননি এই ফুটবলার।
প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, চুনী গোস্বামীর সঙ্গে একনিঃশ্বাসে উচ্চারিত হত তাঁর নাম। ভারতীয় দল ও ইস্টবেঙ্গলের হয়ে অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন। ভারতীয় ফুটবলের সত্যিকারের কিংবদন্তিদের অন্যতম। জাতীয় দলের দুই সতীর্থর পর এবার প্রয়াত তুলীদাস বলরামও। বৃহস্পতিবার তাঁর জীবনাবসান হল। ১৯৩৬ সালের ৪ অক্টোবর হায়দরাবাদে জন্ম হয় এই ফুটবলারের। খেলেছেন আর্মি কমব্যাট ফোর্স, রাইডার্স ক্লাব হায়দরাবাদ, হায়দরাবাদ সিটি পুলিশ, ইস্টবেঙ্গলের হয়ে। জাতীয় দলের হয়ে এশিয়ান গেমস, অলিম্পিক্সেও খেলেছেন। ইস্টবেঙ্গলের হয়ে তাঁর পারফরম্যান্স এখনও প্রবীণ ফুটবলপ্রেমীদের মুখে মুখে ফেরে। সন্তোষ ট্রফিতেও অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখান তিনি। অবসরের পর হুগলির উত্তরপাড়ায় থাকতেন বলরাম। অভিমানে গত কয়েক বছরে ময়দানের সঙ্গে আর সম্পর্ক রাখেননি এই কিংবদন্তি। বিশেষ করে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের প্রতি তাঁর ক্ষোভ ছিল। তিনি বলেছিলেন, প্রয়াত হওয়ার পর দেহ যেন ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে না নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর প্রয়াণের পর শোকস্তব্ধ ময়দান।
বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন বলরাম। রাজ্য সরকার তাঁর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছিল। ই এম বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন এই তারকা ফুটবলার। সেখানেই প্রয়াত হলেন তিনি।
বলরামের প্রয়াণের খবর পাওয়ার পরেই শোকপ্রকাশ করছেন ফুটবলপ্রেমীরা। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের পক্ষ থেকেও সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে শোকপ্রকাশ করা হয়েছে।
বলরামের কেরিয়ারের অন্যতম সেরা সাফল্য ১৯৬২ সালের এশিয়ান গেমসে সোনা জয়। সেই প্রতিযোগিতায় প্রতিটি ম্যাচেই ভারতের হয়ে খেলেন তিনি। থাইল্যান্ড ও জাপানের বিরুদ্ধে গোলও করেন এই তারকা। ১৯৬০ সালে রোম অলিম্পিক্সেও ভারতীয় দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন বলরাম। সেই অলিম্পিক্সে ফ্রান্স, হাঙ্গেরি ও পেরুর সঙ্গে একই গ্রুপে ছিল ভারত। প্রথম ম্যাচে হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে ভারত ১-২ গোলে হেরে যায়। ভারতের হয়ে একমাত্র গোল করেন বলরামই। এরপর ফ্রান্সের বিরুদ্ধেও গোল করেন তিনি। সেই ম্যাচ ড্র করে ভারত। ১৯৫৮ সালের এশিয়ান গেমসে হংকংয়ের বিরুদ্ধে জীবনের অন্য়তম সেরা ম্যাচ খেলেন বলরাম। নির্ধারিত সময়ের খেলা ২-২ গোলে শেষ হওয়ার পর অতিরিক্ত সময়ে ৫-২ গোলে জেতে ভারত। সতীর্থদের দিয়ে ২ গোল করান বলরাম। ১৯৫৯ সালে মারডেকা কাপে রানার্স হওয়া ভারতীয় দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি।
১৯৬২ সালে অর্জুন পুরস্কার পেলেও, পদ্মশ্রী না পাওয়ায় ক্ষোভ ছিল বলরামের। সেই ক্ষোভ ও অভিমান নিয়েই তিনি প্রয়াত হলেন।
আরও পড়ুন-
পেনাল্টি বাঁচানোর পরেই অঘটন, মাঠেই মৃত্যু বেলজিয়ান ক্লাবের গোলকিপারের
যৌথভাবে ২০৩০ বিশ্বকাপ আয়োজন করতে চায় আর্জেন্টিনা, চিলি, প্যারাগুয়ে, উরুগুয়ে
লিওনেল মেসির জার্সি উপহার পেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর