সংক্ষিপ্ত
ইমেল চেক থেকে শুরু করে হোয়াটস অ্য়াপ যে কোনও অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে শুভ সকাল - এইটুকু বার্তা পাঠালেও দূষণ ছড়াচ্ছে। এছাড়াও তালিকায় রয়েছে- ইমেল পাঠান, ভিডিও শেয়ার করা হয়, ইনস্টাগ্রাম বা যেকোনও অনলাইফ প্ল্যাটফর্ম সার্চ বা স্ক্রল করা। সবেতেই নাকি দূষণ ছড়ায়
ইমেল থেকে ইন্টাগ্রাম, ফেসবুক টুইটার - এগুলি সবই আমাদের আধুনিক জীবনের অঙ্গ। একটা দিন তো দূরের কথা এক মুহূর্তও এগুলি ছাড়া আমরা থাকতে পারি না। কিন্তু আপনি জানেন কি এজাতীয় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ঘরে বসে ব্যবহার করেও আপনি ক্রমাগত দূষিত করে তুলছে এই পৃথিবীকে? সম্প্রতি WION নামের একটি ডিজিটাল নিউজ সংস্থা লিঙ্কডেনে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। যেখানে ডিজিটাল পলিউশনের কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত ফিরিস্তি দিয়েছে। যা দেখলে বা শুনলে চোখ কপালে উঠবে আপনারও।
আসুন এবার বিস্তারিত জেনেনি আমি বা আপনি- কী করে দিনের পর ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ধীরে ধীরে দূষিত করে তুলছি ধরাতলকে।
ইমেল চেক থেকে শুরু করে হোয়াটস অ্য়াপ যে কোনও অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে শুভ সকাল - এইটুকু বার্তা পাঠালেও দূষণ ছড়াচ্ছে। এছাড়াও তালিকায় রয়েছে- ইমেল পাঠান, ভিডিও শেয়ার করা হয়, ইনস্টাগ্রাম বা যেকোনও অনলাইফ প্ল্যাটফর্ম সার্চ বা স্ক্রল করা। সবেতেই নাকি দূষণ ছড়ায়। কোথায় কী পরিমাণ দূষণ হচ্ছে তাও স্পষ্ট করে দিয়েছে এই ডিজিটাল নিউজ প্ল্যাটফর্মটি।
প্রতিটা ইমেল খুলে দেখলেই ৪ গ্রাম কার্বন-ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন হয়। একেই বলে ডিজিটাল পলিউশন। কিন্তু ডিজিটাল পলিউশন কী? এই প্রশ্নটাই উঠছেতো! উত্তর হল ডিজিটাল ডিভাইস থেকে বর্জ্য উৎপাদন। ইন্টারনেট ব্যবহার থেকে বর্জ্য উৎপাদন- তবে এর মধ্যে কিন্তু খুব ছোট ছোট কাজ যেমন- ইমেল করা বা চেক করা, কাউকে টেক্সট ম্যাসেজ করা , ইন্টাগ্রাম বা অনলাইন সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইট ঘাঁটা। কোনও পোস্টে লাইক করলেও কিন্তু আপনি পরিষেব দূষণের ভাগিদার হবে।
এবার আপনি ভাবছেন তো কী করে ইন্টারনেট ব্যবহার করলে পরিবেশ দূষণ হয়? তার উত্তরও রয়েছে। একবার পড়েই দেখুন আপনি দিনের পর দিন কী করে পরিবেশ দুষণের ভাগিদার হচ্ছেন। প্রথমেই বলে রাখি ডিজিটাল ডিভাইস যেভাবে তৈরি হয় তার পুরো প্রক্রিয়াটাই হল দূষিত। এটিকে ই-ওয়েস্ট ব ই-বর্জ্য বলে। ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করার জন্য সর্বদাই এনার্জি লাগে। অর্থাৎ ইলেকট্রিক বা ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়। যা সাধারণ ভাবেই দূষিত করে।
এরপর আসি দ্বিতীয় ধাপে- সার্ভার বা রাউডার- এই দুটিও কিন্তু বিদ্যুৎ বা ব্যাটারিতে চলে। যার অর্থ এখানেও পরিবেশ দূষণ হয়।
আসুন আরও একটা হিসেব তুলে ধরি। খুব সাধারণ ডিজিটাল সার্চ- অর্থাৎ গুগল বা সার্চ ইঞ্জিনে আপনি যদি খুব সাধারণ কোনও বিষয়ও খুঁজে বার করতে চান তাহলেও কিন্তু দূষণ হয়। প্রায় ৭ গ্রাম কার্বন-ডাই-অক্সাইড তৈরি হয়। কিন্তু সাত গ্রাম কার্বন-ডাই-অক্সাইড যে কোনও গাছ মাত্র একদিনের মধ্যেই শুষে নেয়। তবে সমস্যাটা অন্য জায়গায় আপনি একাই যে এরকম সার্চ করছেন তা কিন্তু নয়। গুগলে প্রত্যেক দিন আপনারই মত সার্চ করে ৮.৫ বিলিয়ন মানুষ অর্থাৎ সাড়ে ৮০০ কোটিরও বেশি মানুষ। তাহলে এবার আপনি হিসেব করে দেখুন ইন্টারনেটে সাধারণ কিছু খুঁজতে গেলেও দিনে ঠিক কতটা কার্বন-ডাই-অক্সাইড তৈরি হয়।
এবার আসি টেক্সট ম্যাসেজে- প্রতিটা টেক্সট ম্যাসেজ ০.১৪ গ্রাম- তা আপনি টেক্সট ম্যাসেজ করুন আর কোনও ফোটো বা ভিডিও শেয়ার করুন। প্রতিটা টুইটের পিছনে উৎপন্ন হয় ০.২ গ্রাম কার্বন-ডাই-অক্সাইড। হোয়াটসঅ্যাপ ম্যাসেজে উৎপন্ন হয় ৪ গ্রাম CO2। ইমেলে উৎপন্ন হয় ৪ গ্রাম কার্বন-ডাই-অক্সাইড। একটি সমীক্ষায় জানা গেছে দৈনিক ৩৩৩.২ বিলিয়ন। অনেক সময় আমরা কিন্তু বিনা কারণেও ইমেল করে থাকি।
যাইহোক এবার আসি ফোন বা কম্পিউটার দেখার পর্বে। সেখানেও কিন্তু ডিডিটাল পলিউশনের পরিমাণ অনেকটাই বেশি। কারণ আমরা এখন বাড়িতে টিভি থাকলেও সিরিয়াল দেখার জন্য ওটিটি নির্ভর হয়েছি। অনেকেই ফোন বা কম্পিউটার দেখেন নিছকই বিনোদনের জন্য। আর এক্ষেত্রে দূষণের পরিমাণ কম নয়। কারণ মাত্র আধঘণ্টাও যদি আপনি ফোন বা কম্পিউটার দেখেন তাহলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড বের হয় ১.৬ গ্রাম।
এবার আসি ডেটা সেন্টারের বিষয়। গোটা বিশ্বে ২.৩২৬টি ডেটা সেন্টার রয়েছে। যার কোনও না কোনওটাতে আমার আর আপনার প্রয়োজনীয় ডেটা সংরক্ষিত রয়েছে। কিন্তু এই ডেটা সেন্টারগুলির জন্য বছরে ২০০ টেরাওয়ার্ডস বিদ্যুৎ লাগে। যা একরকম দূষণ বটে।
ল্যাপটপ বা মোবাইল ফোনের বর্জ্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ প্রতি বছর শুধুমাত্র এগুলি থেকেই ১.৫ মিলিয়ন ই-বর্জ্য উৎপাদন হয়। যা দিয়ে ১৬৬টি আইফেল টাওয়ার তৈরি করা যায় অনায়াসে।
আমাদের ডিজিটাল ডিভাইসগুলি বিদ্যুতে চলে। গোটা বিশ্বে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার হয় তার ৫ শতাংশই ইলেকট্রনিক ডিভাইসে চার্জ দিতেই খরচ হয়। মনে করে দেখুন আপনি কিন্তু রোজই আপনার ফোনে চার্জ দেন। আবার ল্যাপটপ কিন্তু কাজে বসার সময়ই প্লাগ পয়েন্টে লাগিয়ে বসেন। প্রত্যেক বছরই চার্জ দেওয়ার জন্যই ২০ শতাংশ করে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের কথায় স্মার্ট ফোন উৎপাদনে এখন সব থেকে বেশি বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়।
ই-বর্জ্য যা ভারতকে দিনে দিনে উদ্বিগ্ন করে তুলছে। কারণ বিশ্বের সবথেকে বড় ই-বর্জ্যের ডাস্টবিনে পরিণত হচ্ছে ভারত। এখনই ভারতে ৯০ শতাংশ ই-বর্জ্য জমা হয়। ২০১৯ সালে গোটা বিশ্বে ই-বর্জ্যের পরিমাণ ছিল ৫৩.৯ মিলিয়ন টন। ভারত আর চিনে সবথেকে বেশি ই-বর্জ্য বেআইনিভাবে জমা হয় বলেও দাবি করেছে একাধিক সংস্থা।
তবে কী করে আপনি দূষণ কমাবেন তারও উপায় রয়েছে।
১. কম্পিউটার, ল্যাপটপ বা মোবাইল ফোনের ব্রাইটনেস সর্বদা কমিয়ে রাখুন। কারণ এটি ১০০ শতাংশ থাকলেই ৭০ শতাংশ বিদ্যুৎ খরচ হয়।
২. অপ্রয়োজনীয় ইমেল মুছে ফেলুন। আপনি যদি ৩০টি ইমেল ডিলিট করেন তাহলেই ২ গ্রাম কার্বন-ডাই- অক্সাইড কম নির্গম হবে। ইনবক্স সর্বদাই পরিষ্কার রাখুন।
৩. যখন ল্যাপটপ বা কম্পিউটারে কাজ করবেন তখন অপ্রয়োজনীয় ট্যাবগুলি বন্ধ রাখুন। বেশি ট্যাব খোলা থাকলে বিদ্যুৎ বেশি খরচ হবে।
৪. ডাউনলোড করে গান শোনাই শ্রেয়। অনলাইনে শুনতে গেলে বিশে এনার্জি খরচ হয়। তাই পছন্দের গান বা সিনেমে সর্বদা ডাউনলোড করে নিন।
ঐতিহাসিক ঘটনা, সুপ্রিম কোর্টের শুনানির লাইভ স্ট্রিমিং দেখুন বাড়িতে বসেই, জেনে নিন কীভাবে দেখবেন
রাজস্থান সংকট রিপোর্টে 'মূলচক্রী' কি অশোক গেহলট? গান্ধীদের বিরক্তিতে তাঁর ওপর নামতে পারে কোপ
মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী রাতের আকাশ, ৫৯ বছর পর পৃথিবীর সবথেকে কাছে এল দেবগুরু বৃহস্পতি